যুদ্ধাপরাধীদের বিচারঃ কলঙ্কমুক্তির পথে বাংলাদেশ

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কলঙ্কমুক্তির পথে বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক

অজয় দাশগুপ্ত স্বাধীনতার পঞ্চাশতম দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের বিরান দৃশ্য বুকের ভেতর এক ধরনের হাহাকার অনুভব করি। ১৯৭১ সালের এ দিনে ঢাকার সর্বত্র ছিল পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা। রাজপথ জনশূন্য। ২৫ মার্চ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। সন্ধ্যার পরপরই আমরা কয়েকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাতিরপুল বাজারে পৌঁছালে দেখি ...

দুঃখী মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বিবিসির জরিপে যখন শেখ মুজিবুর রহমানকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়, তখন কারো কারো মধ্যে যে বিস্ময় দেখা দেয়নি, তা নয়। রাজনীতি-সাহিত্য-শিল্প-অর্থনীতি-বিজ্ঞান-সমাজ-সংস্কৃতি-শিক্ষা-সংস্কারের শত শত বছরের ইতিহাসে সব বাঙালিকে ছাড়িয়ে শেখ মুজিব কীভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হলেন তার উত্তর অত্যন্ত সহজ – তিনি বাঙালির ইতিহাসে প্রথম স্বাধীন জা...

সবকিছু চলতে থাকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে

অগ্নিঝরা মার্চের নবম দিন আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকা শহর যেন মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছিল। যেখানে-সেখানে জটলা, মিছিল, মিটিং চলতেই থাকে। লাগাতার আন্দোলনে দেশ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, শিক্ষকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলা...

৭ই মার্চঃ বাঙালি জাতির চিরন্তন অনুপ্রেরণা

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা এই বাংলাদেশের মানুষের সকল আশা আকাংক্ষার মূলে ছিল একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে মাথা তুলে দাঁড়ানোর বাসনা। কন্ঠস্বরে প্রকাশ হওয়ার আগে এই আকাঙ্ক্ষা বুকে নিয়েই কাটিয়েছে প্রায় আড়াইশো বছর। অবশেষে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এর তপ্ত দুপুরে আসে সেই পরম আরাধ্য স্বাধীনতার ঘোষণা। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাকিস্তান ...

খতম করেছিলাম মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আইনজীবীকে - বীর মুক্তিযোদ্ধা অভিনয়শিল্পী মজিবুর রহমান দিলু

একাত্তরের অদম্য মুক্তিযোদ্ধা অভিনয়শিল্পী মজিবুর রহমান দিলু। ১৯৭০ সালে মেট্রিক পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে প্রথম বিভাগে পাস করে একাত্তরে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন একাদশ শ্রেণিতে। স্কুলে পড়ার সময়ই স্বাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে যে মিছিলে গুলিতে আসাদ শহীদ হয়েছিলেন সেই মিছিলে ছিলেন দিলুও। স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘মিছিলে গুল...

একাত্তরের পহেলা মার্চের স্মৃতি

বিভুরঞ্জন সরকারঃ ১৯৭১ সালে আমি দিনাজপুর সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলাম। ২৮ ফেব্রুয়ারি আমাদের কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়ন মনোনীত প্যানেল হেরে যায়। স্বভাবতই মন খারাপ। পরের দিন সকালে হোস্টেল থেকে বের হয়ে কলেজে না গিয়ে আমরা কয়েক বন্ধু ঢুকলাম চৌরঙ্গী সিনেমা হলে, মর্নিং শো দেখতে। ‘রোড টু সোয়াত’ নামের একটি উর্দু সিনেমা চলছিল...

স্মৃতির পাতায় বঙ্গবন্ধু

- মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূইয়া উনিশ’শ’ একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও দেশের কয়েকটি বিহারী অধ্যুষিত এলাকা তখনও উত্তপ্ত ছিল। ওই সব স্থানে বাঙালী-বিহারী সংঘর্ষ বেঁধে যেত প্রায়ই। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিহারীদের অমানুষিক ও বর্বর আচরণের কারণে বাঙালীরা ছিল তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ। যতদূর মনে পড়ে সময়টা ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে হবে। আমি...

জয় বাংলার বাংলাদেশ

অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) জয় বাংলা বাঙালীর জাতীয় স্লোগান। এই স্লোগান মুখে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানের দখলমুক্ত করেছিল বাংলাদেশকে। জয় বাংলা তাই আর দশটা স্লোগানের মতো সাধারণ কোন স্লোগান নয়।আমার লেখায় আর বলায় প্রায়ই বাঙালীর ইতিহাসকে টেনে আনি। বাঙালীর যে হাজার-হাজার বছরের ইতিহাস, এমনকি চর্যাপদ থেকে শুরুটা ধরলেও ন্যূনতম যা এক হাজার বছরে...

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতির আত্মগৌরবের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে পরিচালিত দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব-মানচিত্রে অভ্যুদ্বয় ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লক্ষ ম...

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা

১৪ ডিসেম্বর; শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর দিন। বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় যখন নিশ্চিত, ঠিক তখন পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের রাতের আঁধারে...

৭১ সালের কথা ভুলতে পারেনি বিনোদবাড়ির মানুষ

স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালের সেই দিনের পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের কথা এখনও ভুলতে পারেনি বিনোদবাড়ি গ্রামের মানুষ। সেই দিনের কথা মনে হলে এখনও আঁতকে ওঠেন তারা। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৮ বছরেও সেই দিনের ক্ষত শুকায়নি তাদের। ওই সময় একই পরিবারের আটজনসহ তিন গ্রামের ২৬৫ জনকে হত্যা করা হয় একই দিনে। মায়ের কোলে থাকা দুধের শিশুও রক্ষা পায়নি তাদের নির্মম হত্যাকাণ্ড ...

