874
Published on ডিসেম্বর 2, 2020সুলতান মাহমুদ শরীফ:
কি স্বপ্ন দেখাতে চেয়েছিলেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা, তাদের তো চালও ছিল না, চুলোও ছিলো না। জমি ছিল, মালিক দয়া করলে, ভোগ দখল করতে পারতো,আর চাইলেই জমিটা তার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারতো। জমির মালিকানা স্বত্ত বলেও কোন কিছু ছিলো না। হাজার বছর ধরে বাইরে থেকে লোক এসে মোদের ভূ-খন্ডের জমি জায়গা দখল করে নিতো। মর্জি হলে ভোগ করার জন্য কাউকে পত্তন দিতো। আর মর্জি না হলে ঝেটে তাড়িয়ে দিতো। এ অবস্থার মধ্যেই সাম্প্রতিক শতশত বছরে, মোঘলরা এসেছিল, তার আগে আলেকজান্ডাররাও এসেছিল এই ভারত ভূমিতে। ধর্ম প্রচার করতে এসেছিল মুসলমানরা, বাইরে থেকে্ এসেছিল ব্রাম্মন সেজে সাদা চামড়ার মানুষ, যারা নিজেদেরেকে কুলিন বলতো। আর শ্যামলা, পাতলা, কালা ভারতবাসীদের সাথে বৈমাতা সুলভ আচরণ করতো। আর নিজেদেরকে ব্রাম্মন পরিচয় দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষের উপর কর্তৃত্বের অধিকার নিলো তারা। আরবমূলক থেকে এবং তার আশেপাশের দেশ থেকে মুসলমানরা, ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য এলো ভারতভূমিতে। এটা প্রায় এক হাজার বছরের আগের ঘটনা। এরপর ইউরোপ থেকে এলো খ্রীস্টানরা। এরই মধ্যদিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের যারা ভগবান বৌদ্ধকে অনুসরণ করে বৌদ্ধ ধর্মে দিক্ষীত হয়েছিল, তারা এই যুদ্ধবাজ, আবার কখনও কখনও আগ্রাসনী, বিদেশীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভারত ভূমি ছেড়ে চীন দেশের দিকে চলে গেলো। আমাদের যাদের পূর্ব পুরুষদের না ছিলো ঐক্য, না ছিলো সংগঠণ এবং ছিলো না কোন কীর্তিমান বীরপুরুষ আমরা থেকে গেলাম পূর্বপুরুষদের এই ভারতবর্ষে। মোঘল শাসকরা মুসলমান ছিলো, যার ফলে যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলো তাদের জীবনে কিছুটা সাশ্রয় আসলো। যখন ব্রিটিশ বেনিয়ারা এই এলাকায় আসলো, তখন মুসলমান শাসকদের প্রভাবে থাকা মুসলিম জনগোষ্ঠী নতুন শাসককে মেনে নিতে পারলো না। এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণ যারা আদিম আচার অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে জীবনযাপন করতো এবং যাদের চলতি নাম ছিলো হিন্দু ধর্মাবলম্বী তারা ব্রিটিশ শাসকদের সদয় অনুগ্রহ পেতে লাগলো।
সমাজে মানুষের মধ্যে বিভাজন ক্রমেই বাড়তে লাগলো। ধনী-দরিদ্রে বিভাজন, গোত্রে-গোত্রে বিভাজন। পেশা ভেদে স্থানীয় জনগণকে গোত্রে-গোত্রে ভাগ করে সৃষ্টি করা হলো, শতশত ছোট-ছোট পেশাভিত্তিক গোষ্ঠীকে। যারা চুল কাটতো তারা হলো নাপিত, যারা কাপড় ধুয়ে দিতো তারা হলো ধোপা, যারা পৌরহিত্ত্য করতো তারা হয়ে গেলো ব্রাম্মন। সমাজের স্তরে স্তরে নানা বর্ণ ও শ্রেণী তৈরী হলো। একদিকে আমাদের বিদেশী শাসকরা এই পথ ধরে দেশের সম্পদ লুঠ করতে লাগলো। আরেকদিকে শান্তির বানী নিয়ে ধর্মপ্রচারে ও ধর্মান্তরিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে ইউরোপ ও মধ্যপাচ্য থেকে যথাক্রমে খ্রিষ্টান ও মুসলমান ধর্মপ্রচারকরা এদেশে এলো। অধিকাংশ সাদা চামড়ার ক্রিস্টান ধর্মপ্রচারকরা স্থানীয় লোকদের সাথে কোনরুপ বৈবাহিক সম্পর্ক না করেই নিজেদেরকে একটি আলাদা গোষ্ঠীতে পরিণত করলো। খ্রীস্টান ধর্মগ্রহণকারী সাধারণত গরীব এবং অভাবী মানুষকে সুযোগ সুবিধা দিলো এবং কিছুটা শিক্ষার আলোও প্রসারিত করলো। মুসলমান ধর্ম প্রচারকরা সারা ভারতে ধর্ম প্রচারের সাথে, সাথে স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে স্থায়ী বসবাসের বন্দোবস্ত করে নিলো। এর ফলে একমাত্র উপজাতীয় এলাকা ছাড়া বাকী সব জায়গায়ই তিনটি প্রধান ধর্ম হিন্দু, মুসলমান ও খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীদের একটি বিরাট জনগোষ্ঠী সৃষ্টি হলো। এরপর এই