অধ্যাপক ডঃ কামরুল হাসান খানঃ বাঙালির ভাষা আন্দোলনে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেদিনের ধর্মঘটের মাধ্যমে আন্দোলন দানা বাধে ও বেগবান হয়- যার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের নাজিমুদ্দিন সরকার চুক্তি করতে বাধ্য হয় এবং আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি করাচিতে পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশনে বিরোধী দলের পক্ষে কংগ্রেস থেকে নির্বাচিত সদ...
খোকন আহম্মেদ হীরাঃ ভাষা আন্দোলনের প্রথম সংগ্রাম শুরু হওয়ার পূর্বে ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে শেখ মুজিবুর রহমান বরিশালে এসে বিএম কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সভা করে ছাত্রদের সংগঠিত করেছেন। ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের এ সভাই ছিল বরিশালের প্রথম সভা। পরবর্তীতে শেখ মুজিবুর রহমান বরিশালে সভা করে ঢাকায় যাওয়ার পর বাংলা ভাষার...
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “যার নেতৃত্বে এই ভাষা আন্দোলনের শুরু, আর ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। “ভাষা আন্দোলন থেকেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। এবং তারই নেতত্বে আমরা বিজয় অর্জন করি, স্বাধীন রাষ্ট্র প...
অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাবঃ করোনাকালে ফেসবুক লাইভ আর ভার্চুয়াল টিভি টকশোগুলোর কল্যাণে বলার আর তার চেয়ে বেশি জানার সুযোগ হয় অনেক। এমনি এক টকশোর কদিন আগের শিরোনাম ‘ভাষার মাসে ষড়যন্ত্র’। একুশ নিয়ে লিখতে বসে হঠাৎই মাথায় খেলল টকশোর শিরোনামটি। এই একুশেই আমার আরেকটি লেখায় আমি লিখেছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের এই যে পথ চলা এর সূচনাটা এ...
আবদুল মান্নানঃ একসময় প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস বা রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে এই দেশের ছাত্র-জনতা পালন করত। দিনটি বেশ ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে পালিত হতো। তেমনটি আজ আর দেখা যায় না। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছিল, সেই রাষ্ট্রটি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। বিশ্বে এমন ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত আর কোনো রা...
তোফায়েল আহমেদঃ স্বাধীন বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ প্রতিবছর অমর একুশের শহীদ দিবসে মহান ভাষা আন্দোলনের সূর্যসন্তানদের শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করে। ১৯৫২-এর ভাষা শহীদদের পবিত্র রক্তস্রোতের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের গৌরবগাথা। ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলার ছাত্রসমাজ আত্মদান করে মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। রক্তরাঙা অমর একুশে ফেব্রুয়ারি রক্ত...
বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত ১৯৭৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ঘটনা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমর একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে বলেন, রক্তে রাঙানো এই দিন বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। আজকের এই দিন জাতির আত্মশুদ্ধির দিন। শহীদদের আত্মাহুতি বৃথা যেতে দেওয়া হবে না- আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। বঙ্গবন্ধু তার বাণীতে আরও বল...
অজয় দাশগুপ্তঃ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ব্যাপক, গভীরতায় অতল। এর পুরোটা জুড়েই সম্মুখ সারিতে থাকা একটি নাম- শেখ মুজিবুর রহমান। তরুণ বয়সেই ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতি-সাহিত্য প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকদের কু-মতলব এবং বাঙালিদের আবেগ ও রোষ-ক্ষোভ ধরে উঠতে পারেন। ততদিনে আন্দোলনের বর্ষাফলকও তাঁর হাতেই তৈরি- ছাত্রলীগ। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র সাড়ে চা...
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাতৃভাষার জন্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতির পিতা যে সংগ্রামের সূচনা করেছিলেন, তার মধ্য দিয়েই রচিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ। আর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে চলার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। শনিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চলতি বছরের একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত ...
এম. নজরুল ইসলামঃ বাঙালির মেরুদণ্ড মাতৃভাষা বাংলা-এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পাকি¯ানের জš§ থেকেই বাঙালিরা ছিল সোচ্চার। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন করাচীতে শুরু হলে পূর্ব বাংলার প্রতিনিধি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষার ওপর একটি সংশোধনী প্রস্তাবে বলেন, উর্দু এবং ইংরেজীর সঙ্গে বাংলাকেও গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হিসেবে ব্যবহার ক...
ফেব্রুয়ারি ৮ই হবে, ১৯৪৮ সাল। করাচিতে পাকিস্তান সংবিধান সভার (কন্সটিটিউয়েন্ট এ্যাসেম্বলি) বৈঠক হচ্ছিল। সেখানে রাষ্ট্রভাষা কি হবে সেই বিষয়ও আলোচনা চলছিল। মুসলিম লীগ নেতারা উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষপাতী। পূর্ব পাকিস্তানের অধিকাংশ লীগ সদস্যেরও সেই মত। কুমিল্লার কংগ্রেস সদস্য বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত দাবি করলেন বাংলা ভাষাকেও রাষ্ট্রভাষা করা হোক। কারণ, পাকিস্তানের সং...
