খরখড়িয়ার যুদ্ধ

জাহাঙ্গীর আলম সরকার: নীলফামারী জেলার সদর থানায় খরখরিয়া নদীর অবস্থান। বাংলাদেশের উত্তর গ্রীষ্ম মণ্ডলে অর্থাৎ প্রায় কর্কটক্রান্তি রেখা বরাবর অবস্থিত নীলফামারী জেলা। ১৯৭১ সালে ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সাথে এই খরখরিয়ার তীরেই ঘটেছিলো এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। ইছামতী যুদ্ধের দায়িত্ব ছিলো মিত্রবাহিনীর ৭১ মাউন্টেন ব্রিগেডের অধীনে থাকা ২১ রাজপুত রাইফেলসের ওপর।...

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ৩০ লাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সাক্ষর এবারের বিজয়ের মাস নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালিত হবে। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার...

ডিসেম্বর: বাংলাদেশের বিজয় উদযাপনে বিএনপির এতো সমস্যা কেন?

দীর্ঘ দুই যুগের মুক্তিসংগ্রাম এবং স্বাধীনতা-যুদ্ধের মাধ্যমে হাজার বছরের শৃঙ্খলমুক্তি ঘটে বাঙালি জাতির। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মোহনী নেতৃত্বে বীরের জাতি হিসেবে বিশ্বমানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। সেই দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই নিয়মিত মহান মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস বিকৃতি এবং স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি ও ভীতি সৃষ্টি করে চলেছে বিএন...

মহান বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু ও বীর শহীদদের প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা

মহান বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু ও বীর শহীদদের প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা

৩ ডিসেম্বর ১৯৭১: পাকিস্তানি বাহিনীর বিদায় ঘন্টা

ডা. সুব্রত ঘোষ: ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাস। মুক্তিবাহিনীর একের পর এক হামলায় পাক হানাদাররা দিশাহারা। দেশে সব অঞ্চলেই বিজেয়ের বেশে একের পর এক এগিয়ে যেতে লাগলো মুক্তিযোদ্ধারা। উপায়ান্তর না দেখে পাকবাহিনী এ দেশের সাধারণ জনগণের ওপর হত্যা, নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিল কয়েকগুণ। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারতে বিমান হামলা করে পাকিস্তান। তাদের উদ্দেশ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা প...

বিজয়ের মাসে পদ্মা জয়

কবীর চৌধুরী তন্ময়ঃ যে চিনে-সেই কিনে, আবার যে জানে-সেই মাথা নত করে মানে, সম্মান-শ্রদ্ধা করে-এটি আমার ব্যক্তি জীবনের অভিজ্ঞতা-উপলব্ধি। কারণ, যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনি, তার কাছে জয়-পরাজয় একটা খেলা মাত্র। যে দুর্যোগ মোকাবেলা করেনি, তার কাছে বৃষ্টি-জলোচ্ছ্বাস বিলাসিতার উপমা মাত্র। আর যে পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করে, সেই জানে শুধু সাঁতার কাটার কৌশল জান...

১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১: পথ করতে আলো, রাতভর জ্বলেছিল ঘরের বাতি

নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের পর যেদিন বিজয়ের সূর্য হেসেছিল বাংলার আকাশে, সেদিন কেমন ছিল ঢাকা? নয় মাস অবরুদ্ধ থাকা মানুষগুলোর মুক্তির আনন্দের প্রকাশইবা ছিল কেমন? ৫০ বছর পর তার চাক্ষুস সাক্ষী অনেকে হারিয়ে গেছেন পৃথিবী ছেড়ে, কিন্তু যারা এখনও বেঁচে আছেন, তাদের মনে এখনও জ্বলজ্বল করে সেই স্মৃতি। তেমনই একজন সত্তরোর্ধ্ব আনোয়ারুল আলীম; ওষুধের ব্যবসা করতেন এক সময়। এখন অবসর নিয়ে...

বঙ্গবন্ধু ও বিজয়ের স্মৃতি

তোফায়েল আহমেদঃ স্মৃতির পাতায় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের অনেক ছবি ভেসে ওঠে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন সামনে নিয়ে দীর্ঘ ২৪টি বছর সংগ্রাম পরিচালনা করে, নিজের জীবন উত্সর্গ করে ধাপে ধাপে অগ্রসর হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন মানুষের হূদয়ে মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী গৌরবগাথা অম্লান থাকবে। তিনি এমন এক মহামানব, যার হূদয় ছিল মানুষ...

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা

১৪ ডিসেম্বর; শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর দিন। বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় যখন নিশ্চিত, ঠিক তখন পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের রাতের আঁধারে...

৭১ সালের কথা ভুলতে পারেনি বিনোদবাড়ির মানুষ

স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালের সেই দিনের পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের কথা এখনও ভুলতে পারেনি বিনোদবাড়ি গ্রামের মানুষ। সেই দিনের কথা মনে হলে এখনও আঁতকে ওঠেন তারা। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৮ বছরেও সেই দিনের ক্ষত শুকায়নি তাদের। ওই সময় একই পরিবারের আটজনসহ তিন গ্রামের ২৬৫ জনকে হত্যা করা হয় একই দিনে। মায়ের কোলে থাকা দুধের শিশুও রক্ষা পায়নি তাদের নির্মম হত্যাকাণ্ড ...

বিজয়ের মাসঃ একই দিনে বিধ্বস্ত হয় পাক বাহিনীর প্রায় সব বিমান

সম্মুখযুদ্ধ শুরুর তৃতীয় দিনেই স্বাধীন বাংলার আকাশ শত্রুমুক্ত হতে শুরু করে। যৌথবাহিনীর কাছে বিপর্যস্ত হতে থাকায় জেনারেল নিয়াজি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সীমান্ত অঞ্চল ছেড়ে শহরভিত্তিক স্ট্রং পয়েন্ট তৈরির নির্দেশ দেন। একাত্তরের এই দিনে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় সব বিমান। ভারতীয় জঙ্গিবিমানগুলো সারাদিন ধরে অবাধে আকাশে উড়ে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে প্...

