১৯৪৮ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তান ভেঙে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘যদি আমরা নিজেদের প্রথমত বাঙালি, পাঞ্জাবি ও সিন্ধি ভাবতে শুরু করি এবং শুধুই ঘটনাচক্রে নিজেদের মুসলমান ও পাকিস্তানি ভাবি, সে ক্ষেত্রে পাকিস্তান ভেঙে যাওয়া অনিবার্য।’ ২৩ বছর পর জিন্নাহর সেই আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হয়; পাকিস্তান ভেঙে ১৯৭১ সালে ...
নীরু শামসুন্নাহারঃ ১৯৭১ সালের অগ্নিঝরা মার্চ। একাত্তর সালের পহেলা মার্চ দুপুর ১টা ৫ মিনিটে জেনারেল ইয়াহিয়া খান এক বেতার ভাষণে ৩ মার্চ ঢাকায় আহ্বানকৃত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আকস্মিকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কোনোরকম আলোচনা না করেই প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান একতরফাভাবে এ-ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ...
সেলিনা হোসেনঃ বাঙালি-বাংলাদেশের ইতিহাস একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের দিগ্দর্শন। বাঙালির অতিজাগরণে অসহযোগ আন্দোলন এবং পরবর্তী পর্যায়ে যোদ্ধা জাতি হিসেবে বাংলাদেশের সৃষ্টি বাঙালির এক দীপ্ত নতুন পরিচয়। নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ পৃথিবীর সীমানায় বাঙালি জাতিসত্তার গৌরব ছড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠা করেছে আত্মমর্যাদার ভিত্তি। মাতৃভাষার মর্যাদার জন্...
মুনতাসীর মামুনঃ ‘অসহযোগ’ ও ‘অহিংসা’- এ দুটি প্রত্যয় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে যুক্ত। রাজনৈতিকভাবে এ দুটি প্রত্যয় আগে ব্যবহৃত হয়েছে কিনা জানা যায় না, অসহযোগ কোনো কোনো ক্ষেত্রে থেকে পারে, অহিংসা নয়। মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ ব্যবহার করেছেন রাজনীতিতে ১৯২০ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত, তবে অসহযোগের ভিত্তি সবসময় রাখতে চেয়েছেন ...
বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত ১৯৭৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ঘটনা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমর একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে বলেন, রক্তে রাঙানো এই দিন বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। আজকের এই দিন জাতির আত্মশুদ্ধির দিন। শহীদদের আত্মাহুতি বৃথা যেতে দেওয়া হবে না- আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। বঙ্গবন্ধু তার বাণীতে আরও বল...
অজয় দাশগুপ্তঃ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ব্যাপক, গভীরতায় অতল। এর পুরোটা জুড়েই সম্মুখ সারিতে থাকা একটি নাম- শেখ মুজিবুর রহমান। তরুণ বয়সেই ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতি-সাহিত্য প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকদের কু-মতলব এবং বাঙালিদের আবেগ ও রোষ-ক্ষোভ ধরে উঠতে পারেন। ততদিনে আন্দোলনের বর্ষাফলকও তাঁর হাতেই তৈরি- ছাত্রলীগ। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র সাড়ে চা...
পরবর্তীতে প্রবল জনরোষের মুখে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার এবং সেদিনই কারাগার থেকে মুক্তি পান বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার বিমূর্ত প্রতীকে পরিণত হওয়া শেখ মুজিবুর রহমান। পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল জনসভায় 'বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করা হয় তাকে। একটি স্বাধীন-স্ততন্ত্র বঙ্গভূমি তথা বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের ...
দিল্লিতে বঙ্গবন্ধুর যাত্রাবিরতি ছিল সংক্ষিপ্ত। রাষ্ট্রপতি ভবনে সৌজন্য কথাবার্তার পর ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানেই তিনি যাত্রা করেছিলেন ঢাকার উদ্দেশে। এ সময় বিমানে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহযাত্রী ছিলেন ফারুক আহমদ চৌধুরী। তিনি সেই যাত্রার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়েছেন এভাবে: "...দশই জানুয়ারি ১৯৭২-এর সেই অবিশ্বাস্য সকাল। পালাম বিমানবন্দর। আটটা বেজে দশ মিনিট। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর রুপালি কমে...
১০ জানুয়ারি (১৯৭২) বিকেল ৪.২৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার মতো করে নির্মিত ১০০ ফুট দীর্ঘ মঞ্চে স্থাপিত মাইকের সামনে যখন ভাষণ দিতে ওঠেন, তখন তিনি শিশুর মতো কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন; তার দু'চোখ গড়িয়ে অশ্রু পড়ছিল বারবার। কান্না ছিল সেদিনের একমাত্র কণ্ঠস্বর। তিনি কাঁদছিলেন। কাঁদছিল ...
অজয় দাশগুপ্তঃ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট। মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে মুসলিম লীগের পাশাপাশি নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের বড় ভূমিকা ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জে স্কুলে পড়ার সময়েই ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৪২ সালে কলিকাতায় কলেজে পড়তে গিয়ে বৃহত্তর পরিসরে কাজের সুযোগ পান। বিখ্যাত ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র ...