১৯৫২ সাল পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনকে খুব সহজেই তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। প্রথম পর্যায় হচ্ছে লাহোর প্রস্তাবের পর থেকে ১৯৪৭-এর জুলাইয়ে জিয়াউদ্দিনের অভিমত প্রকাশ করা পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়, জিয়াউদ্দিনের অভিমত প্রকাশ থেকে ১৯৪৮-এর মার্চ অর্থাৎ জিন্নাহর ঘােষণা পর্যন্ত। তৃতীয় পর্যায়, ১৯৪৮-এর মার্চ থেকে ১৯৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ১৯৪২-৪৩ থেকে ১৯৪৭-এর জুলাই পর্যন্ত কালপর্বে ভাষা...
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি আমরা দেখেছি যে, ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তি সম্পন্ন হবার পর নবগঠিত ভারত রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ দেশে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রকৃতির সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের নীতি গ্রহণ করেন। অপরদিকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ও মুসলিম লীগ নেতৃত্ব দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রকৃতির সংসদীয় শাসন অর্থাৎ জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার নীতি গ্রহণ না করে পূর্ব বাংলার নিরীহ শান্তিপ্রিয় মানুষে...
১৯৫২ সালে নূরুল আমীন সরকার প্রাদেশিক আইন পরিষদে বাংলাকে সরকারী ভাষার মর্যাদা প্রদান ও পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব গ্রহণ করলেও ভাষা আন্দোলনকারীদের ওপর দমন, নির্যাতন অব্যাহত রাখে। ভাষা আন্দোলনকারীরা ভারতের এজেন্ট 'পাকিস্তানের শত্রু', পাকিস্তানের সংহতি বিনষ্টকারী' প্রভৃতি অভিযোগে মওলানা ভাসানী, শামসুল হক, আবুল হাশিস প্রমুখ নেতাসহ অসংখ্য কর্মীকে গ্রেফতার ক...
মহিউদ্দিন আহমেদঃ আমাকে অনুরোধ করা হয়েছে বিগত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও সেই সম্পর্কিত ঘটনাসমূহ বিবৃত করে একটি লেখা দেওয়ার জন্য। হয়তো মাঝে মাঝে আমার অজ্ঞাতে কখনও দু-এক লাইন মনে রাখার জন্য লিখি। কিন্তু ছাপানোর জন্য লেখা দিতে হবে, এ আমার কল্পনারও বাইরে। ঘটনা ঘটেছে ৫২ সালে, ৫০ বছর আগে। আজ এই জীবন সায়াহ্নে, স্মৃতি থেকে লেখা প্রায় একটি অসম্ভব ব্যাপার। ডায়েরি লেখার অভ্যাস আ...
গাজীউল হক: ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট অত্যন্ত বিরাট, বলা যেতে পারে এটি ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত। আর এই বিশাল প্রেক্ষাপটে ততোধিক বিশালত নিয়ে বিরাজিত একটি নাম-শেখ মুজিবুর রহমান। ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একটি অপরটির সঙ্গে এমনি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত যে, একটিকে ছেড়ে অন্যটি কল্পনাতে আসে না। একে অপরের সাথে অবিচ্ছি...
১৯৫১ সালের শেষের দিকে বন্দি শেখ মুজিবকে ফরিদপুর জেল থেকে ঢাকার জেলে নিয়ে আসা হলাে। যদিও প্রচণ্ড অসুস্থ শেখ মুজিবকে জেলে না নিয়ে জেল হাসপাতালে রাখা হয়েছিল এক মাস। কয়েকদিন পর চোখের চিকিৎসার জন্য শেখ মুজিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই সুযােগে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ প্রচুর মানুষ শেখ মুজিবের সঙ্গে দেখা করতে আসতে লাগল। ১৯৫১ সালের অক্...
অজয় দাশগুপ্তঃ পাকিস্তানের পূর্বাংশে কেমন করে পালিত হলো প্রথম হরতাল? তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের কী ভূমিকা ছিল এ কর্মসূচি সফল করে তোলায়? পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট যে হরতাল ডাকা হয়েছিল, কলিকাতা শহরে তা বাস্তবায়নে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। ওই হরতালের পেছনে তৎকালীন বাংলা প্রদেশের মুসলিম লীগ সরকারের সক্রিয় সমর্থন ছিল। কিন্তু ১১ মার্চ-এর...
গোলাম কবিরঃ মাতৃদুগ্ধসম’ মাতৃভাষায় মানুষের অধিকার যেমন সহজাত ‘স্বর্গদপি গরীয়সী’ মাতৃভূমিতে স্বচ্ছন্দে বসবাসের আধিকার অবদমিত ও অপহৃত হয়েছিল নানা কারণে। ইতিহাস যার সাক্ষ্য বহন করছে। বাংলা ভাষার মুক্তির সহযাত্রীদের অন্যতম হয়ে এবং স্বদেশমুক্তির পুরোধাজনকরূপে যাঁর অবদান অবিসংবাদিত, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর এই অতুল অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা...
গোলাম কবিরঃ মাতৃদুগ্ধসম’ মাতৃভাষায় মানুষের অধিকার যেমন সহজাত ‘স্বর্গদপি গরীয়সী’ মাতৃভূমিতে স্বচ্ছন্দে বসবাসের আধিকার অবদমিত ও অপহৃত হয়েছিল নানা কারণে। ইতিহাস যার সাক্ষ্য বহন করছে। বাংলা ভাষার মুক্তির সহযাত্রীদের অন্যতম হয়ে এবং স্বদেশমুক্তির পুরোধাজনকরূপে যাঁর অবদান অবিসংবাদিত, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর এই অতুল অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা...