3071
Published on ডিসেম্বর 13, 2018১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সময় আনুমানিক সকাল ৯টা। ঢাকায় অবস্থানরত পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা তাদের দপ্তরে বসে বৈঠক করছিলেন একসঙ্গে। একটি চিরকুট এলো সেই সময়, চমকে দিল সবাইকে।
বৈঠকে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ কে নিয়াজি, মেজর জেনারেল জামশেদ, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী, রিয়ার অ্যাডমিরাল শরিফ, ব্রিগেডিয়ার বকর সিদ্দিকী, সিদ্দিক সালিক ও আরও কয়েকজন।
সেই চিরকুটে লেখা ছিল- প্রিয় আবদুল্লাহ, আমি এখন মিরপুর ব্রিজে। আপনার প্রতিনিধি পাঠান।
এখানে 'আবদুল্লাহ' বলতে জেনারেল নিয়াজিকে বোঝানো হয়েছিল।
নিয়াজির পুরো নাম আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি, এ কে নিয়াজি হিসেবে পরিচিত ছিলেন যিনি। এ চিঠি পাঠিয়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল গন্দর্ভ সিং নাগরা।
সকাল ৮টা নাগাদ ঢাকার মিরপুর ব্রিজের কাছে মেজর জেনারেল নাগরাকে বহনকারী একটি সামরিক জিপ এসে থামে। তিনি কীভাবে ঢাকার প্রবেশমুখে এসে পৌঁছলেন সেটিও অবাক করেছিল সবাইকে। মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খান ভেবেছিলেন- যুদ্ধবিরতির জন্য বার্তা পাঠিয়েছেন মেজর জেনারেল নাগরা।
জেনারেল নিয়াজিকে তিনি প্রশ্ন করেন, 'জেনারেল নাগরা কি আলোচনার জন্য এসেছেন?'
নিয়াজি কোনো উত্তর দিলেন না সেই প্রশ্নের। কারণ এর আগে পাকিস্তানের তরফ থেকে ভারতের কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল।
সেনানিবাসে তখন এসব ঘটনা খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক। তার লেখা 'উইটনেস টু সারেন্ডার' বইয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন তখনকার ঘটনা। এ ছাড়া সেই সময়ের ঘটনাবলি নিয়ে বই লিখেছেন মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খানও। তার লেখা বই 'হাউ পাকিস্তান গট ডিভাইডেড' বইয়েও উঠে এসেছে বিষয়গুলো। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন রাও ফরমান আলী খান। সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বেসামরিক প্রশাসন দেখাশোনা করতেন তিনি। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করা হয় তাকে। তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান গভর্নরের উপদেষ্টা।
রাও ফরমান আলী খান তার বইয়ে লিখেছেন- আমি নিয়াজিকে প্রশ্ন করলাম, আপনার প্রতিরক্ষা শক্তি কতটুকু আছে? কিন্তু মি. নিয়াজি সে প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে নীরব থাকলেন।
এ প্রসঙ্গে অ্যাডমিরাল শরিফ পাঞ্জাবি ভাষায় জেনারেল নিয়াজিকে প্রশ্ন করলেন- আপনার কি কিছু রয়েছে?