তিন ধর্মগোষ্ঠীকে একটিকে আরেকটির বিরুদ্ধে উসকিয়ে দিয়ে, দেশের ভিতরে মানুষে মানুষে অন্তর্দন্দ সৃষ্টি করে এই হতভাগ্য দেশবাসীকে শোষণের যাঁতাকলে নিক্ষেপ করা হলো। সময়ের পরিক্রমায় বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে কখনও, কখনও স্বাধীন শাসকের উথান ও পতন হলো। জনগণের দিনের কোন বদল হলো না। আমাদের মানুষের জীবনের অধিকার কোনদিনই ফিরে আসলো না, বাইরে থেকে যারা ধর্ম প্রচার করতে এসেছিল, সেই ব্রাম্মণ খ্রিষ্টান ও মুসলিম প্রচারকরা প্রায় সবক্ষেত্রেই ধর্মপ্রচার ছাড়া জীবন-জীবিকার জন্য কোন কায়িক পরিশ্রম করে দেখলো না। স্থানীয় অধিবাসীদের গায়ের ঘাম ফেলে কঠোর পরিশ্রম করে ফসল উঠিয়ে যে খাদ্যশস্য জোগাড় করতো, অবলীলাক্রমে তারাই এসবের মালিক হয়ে যেতো। যখন দুর্ভিক্ষ আসতো, অভাব আসতো, অনটন আসতো, অনাহার অর্ধাহার তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হতো। লজ্জা নিবারনের কাপড়টি পর্যন্ত তাদের ভাগ্যে ঝুটতো না। এই সামাজিক পরগাছাদের সমস্ত প্রয়োজন মিটিয়ে যদি কিছু অবশিস্ট থাকতো সেটাই তাদের একমাত্র প্রাপ্য ছিলো। এর ফলে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ অভাব, অনাহারে অর্ধাহারে অকাল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তো।
এই দুরাবস্থা থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্ত করার জন্য নিজেদের জীবন বিসর্জন দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এখানকার জনসাধারণের মধ্যে যে বাসনা ছিলো তাকেই ফলপ্রসু করার জন্য অনেক মহাপুরুষের আবির্ভাব ঘটেছিল। তাদের বীরত্বগাঁথা নিয়ে অনেক কাহিনী শোনা যায় কিন্তু তাদের সাফল্য কখনও আলোর মুখ দেখে নাই। অতিসম্প্রতিকালে বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ দৌলার ইংরেজদের হাত থেকে এদেশকে মুক্ত রাখার সফল প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যুবসিত করে, তারই সেনাপতি মীরজাফরের সহযোগীতায় ব্রিটিশ ইস্ট ইনডিয়া কোম্পানীর হাতে হস্তান্তর করে। এরপর থেকে কোন মুসলমান বা হিন্দু শাসক দেশের সাধারণ মানুষকে একতাবদ্ধ করে ইংরেজদের তাড়িয়ে এদেশকে স্বাধীন করতে পারে নাই। নেতাজী সুভাষ বোস আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠণ করে জাপানের সহযোগীতা নিয়ে, জার্মানের সমর্থণে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিলেন ভারতীয়দেরকে একত্রিত করে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জার্মানী ও জাপানের পরাজয়ের পর নেতাজীকে ভারত ভুখন্ড থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছিল। তার সৈন্যবাহিনী পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে ভারতেই বিলিন হয়ে গিয়েছিল। ভারতবাসীদের স্বাধীনতার আশা ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে এই উপমহাদেশের জনগণকে হিন্দু এবং মুসলমান জনগোষ্ঠী হিসেবে ভাগ করে একটি চীরস্থায়ী দ্বন্দের মধ্যে ভারতবাসীকে রেখে রাতের অন্ধকারে ১৪ ও ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে ভারত ছেড়ে ইংরেজরা চলে যায়। ধর্মকে ব্যবহার করে এরপর শুরু হয় হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এ দাঙ্গা আজও চলছে। উপমহাদেশের সর্বত্র ধর্ম ব্যবসায়ীরা জনগণকে জিম্মি করে ধর্মকে ব্যবহার করে নিজ নিজ ধর্মগোষ্ঠীকে উত্তেজিত করে একে অন্যের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে।