বিজয়ের মাসঃ একই দিনে বিধ্বস্ত হয় পাক বাহিনীর প্রায় সব বিমান

সম্মুখযুদ্ধ শুরুর তৃতীয় দিনেই স্বাধীন বাংলার আকাশ শত্রুমুক্ত হতে শুরু করে। যৌথবাহিনীর কাছে বিপর্যস্ত হতে থাকায় জেনারেল নিয়াজি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সীমান্ত অঞ্চল ছেড়ে শহরভিত্তিক স্ট্রং পয়েন্ট তৈরির নির্দেশ দেন। একাত্তরের এই দিনে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় সব বিমান। ভারতীয় জঙ্গিবিমানগুলো সারাদিন ধরে অবাধে আকাশে উড়ে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে প্...

যুদ্ধদিনের অম্লান স্মৃতিঃ পাকিদের পাঁচটি গাড়ি উড়িয়ে দিই

‘১৯৭১ সালের মার্চ মাস। আমি ইপিআরের সৈনিক। ট্রেনিংয়ের জন্য যশোর সেক্টর হেডকোয়ার্টারে অবস্থান করছি। ২২ মার্চ যশোর ছাত্রলীগ অফিসে গিয়ে একটি বাংলাদেশি পতাকা সংগ্রহ করি। রাতে আমার গার্ড কমান্ডার কাজী তৈয়বুর রহমানকে পতাকা আনার কথা বলি। তিনি রেখে দিতে বলেন। পরদিন সকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে যশোর ইপিআর হেডকোয়ার্টারের সামনে অবস্থান নেন। আমি আমার গার্ড কমান্ডার...

কানাইঘাটের ভয়াবহ যুদ্ধে ৮৮ হানাদার মারা পড়ে

‘কানাইঘাটে পাক সেনাদের সঙ্গে আমাদের ২৫ নভেম্বরের ভয়াবহ যুদ্ধে একজন মেজরসহ ৮৮ জন হানাদার নিহত হয়। আটক করি ২৬ জনকে। অন্যরা পালিয়ে যায়। ভয়াবহ ওই যুদ্ধে আমরাও হারিয়েছিলাম ছয়জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ১১ জন মিত্রবাহিনীর সৈনিককে। ওই যুদ্ধের পর পাক হানাদার বাহিনী আর শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। ওই যুদ্ধের কথা মনে হলে এখনো শরীরের রক্ত টগবগিয়ে ওঠে।’ যুদ্ধদিনের স্...

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ

ড. মো. আনিসুজ্জামানঃ যুদ্ধকালীন ও যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন বাঙালি জাতির এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকার গঠন, সেই সরকারকে সঠিক পরিকল্পনা এবং নির্দেশনা দিয়েছেন তাজউদ্দীন আহমদ। বঙ্গবন্ধুর নামে পরিচালিত সরকারে তাঁর নেতৃত্বে ৯ মাসে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তিনি ছিলেন সশস্ত্র মুক্তিযো...

তাজউদ্দীন আহমদ : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম রূপকার

জি এম তারিকুল ইসলামঃ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর যে নামটি অনিবার্যভাবে এসে যায়; সেই নামটি হলো বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ। স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির পূর্বে ও উত্তরকালের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন এই তাজউদ্দীন আহমেদ। ঢাকা শহর থেকে মাত্র ৮২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বর্তমান গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপ...

১ জুলাই, ১৯৭১- 'বিচ্ছিন্নতার পথে বাংলাদেশ'

শাহাব উদ্দিন মাহমুদঃ ১৯৭১ সালের ১ জুলাই দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। এই দিন চট্টগ্রামে ক্যাপ্টেন শামসুল হুদার নেতৃত্বে এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহিনীর দেবীপুর অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। উভয়পক্ষের সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ১২ জন সৈন্য নিহত হয় ও ৫ জন আহত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান শহীদ হন। হাবিলদার গিয়াসের নেতৃত্বে এক প্লাটুন যোদ্ধা মিয়া বাজার থেকে ফুলতলীতে টহলরত অ...

পাকিস্তান সামরিক আদালতের নির্দেশ

তোফায়েল আহমেদঃ ১৯৭১-এর ২০ এপ্রিল আমার জীবনের এক বিশেষ দিন। এই দিনে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক সরকার সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাধীন বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, বেতারের উপদেষ্টা আবদুল মান্নান এমসিএ, দ্য পিপল পত্রিকার সম্পাদক আবিদুর রহমান এবং আমাকে ২৬ এপ্রিল সকাল ৮টায় সামরিক আদালতে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দে...

১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ঃ বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ

শাহাব উদ্দিন মাহমুদঃ ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল দিনটি ছিল শনিবার। কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরের অখ্যাত ভবেরপাড়া গ্রামের বৈদ্যনাথতলায় সাদামাটা পরিবেশে একটি আমবাগানে শপথ নিয়েছিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর সরকার। আমবাগানের চারদিকে রাইফেল হাতে কড়া প্রহরায় ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধারা। প্রায় দশ হাজার মানুষের বিপুল হর্ষধ্বনির মধ্যে বেলা এগারোটায় আওয়ামী লীগ চীফ হুইপ অধ্যাপক ইউসুফ আলীর স্বাধ...