নিয়াজি এরপর মেজর জেনারেল জামশেদের দিকে তাকালেন, মাথা ঘুরিয়ে 'না' সূচক জবাব দিলেন। জেনারেল জামশেদের দায়িত্ব ছিল ঢাকা রক্ষা করা।
'উইটনেস টু সারেন্ডার' বইয়ে সিদ্দিক সালিক লিখেছেন- তখন মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী এবং রিয়ার অ্যাডমিরাল শরিফ একসঙ্গে বললেন, 'সেটাই যদি হয় তাহলে সে (জেনারেল নাগরা) যা বলছে সেটাই করুন।'
এরপর জেনারেল নাগরাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য মেজর জেনারেল জামশেদকে পাঠানো হলো। একই সঙ্গে মিরপুর ব্রিজের কাছে অবস্থানরত পাকিস্তানি সৈন্যদের বলা হলো- তারা যেন যুদ্ধবিরতি মেনে চলে এবং জেনারেল নাগরাকে নিরাপদে শহরে ঢুকতে দেয়।
সে মুহূর্তটিকে সিদ্দিক সালিক বর্ণনা করেছে এভাবে- ভারতীয় জেনারেল হাতেগোনা সৈন্য ও অনেক গর্ব নিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করলেন। তখনই কার্যত ঢাকার পতন হয়ে গেল।
জেনারেল নাগরা যখন ঢাকায় প্রবেশ করলেন তখন পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তাদের অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। সিদ্দিক সালিকের বইয়ে সে বিষয়গুলোও উঠে এসেছে। ঢাকার পতনকে তিনি বর্ণনা করেছেন হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত একজন মানুষের সঙ্গে। শরীরের কোথাও আঘাত না থাকলেও অচল হয়ে গেছে পুরো শরীর।
এদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড অফিস থেকে যুদ্ধের রণকৌশল চিহ্নিত করার জন্য মানচিত্রগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছিল। ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের আগমন উপলক্ষে বাড়তি খাবারের আয়োজন চলছিল। জেনারেল নাগরা কমান্ড অফিসে পৌঁছানোর পর তার সঙ্গে কৌতুকে মেতে ওঠেন জেনারেল নিয়াজি।
সিদ্দিক সালিক লিখেছেন- সেসব কৌতুক এতটাই নোংরা ছিল যে, সেগুলো বইয়ে প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।
মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খানও সে মুহূর্তের বর্ণনা তুলে ধরেছেন তার লেখায়- জেনারেল নিয়াজি তার চেয়ারে বসে আছেন, তার সামনে জেনারেল নাগরা রয়েছেন এবং একজন জেনারেলের পোশাকে রয়েছেন মুক্তিবাহিনীর টাইগার সিদ্দিকীও (কাদের সিদ্দিকী)। শুনলাম নিয়াজি নাগরাকে জিজ্ঞেস করছেন, তিনি উর্দু কবিতা বোঝেন কি-না। জবাবে নাগরা জানালেন, তিনি লাহোর সরকারি কলেজ থেকে ফার্সিতে এমএ পাস করেছেন। নাগরা যেহেতু নিয়াজির চেয়ে বেশি শিক্ষিত ছিলেন, নিয়াজি তাই পাঞ্জাবিতে রসিকতা শুরু করলেন। নিয়াজি তার আগের চরিত্রে ফিরে গেলেন।
জেনারেল নিয়াজির অফিসের ভেতরকার অবস্থা 'ভীতিবিহ্বল' করেছিল তাকে।
এরই মধ্যে ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের জেনারেল জে আর জ্যাকব ঢাকায় অবতরণ করেছেন। তিনি সঙ্গে এনেছেন আত্মসমর্পণের দলিল। কিন্তু জেনারেল নিয়াজি এটিকে বর্ণনা করছিলেন 'যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাব' হিসেবে।
জেনারেল জ্যাকব যখন আত্মসমর্পণের শর্তযুক্ত কাগজ হস্তান্তর করলেন, তখন জেনারেল রাও ফরমান আলী একটি ধারা নিয়ে আপত্তি তুললেন। তিনি আত্মসমর্পণের দলিলটি পড়ে বললেন, 'এটা তার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।' তিনি ভেবেছিলেন, এখানে হয়তো আত্মসমর্পণের কথা বলা হবে না। দলিলে বলা ছিল- ভারতীয় যৌথ কমান্ড এবং বাংলাদেশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করছে পাকিস্তান বাহিনী।
বাংলাদেশ শব্দটি রাখতে চায়নি পাকিস্তানি বাহিনী। কিন্তু জেনারেল জ্যাকব বললেন, 'দিল্লি থেকে বিষয়টি এভাবেই এসেছে।'
জ্যাকবের পাশে তখন দাঁড়ানো ছিলেন ভারতীয় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্নেল খেরা। রাও ফরমান আলীর আপত্তির জবাবে তিনি বললেন, 'এটা বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আপনারা শুধু ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করছেন।'
জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণের শর্তযুক্ত কাগজটি একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন; কিন্তু কোনো কথা বললেন না।
দুপুরের পর জেনারেল নিয়াজি ঢাকা বিমানবন্দরে গেলেন ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার জগজিৎ সিং অরোরাকে অভ্যর্থনা জানাতে। মি. অরোরা তখন তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলেন। ততক্ষণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল।
সিদ্দিক সালিক বর্ণনা করেন- জনসম্মুখে পাকিস্তানি জেনারেলের অপমান দেখার জন্য আবেগতাড়িত বাঙালিরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিল।
মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খান ও অ্যাডমিরাল শরিফ নিয়াজিকে অনুরোধ করলেন তিনি যাতে আত্মসমর্পণের কোনো অনুষ্ঠানে যোগ না দেন; কিন্তু তিনি সেটি মানলেন না।
রাও ফরমান আলী খান তার বইয়ে লিখেছেন- আমরা বললাম, আপনার এতে যোগ দেওয়া উচিত হবে না, আত্মসমর্পণ করা হয়ে গেছে। ...তাদের যা ইচ্ছা করুক। দয়া করে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না। কিন্তু তিনি যোগ দিয়েছেন এবং আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেছেন।
তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে, যেটি বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, জেনারেল অরোরা ও জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। এরপর জেনারেল নিয়াজি তার রিভলবারটি জেনারেল অরোরার হাতে তুলে দেন।
সিদ্দিক সালিক লিখেছেন- সেই রিভলবার তুলে দেওয়ার মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকেও তাদের হাতে তুলে দেওয়া হলো!-
এ ছবি দেখেই কি আত্মসমর্পণ করেছিলেন নিয়াজি?
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে মিলে মুক্তিবাহিনী যখন প্রবল আক্রমণ শুরু করে তখন থেকে ঢাকার পতন ছিল শুধুই সময় ব্যাপার। সিদ্দিক সালিক ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর বই থেকে বোঝা যায়, পাকিস্তানি বাহিনীর মনোবল একেবারেই ভেঙে পড়েছিল। কীভাবে যুদ্ধ থামানো যায় সে চেষ্টা করছিল ঢাকায় অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা। জেনারেল নিয়াজি ভাবছিলেন, তাদের জন্য বিদেশি সহায়তা আসবে। বিদেশি সহায়তা বলতে চীন কিংবা আমেরিকার সাহায্য। ডিসেম্বরের ৫ তারিখে কুমিল্লার দক্ষিণ অঞ্চলে একটি পাকিস্তানি ব্যাটালিয়নের আত্মসমর্পণের পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বুঝতে পারলেন যে, তাদের সৈন্যদের মনোবল ভেঙে গেছে।
রাও ফরমান আলীর বর্ণনা অনুযায়ী, জেনারেল নিয়াজি সন্দেহাতীতভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। অনেকে জেনারেল নিয়াজিকে তার অফিসে কাঁদতেও দেখেছে বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু বাইরে থেকে জেনারেল নিয়াজি নিজেকে শক্ত হিসেবে উপস্থাপন করছিলেন।
১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর। জেনারেল এ কে নিয়াজি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। একই সঙ্গে ঢাকা বিমানবন্দরে বিমানবিধ্বংসী যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছিল সেটিও পরিদর্শন করেন তিনি। সেই সময় জেনারেল নিয়াজির সঙ্গে ছিলেন সিদ্দিক সালিক।
মি. নিয়াজি যখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল পরিদর্শনে গেলেন তখন ছয়-সাতজন নার্স এসে জেনারেল নিয়াজিকে তাদের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরেন।