জনগণের জীবন-জীবিকার কোন ব্যবস্থাই এদের জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে হয় না। এখনও একটি মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করেও বাংলার মানুষকে এই স্বাধীন দেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন সুখী, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠণের কোন প্রচেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর, হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে, বিন্দুমাত্র উদ্বেগ নাই। এদেশের জমিতে ফসল ফলানোর জন্য এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কাউকেই পাওয়া যায় না। এদেশের কল- কারখানায় দিবারাত্র দিনমজুরের কাজ করে যারা দু, মুঠো অন্নের সংস্থান আনে তাদের মধ্যেও এদেরকে দেখা যায় না। এদেশের উন্নতির জন্য যে পরিকল্পনা হয় সেখানেও তাদের কোন ভূমিকা নাই। বিদেশে গিয়ে অর্থ উপার্জন করে দেশের মানুষের বৈদেশিক মুদ্রার যোগানেও তারা কোন অবদান রাখে না। এরা পাটচাষী হয়ে পাট চাষ করে না, এরা দোকানদার হয়ে দোকান চালায় না, বয়স্ক-বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতার ব্যবস্থা করে না। শেখ হাসিনার শাসনকালে দেশে যে বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি করে ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে এর ফল ভোগ করতে তারা আছে, কিন্তু এজন্য কোন কাজ করতে তারা রাজী না। দেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে যে ১৬,০০০ কমিউনিটি ক্লিনিক হয়েছে, সেখান থেকে সেবা নেওয়া ছাড়া আর কোন কিছুতে তাদের কোন অবদান থাকে না। এই দেশেই শিশু মৃত্যুর হার একেবারে এক দশমিক আটের কোঠায় চলে আসায় ও কোন সহযোগীতা না করে ডিজিটাল বাংলাদেশে কোন অবদান না রেখে দেশের রপ্তানী খাতে কোন অবদান না রেখে, কোনরকমের দৈনন্দিন কর্মকান্ডে জড়িত না থেকে, এরা সারাদিন রাত্র ধর্মকে ব্যবহার করে ফতোয়া দিয়ে দিয়ে পরগাছার মতো দেশের অন্ন ধ্বংস করে। এদের পোশাক-আসাক, শান-শওকত ও বিশেষায়িত শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোদমে চালু রেখে এদেরকে সামাজিক পরগাছা হিসেবে লালন পালন করতে হবে। প্রতি শুক্রবারে বায়তুল মোকাররামের গেটে কেতাদুরস্ত পোষাক পরে সেজেগুজে এরা হাজির হয় ধর্মীয় ফতোয়া দেওয়ার জন্য। এদের ফতোয়ার সাথে না কোন ধর্মের, না কোন সমাজব্যবস্থার, না কোন নীতি নৈতিকতার, না কোন ধর্মীয় অনুশাসনের কোন সম্পর্ক আছে। ঐ বায়তুল মোকাররাম মসজিদের সামনে এই ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করে যদি জানতে চাওয়া হয়, নিজেদের দু-বেলা অন্নের সংস্থান করার জন্য এরা কি করে? কোন উত্তর পাওয়া যাবে না। জন্মের পর থেকে প্রথম মা-বাবার ঘরে তাদের অন্নে পালিত হয়েছে, আর বড় হয়ে বাড়িতে বাড়িতে খয়রাত খেয়ে নির্লজ্জের মতো, খুন্নি নিবারণ করছে। এদেরকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় যে, তোমার দু-বেলা অন্নের জন্য তোমার পরণের পোষাকের জন্য, তোমার দৈনন্দিন জীবন পরিচালনার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, যে খাদ্যের প্রয়োজন, আর অন্যান্য যে সমস্ত প্রয়োজন, তার জন্য তুমি কোন কিছু করেছো- দেখাতে পারো কি? তারা অবাক বিস্ময়ে আপনাকে নির্লজ্জের মতো বলে দিবে- আল্লাহ তাদেরকে খাওয়াচ্ছেন। তাদের রিজেক জোগাড় করে দিচ্ছেন। তাদের কিছু করতে হয় না। কোন দেশ এবং জাতিকে কখনই লক্ষ, লক্ষ পরমুখাপেক্ষী পরগাছা তৈরী করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে, লালন পালন করে, তাদের খেয়ালবাজি ফতোয়াকে ধর্মের লেবাস পরার সুযোগ দিয়ে উচিত নয়। সে জাতির পরিশ্রমী জনগোষ্ঠীকে এদেরকে প্রতিহত করতে হবে। এদেশের মানুষকে তার অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য একটি নিশ্চিত জীবনের বিধান করতে হলে এদেরকে সমাজদেহের মধ্যে অবস্থান নিশ্চিত করিয়ে দু, মুঠো অন্নের জন্য প্রয়োজনীয় পরিশ্রম করতে বাধ্য করতে হবে। কোন মসজিদ বা ধর্মীয় স্থান বা পবিত্র বায়তুল মোকাররামকে এদের অলস আড্ডার কেন্দ্রবিন্দু করা যাবে না। এদের বিরুদ্ধে খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষ হতে ছাত্র ও যুব সমাজকে একতাবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দেশের সংস্কৃতি তাহাজ্জিব, তমদ্দুন, কৃষ্টি ও সামাজিক ঐক্য রক্ষার জন্য আমাদের প্রয়োজন অপসংস্কৃতির মিথ্যা বেসাতি করে ধর্মের লেবাসের আবরণে মানুষের আবেগের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেয় তাদেরকে অবশ্যই, অবশ্যই প্রতিরোধ করা।