যুদ্ধদিনের অম্লান স্মৃতিঃ পাকিদের পাঁচটি গাড়ি উড়িয়ে দিই

‘১৯৭১ সালের মার্চ মাস। আমি ইপিআরের সৈনিক। ট্রেনিংয়ের জন্য যশোর সেক্টর হেডকোয়ার্টারে অবস্থান করছি। ২২ মার্চ যশোর ছাত্রলীগ অফিসে গিয়ে একটি বাংলাদেশি পতাকা সংগ্রহ করি। রাতে আমার গার্ড কমান্ডার কাজী তৈয়বুর রহমানকে পতাকা আনার কথা বলি। তিনি রেখে দিতে বলেন। পরদিন সকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে যশোর ইপিআর হেডকোয়ার্টারের সামনে অবস্থান নেন। আমি আমার গার্ড কমান্ডার...

৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ঃ বিজয় সমাগত!

১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর দিনটি ছিল শনিবার। এই দিন বাংলাদেশের সকল রণক্ষেত্রে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকায় হানাদার বাহিনী সর্বত্র পিছু হটছিল। পাকিস্তানী বিমান বাহিনী ক্রমশ পঙ্গু হয়ে পড়ছিল। সীমান্ত শহর দর্শনা সম্মিলিত বাহিনীর দখলে চলে আসে। এদিকে ভারতীয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী বাংলাদেশে দখলদার বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। চতুর্দিক থেকে ভারতীয় ...

বিজয়ের মাসঃ রণাঙ্গন আর জাতিসংঘ যুদ্ধ চলছিল দুই জায়গায়

মুক্তিযুদ্ধের এই দিন থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের পথে মুক্তিযোদ্ধাদের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অনমনীয়, তেজি অগ্রগতির কাছে সমস্ত বাধাই তখন তুচ্ছ। একাত্তরের ৪ ডিসেম্বর থেকেই বিভিন্ন অঞ্চল মুক্ত হতে থাকে। সে খবর ছড়িয়ে পড়ে আকাশে, বাতাসে, সর্বত্র। সেই বিজয়ের বার্তা যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাদের করে তোলে আরো দুর্বার, অপ্রতিরোধ্য। ডিসেম্বরে মুক্তিবাহিনী যখন ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে...

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ঃ আত্মসমর্পণের আগের সেই মুহূর্তগুলো

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সময় আনুমানিক সকাল ৯টা। ঢাকায় অবস্থানরত পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা তাদের দপ্তরে বসে বৈঠক করছিলেন একসঙ্গে। একটি চিরকুট এলো সেই সময়, চমকে দিল সবাইকে। বৈঠকে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ কে নিয়াজি, মেজর জেনারেল জামশেদ, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী, রিয়ার অ্যাডমিরাল শরিফ, ব্রিগেডিয়ার বকর সিদ্দিকী, সিদ্দিক সালিক ও আরও কয়েকজন। সেই চি...

সেদিনের অকুতোভয় তরুণরাই বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবিঃ বাহালুল মজনুন চুন্নু

পঁচিশে মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদাররা শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে রক্তের সমুদ্রে ভাসিয়ে দিতে যে ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর গণহত্যা শুরু করেছিল, মৃত্যু-ধ্বংস-আগুন-আর্তনাদের বীভত্স খেলায় মত্ত হয়ে যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল, নয় মাস পর তার পরিসমাপ্তি ঘটেছিল ষোলই ডিসেম্বর। লন্ডনের নিউ টাইমস পত্রিকায় সেই সময় বলা হয়েছিল, রক্তই যদি কোনো দেশের স্...

মানিকনগরের সেই মানিককে এখনো খুঁজে ফিরি

স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনঃ তখন ডিসেম্বর মাস শুরু হয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রমাগত আক্রমণে সংকুচিত হয়ে ঢাকার দিকে ঘাঁটি গাড়ছে পাকিস্তানিরা। সেই সময় ঢাকায় একটি বড় ধরনের অপারেশনের পরিকল্পনা চলছিল। আমেরিকান ইনফরমেশন সেন্টার গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা  নেওয়া হয়। ওটা ছিল ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর একটি। আমি তখন বুয়েটে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। গোপীবাগের ভাড়া বা...

তিন সেনাকে শেষ করে মুক্ত করি বাঙালি নারীদের

একাত্তরের মার্চে সামরিক পোশাক ছেড়ে ছেঁড়া লুঙ্গি পরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন আবদুল জলিল খান। তাঁকে রাখা হয়েছিল এমন একটি ক্যাম্পে যেখানে বাঙালি নারীদের পাশবিক নির্যাতন করা হতো। একপর্যায়ে তিনজন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করে জলিল ওই নারীদের নিয়ে পালিয়ে আসেন। মানিকগঞ্জের বায়রা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জলিল খান জানান, ১৯৬৯ সালে তিনি যোগ ...

১৬ই ডিসেম্বর: মহান বিজয় দিবস নিশঙ্ক চিত্ত, সুউচ্চ শির

১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। রক্তস্নাত বিজয়ের ৪৬তম বার্ষিকী। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের দিন। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রাম করে বহু প্রাণ আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এদিনে বীর বাঙালি ছিনিয়ে আনে বিজয়ের লাল সূর্য। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের মুক্তিকামী মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের পর এদিন আত্মসমর্পণ করে মুক্তিকামী মানুষের কাছে। আর পাকিস্তানি বাহিনীর এই আ...