১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক যাত্রা

আবদুল মান্নানঃ  বাঙালি আর বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের কয়েকটি তারিখ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে প্রচ্ছন্নভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। ২৫ ও ২৬শে মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের বাঙালি নিধনপর্ব অপারেশন সার্চলাইট শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ধানমণ্ডির ৩২ ন...

জীবন দিয়ে তাঁরা বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস রেখেছেন

মোহাম্মদ নাসিমঃ বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন পাকিস্তানের অন্ধকার কারাগারে। সেই অবস্থায় আজ থেকে ৪৯ বছর আগের আজকের দিনে তাকেই রাষ্ট্রপতি করে ঐতিহাসিক মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল। মেহেরপুরের ভবেরপাড়া গ্রামের বৈদ্যনাথ তলায় সাদামাটা পরিবেশে একটি আমবাগানে সেদিন বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে জাতীয় চার নেতা...

মুজিবনগর দিবসের স্মৃতিকথা

তোফায়েল আহমেদঃ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১-এর ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের স্মৃতিকথা লিখতে বসে আজ কত কথা আমার মানসপটে ভেসে উঠছে। ৭১-এর ২৫ মার্চ দিনটির কথা বিশেষভাবে মনে পড়ে। এদিন মণি ভাই এবং আমি জাতির জনকের কাছ থেকে বিদায় নেই। বিদায়ের প্রাক্কালে তিনি আমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে বুকে টেনে আদর করে বলেছিলেন...

প্রতিরোধযুদ্ধ ‘ঝিনাইদহের বিষয়খালী’

শাহাব উদ্দিন মাহমুদঃ একাত্তর পূর্ববর্তী প্রজন্ম বাঙালীর মুক্তি-সংগ্রামের দিনগুলোর জীবন্ত সাক্ষী। যারা মুক্তি-সংগ্রামের চূড়ান্ত পরিণতি বিজয়ের দিনটিতে বাংলাদেশের জন্ম হতে দেখেছে, সেই সময়ের তীব্র আনন্দটুকু পৃথিবীর খুব কম মানুষ অনুভব করেছে। তারা খুবই সৌভাগ্যবান একটি প্রজন্ম- যারা সেই অবিশ্বাস্য আনন্দটুকু অনুভব করার সুযোগ পেয়েছিল! বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, সেই দিনটিতে যখন একজ...

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ৭ মার্চ

অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানঃ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে অনেক আলোচনা পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ হয়েছে। এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু এই ভাষণের পর তৎকালীন বাঙালি জাতির ওপর কী প্রভাব পড়েছে বা মানুষ কীভাবে দ্রুত স্বাধীনতা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের দিকে এগিয়ে গেছে, সেটি খুব আলোচনা হয়নি। তা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছানো জরুরি। ১৯৭১...

১৯৭১, ভোলার ওয়াপদা কলোনি-খেয়াঘাট গণহত্যা

মোহাম্মদ আরিফুল হকঃ একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলার মাটিতে যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, তা ছিল বিংশ শতাব্দীর নৃশংসতম গণহত্যা। পাকবাহিনীর পরিকল্পিত এ গণহত্যায় প্রাণ দিয়েছিল ৩০ লাখের অধিক মানুষ। সম্ভ্রম হারিয়েছিল ৫ লক্ষাধিক মা-বোন। ২৫ মার্চের গভীর রাতে ঘুমন্ত বাঙালীদের নিধনের মাধ্যমে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী এ হত্যাযজ্ঞ শুরু করে, দ্বীপাঞ্চল ভোলাতেও এর ব্যত্য...

বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীঃ ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া নামক এক অজপাড়াগাঁয়ে যে শিশুটি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, কালের পরিক্রমায় তিনি হয়ে উঠেছেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা; হাজার বছরের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বাঙালি; স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি; বাঙালির একমাত্র মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই মহান ব্যক্তি এখন শুধু বাঙালির বঙ্গবন্ধু নন, বি...