আজকে বালোদেশে উন্নতির জোয়ার বইছে। পৃথিবীর প্রত্যেকটি উন্নত দেশের সাথে সমানতালে প্রতিযোগীতা করে আমরা দেশের অবকাঠামোর অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করেছি, ঢাকা শহরকে দৃষ্টিনন্দন করেছি, মেট্রোরেল বানিয়েছি, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল প্রায় সমাপ্ত করেছি। প্রতিটি গ্রামের সাথে শহরের সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করেছি, পদ্মা সেতুর মতো অসম্ভব সেতু নিজেদের খরচে তৈরী করা কাজ প্রায় সমাপ্তের পথে, প্রতিটি শিশুর শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরকারীভাবে যোগান দিচ্ছি। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের মাধ্যমে এক কোটির বেশী প্রবাসী ভাই-বোনদের তাদের প্রিয়জনদের সাথে প্রতিদিন ভার্চুয়াল দেখাশোনার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি। যার ফলে পরিবারের লোকজনদের সাথে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে শুধু যোগাযোগ করা যায় না, তাদেরকে সাথে ভার্চুয়ালিও দেখা যায় এবং আন্তরিকতা বৃদ্ধি করা যাচ্ছে, সহমর্মিতা প্রকাশ করা হচ্ছে এর প্রত্যক্ষ ফল দেশে পরিবারের সাথে প্রবাসীদের ঘনিষ্ঠতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে ও মায়াবন্ধন সমৃদ্ধ হচ্ছে। আমাদের বিদেশী রেমিটেন্সের যে অভাবনীয় বৃদ্ধি তা এর ফলে আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি। আমরা আজ আর বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দরদাম করে কিনতে কোনরুপ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছিনা বা বাজারমূল্য থেকে বেশি দামেও কোনকিছু আমাদের কিনতে হচ্ছে না। এসব উন্নতি আমাদেরকে বিশ্বের দরবারে সম্মানিত আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আজকে বিশ্ব রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, বিশিষ্ট আসন অলংকৃত করে আছেন। বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ করে যে সম্মানজনক আসনে ছিলাম নানা স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করে সেখানেই ফেরত এসেছি। দেশের কোমলমতি শিশুদেরকে ধর্মের আবরণ দিয়ে বায়তুল মোকাররামের সামনে দলবদ্ধভাবে একত্রিত করে মিথ্যা ফতোয়াবাজি করে বিভ্রান্ত করার হাত থেকে সমস্ত উপাসনালয়কে মুক্ত করতে হবে। এই কোমলমতি শিশুদের যারা ছলবল কৌশল ব্যবহার করে এ সমস্ত সমাবেশে একত্রিত করে তাদের দেশদ্রোহী কাজের জন্য শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব সামাজিক পরগাছারা ধর্মকে ব্যবহার করে আমাদের যুব সমাজের মাদ্রাসাগামী ছাত্র যুবকদের প্রতিনিয়ত নানা প্রতারণামূলক স্লোগাণ দিয়ে উত্তেজিত করছে তাদের এই ষড়যন্ত্র বন্ধ করার ব্যবস্থা সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে নিতে হবে- দেশের অগ্রগতির স্বার্থে। ব্যাপক জনগণকে এইসব অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। এটা না করতে পারলে আমাদের দেশের উন্নতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এবং আমরা আমাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য একটি সুখী সমৃদ্ধ ও সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ রেখে যেতে পারার যে প্রচেষ্টা তাকে ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না।
লেখক: সভাপতি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