ডিসেম্বর মাসের তিন তারিখ থেকেই ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে একত্রিত হয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে জোরালো আক্রমণ শুরু হয়। নার্সরা জেনারেল নিয়াজিকে বললেন যে, তারা মুক্তিবাহিনীর ভয়ে ভীত। তিনি নার্সদের আশ্বস্ত করলেন, বড় ধরনের বিদেশি সাহায্য আসছে এবং চিন্তার কোনো কারণ নেই।
জেনারেল নিয়াজি নার্সদের বললেন, তাদের কোনোভাবেই মুক্তিবাহিনীর হাতে পড়তে দেওয়া হবে না। যদি সাহায্য নাও আসে, তাহলে তোমরা মুক্তিবাহিনীর হাতে পড়ার আগে আমরাই তোমাদের হত্যা করব।
এ কথা বলে সেখান থেকে বিদায় নিলেন মি. নিয়াজি। সেই ঘটনা সিদ্দিক সালিক তার বইয়ে বর্ণনা করেছেন।
সেখান থেকে ফিরে আসার সময় তেজগাঁও বিমানবন্দরের সামনে থামেন জেনারেল নিয়াজি। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক তাকে কিছু প্রশ্ন করলেন। এর মধ্যে একটি ছিল- ভারতীয় বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য আপনার কি যথেষ্ট শক্তি আছে? জবাবে মি. নিয়াজি বলেন, আমার মৃতদেহের ওপর দিয়ে ঢাকার পতন হবে। আমার বুকের ওপর দিয়ে তাদের ট্যাঙ্ক চালাতে হবে।
যুদ্ধের সময় ঢাকায় অবস্থানরত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লেখা থেকে বোঝা যায় যে, ১২ ডিসেম্বর পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তারা যুদ্ধের বিষয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। ঢাকায় অবস্থানরত পাকিস্তানি জেনারেলরা যুদ্ধবিরতির উপায় খুঁজছিলেন।
রাও ফরমান আলী লিখেছেন, ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথমবারের মতো মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় বাহিনীর কামানের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। ১৩ ডিসেম্বর ভারতীয় বিমান বাহিনী পূর্ব পাকিস্তান গভর্নর হাউসে আক্রমণ চালিয়েছিল। সেই হামলার পর গভর্নর পদত্যাগ করলেন।
যুদ্ধবিরতির আশা নিয়ে ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে জেনারেল নিয়াজি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেলের কাছে যান। সঙ্গে ছিলেন রাও ফরমান আলী।
তখন জেনালের নিয়াজির সঙ্গে মার্কিন কনসাল জেনারেলের যে কথাবার্তা হয়েছিল সেটি রাও ফরমান আলী তার বইয়ে তুলে ধরে লিখেছেন- নিয়াজি একজন বন্ধু হিসেবে তার সাহায্য চাইলেন। জবাবে কনসাল জেনারেল বললেন, আপনারা কেন যুদ্ধ শুরু করেছিলেন? ইউএস আপনাদের সাহায্য করতে পারবে না। আমি বড়জোর যা করতে পারি তা হলো, আপনার বার্তাটি ভারতীয়দের কাছে পৌঁছে দিতে পারি। আমি বার্তা প্রেরকের কাজ করব, যোগাযোগকারী নয়। আমাদের বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে এবং যেখানে যার কাছে বার্তা পাঠাতে চান আপনি পাঠাতে পারেন।
৩ ডিসেম্বর থেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পূর্ব পাকিস্তান নিয়ে তার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। সিদ্দিক সালিক জানতে পেরেছেন যে, ৩ ডিসেম্বরের পর থেকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আর অফিসে আসেননি। এ পর্যায়ে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আমি কী করতে পারি?
যুদ্ধবিরতির জন্য ভারতীয়দের কাছে যে বার্তা পাঠানো হয়েছিল সেটির জবাব এসেছিল ১৫ ডিসেম্বর। ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল স্যাম মানেকশ সেটির উত্তর দিয়েছিলেন- যুদ্ধবিরতি তখনই কার্যকর হবে যখন পাকিস্তানি বাহিনী অগ্রবর্তী ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করবে।
মানেকশর এ বার্তা রাওয়ালপিণ্ডিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান রাওয়ালপিণ্ডি থেকে পূর্ব পাকিস্তানে জানিয়ে দেন যে জেনারেল মানেকশর প্রস্তাব মেনে নিতে।
পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এর পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ নিয়ে গিয়েছিল বিজয়ের সেই মুহূর্তের দিকে।
সৌজন্যেঃ দৈনিক সমকাল