১৯৭১, রাজশাহীর যোগীশো ও পালশা গণহত্যা

সাব্বির মাহমুদ রাবাতঃ ১৬ মে, ১৯৭১। ভোর বেলা। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ৬টি ভ্যান রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার যোগীশো গ্রামে পৌঁছায়। গ্রামে মিলিটারি প্রবেশ করেছে খবর পেয়ে পুরো জনপদ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বিশেষত হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সকলেই পরিবারসহ পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে আত্মগোপন করে। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আগত রাজাকার ও তাদের সহযোগীগণও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ...

যাঁর নেতৃত্বে নিপীড়িত মানুষের মুক্তি

মোঃ রুহুল আমীনঃ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব আজ বিশ্ব স্বীকৃত। তাঁরই নেতৃত্বে বাঙালী জাতি অর্জন করেছিল বহুল কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। এ মহান নেতার চিন্তা-চেতনায় সবসময় কাজ করত বাঙালীর মুক্তি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা। তিনি ছিলেন বাঙালী জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাঙালী জাতীয়তা বাদের প্রবক্তা। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬-দফা, &rsqu...

শরণার্থী ১৯৭১ঃ সীমান্তজুড়ে একেকটি বাংলাদেশ

'ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তের একটি কর্দমাক্ত শহর বারাসাত। এর স্বাভাবিক জনসংখ্যা ২১ হাজার। এশীয় মানদণ্ডে বিচার করলে এখানকার হাসপাতালটি কোনোরকমে এই অধিবাসীদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করতে পারে। গত সপ্তাহে দেড়-দুই লাখ লোক বানের জলের মতো বারাসাত শহরে ঢুকে পড়েছে। তারা শহরের চারদিকে ধানি জমিতে গিজগিজ করছে। স্কুল, কলেজ, সিনেমা হল এবং পতিত জমিতে তাদের আশ্রয়ের ব্যব...

গণহত্যার নীলনকশা চূড়ান্ত

তোফায়েল আহমেদঃ লাগাতার চলা অসহযোগ আন্দোলনের ২০তম দিবস আজ অতিবাহিত হয়। ১৯৭১-এর ২১ মার্চের এ দিনটি ছিল রোববার। যেসব অফিস খোলা রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেগুলো ছাড়া আর সব সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অসহযোগ কর্মসূচি নিয়মতান্ত্রিকভাবেই পালিত হয়। যথারীতি আজও রাজধানীর সব সরকারি-বেসরকারি বাসভবন এবং যানবাহনগুলোয় ক...

১৯৭১, রাজশাহীর হরিপুর গণহত্যা

মোহাম্মদ আরিফুল হকঃ একাত্তরে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নারকীয় গণহত্যা শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ^ মানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর পরিকল্পিত গণহত্যায় প্রাণ দিতে হয়েছিল ৩০ লাখের অধিক মানুষকে। ধর্ষণ আর নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল ৫ লাখেরও বেশি মা-বোনকে। ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকেই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো রাজশাহীতেও নিরীহ জন...

জয় বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত বাংলাদেশ

তোফায়েল আহমেদঃ ১৯৭১-এর ২০ মার্চ দিনটি ছিল শনিবার। আজ লাগাতার চলা অসহযোগ আন্দোলনের ১৯তম দিবস অতিবাহিত হয়। আজও রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি সব বাসভবন এবং যানবাহনে কালো পতাকা উত্তোলিত ছিল। যেসব অফিস খোলা রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেগুলো ছাড়া আর সব সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বর্জন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাব...

১৯৭১, খুলনার দেয়ারা গণহত্যা

মো. রোকনুজ্জামান বাবুলঃ ১৯৭১ এর আগস্ট মাস। সারাদেশের ন্যায় দালাল রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজছে। এমনই একটি দিন আগস্ট মাসের ২৭ তারিখ। মাত্রই দিনের আলো ফুটতে শুরু করেছে। এমনই সময় খুলনা জেলার দেয়ারা গ্রামে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানী সেনাদের নিয়ে হামলা করে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকাররা খালিশপুরের পিপলস্ জুট মিলের খেয়াঘাট পার হয়ে...

কি দিয়ে আমরা তাঁর ঋণ শোধ করব?

অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরীঃ মার্চ মাস এলেই আনন্দের পাশাপাশি বেদনা উঁকিঝুঁকি মারে; আবার এক ধরনের আতঙ্ক অনেককে পেয়ে বসে। এই আতঙ্কের কোনো নির্দিষ্ট নাম দেয়া না গেলেও তাকে মার্চ আতঙ্ক নামে অভিহিত করছি। যারা এই আতঙ্কে ভোগেন ও কাবু হন তাদের চেনা কঠিন। তাদের মধ্যে যেমন আছে রাজাকার, আলবদর, আল শামস, পাকিস্তানি এজেন্ট, তেমনি আছেন এমন কিছু ব্যক্তি যারা ১৯৭১ সালে মুক্...

বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার অদম্য যাত্রাপথ

নাজনীন বেগমঃ বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শৈশব-কৈশোর অতিক্রান্ত করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিভাবে বাঙালীর ঐতিহ্যিক সত্তায় চিরস্থায়ী ব্যক্তিত্বের শীর্ষস্থানে চলে আসলেন সেও যেন এক ঐতিহাসিক পথপরিক্রমা। প্রভাতের সূর্যোদয় সারাদিনের যে বার্তা দেয়, সেটা যেন জাতির জনকের জীবনযাত্রায় উজ্জ্বলভাবে প্রতিভাত হয়ে আছে। তাই বাল্যকাল থেকেই দেশ, মাটি আর মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ...

জয়দেবপুরে সশস্ত্র বিদ্রোহ

তোফায়েল আহমেদঃ ১৯৭১-এর ১৯ মার্চ দিনটি ছিল শুক্রবার। আজ লাগাতার চলা অসহযোগ আন্দোলনের অষ্টাদশ দিবস অতিবাহিত হয়। আজও রাজধানীর সব সরকারি-বেসরকারি বাসভবন এবং যানবাহনগুলোয় কালো পতাকা উড্ডীন থাকে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনানুযায়ী বিভিন্ন সরকারি-আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা অব্যাহত থাকে। স্বাধিকার আদায়ের দাবি এবং বঙ্...

গণহত্যা ১৯৭১: হরিণাগোপাল-বাগবাটী

আরিফ রহমানঃ দিনটি ছিল মঙ্গলবার। হানাদার বাহিনী তাদের স্থানীয় দোসরদের সহযোগিতায় আনুমানিক ভোর পাঁচটায় বাগবাটী গ্রাম ঘেরাও করে। গাড়ির শব্দে পাহারারত যুবকরা গ্রামবাসীদের সতর্ক করার আগেই এক শ’ পাকসেনা গ্রামে ঢুকে পড়ে তিন ভাগে অভিযান চালায়। একটি গ্রুপ হত্যা চালায়, একটি গ্রুপ ধর্ষণ করে, আরেকটি গ্রুপ পুরো গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় রাজাকারর...

এক অসাধারণ মানুষের সাধারণ কয়েকটি গল্প

নিশম সরকারঃ  ১.১৯৭৫ সালের সাতৈ মে। ৮ দিন আগে পিতা শেখ লুতফর রহমানকে হারিয়েছেন। শোকে মুহ্যমান সে সময়, তবুও নেতা কর্মীদের সকলকে নিয়ে জাহাজে করে রওনা দিলেন টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে, পিতার চেহলাম এর জন্য। রাতের খাবার সেরে সিনিয়র নেতারা যে যে যার কেবিনে চলে গেলেন। কেউ কেউ ডেক এই বিছানা পেতে শুয়ে পড়লেন। জাহাজের ঢুলুনিতে মধ্যরাতে মাহবুব তালুকদার এর ঘুম ভেঙ্...

মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

ড. মোহাম্মদ হাসান খানঃ বাইগার নদীর তীর ঘেঁষে ছোট্ট একটি গ্রাম, টুঙ্গিপাড়া। এই গ্রামে জন্ম নেন এক মহানায়ক। শুধু তা-ই নয়, জন্ম নেন একটি কিংবদন্তি, যার নাম শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি বাঙালির জন্য কাঁদতেন, ভালোবাসতেন। বটবৃক্ষ হয়ে ছায়া দিতেন তার জনগণ ও নেতাকর্মীদের। ছিলেন ’৭১-এর অনেক পিতৃহীন পরিবারের আশ্রয়। বীরাঙ্গনাদের তিনি দিয়েছিলেন মায়ের মর্যাদা, দিয়েছিলেন ...