সজল চৌধুরী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধুমাত্র স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেননি। তিনি একটি উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সোনার বাংলা গড়তে তিনি বলতেন ‘সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই’। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন সে মানুষগুলো হবে অসাম্প্রদায়িক, শিক্ষিত, আধুনিক এবং স্বাবলম্বী। তাই তিনি বাংলাদেশের আধু...
অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খানঃ যখন আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে মুজিববর্ষ উদযাপন করছি তখন আজ ১৬ ডিসেম্বর শুরু হলো আমাদের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর বছর। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি পালন- বাঙালী জাতির জন্য সৌভাগের বিষয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরুতেই একটি লক্ষ্য নির্ধার...
তোফায়েল আহমেদঃ স্মৃতির পাতায় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের অনেক ছবি ভেসে ওঠে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন সামনে নিয়ে দীর্ঘ ২৪টি বছর সংগ্রাম পরিচালনা করে, নিজের জীবন উত্সর্গ করে ধাপে ধাপে অগ্রসর হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন মানুষের হূদয়ে মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী গৌরবগাথা অম্লান থাকবে। তিনি এমন এক মহামানব, যার হূদয় ছিল মানুষ...
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর বাঙালির অর্থনৈতিক এবং ভাষা-সংস্কৃতি-শিক্ষার বিকাশের জন্য অনন্য ভূমিকার কারণে শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের কাছে বঙ্গবন্ধু হিসেবে স্বীকৃত হন। পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশে পরিণত করতে হবে- এ লক্ষ্য তিনি নির্ধারণ করেন পঞ্চাশের দশকের শুরুতেই। এ জন্য যে কোনো দুঃখ-কষ্ট বরণে তিনি প্রস্তুত হচ্ছিলেন। ১৯৫২ সালের ১৪ জুন মাত্র ৩২ বছর বয়সে হোসেন শহ...
মজিবর রহমানঃ যার নেতৃত্ব ছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হতো না, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর পুণ্য স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই লেখাটি উৎসর্গ করছি বঙ্গবন্ধুর নামে। আমার রাজনৈতিক জীবনের অতিতের স্মৃতিগুলো আমাকে সবসময়ই আত্মবিশ্বাসী হতে এবং অনুপ্রেরণা যোগাতে সহায়তা করে। ১৯৬৯-এর গণআন্দোলনে অংশগ্...
সুলতান মাহমুদ শরীফ: কি স্বপ্ন দেখাতে চেয়েছিলেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা, তাদের তো চালও ছিল না, চুলোও ছিলো না। জমি ছিল, মালিক দয়া করলে, ভোগ দখল করতে পারতো,আর চাইলেই জমিটা তার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারতো। জমির মালিকানা স্বত্ত বলেও কোন কিছু ছিলো না। হাজার বছর ধরে বাইরে থেকে লোক এসে মোদের ভূ-খন্ডের জমি জায়গা দখল করে নিতো। মর্জি হলে ভোগ করার জন্য কাউকে পত্তন দিতো। ...
অজয় দাশগুপ্তঃ ১৯৫২ সালের ১৪ জুন। পশ্চিম পকিস্তানের লাহোর নগরী থেকে হায়দ্রাবাদ শহরে অবস্থানরত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দিকে চিঠি লিখেছেন শেখ মুজিবুর রহমান- Please don’t think for me. I have born to suffer। বয়স তাঁর ৩২ বছর। মাত্র সাড়ে তিন মাস আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি একটানা প্রায় আড়াই বছর জেল খেটে মুক্তিলাভ করেছেন। মুক্তিলাভের ঠিক দুই মাস পর তাঁর ওপর অর্পিত হয় নত...
জয়দেব নন্দীঃ 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'র পর আমরা হাতে পেলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আরেকটি মহামূল্যবান গ্রন্থ 'কারাগারের রোজনামচা'। কত কণ্টকাকীর্ণ পথ, কত ষড়যন্ত্র, কত বিশ্বাসঘাতকতা, কত ব্যথা, কত বেদনা, কত রক্তক্ষরণ, কত ক্রান্তিকাল পাড়ি দিয়ে বঙ্গবন্ধু একটি দেশ, একটি জাতীয় পতাকা আমাদেরকে দিয়েছেন; তা অনুধাবন করা যায় গ্রন্থটি পাঠ করলে। বাঙালির ভাগ্য উন্নয়নের জন্য...
ফিরে আসা লাখ লাখ শরণার্থীর বন্দোবস্তের পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনঃগঠনে বঙ্গবন্ধু কী কী নীতি নিয়েছিলেন, কী কী চ্যালেঞ্জের মুখে তাকে পড়তে হয়েছিল- সেই সব বিষয় উঠে এলো অর্থ ও পরিকল্পনা উপকমিটি আয়োজিত ওয়েবিনারে। স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা নিয়ে শুক্রবার রাতে আয়োজিত 'স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু' শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে প্রধ...
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী বাংলাদেশে ফিরে আসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে নানামু্খী পরিকল্পনার পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন যার সুফল এখনও পাচ্ছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের...