2658
Published on ডিসেম্বর 8, 2019সম্মুখযুদ্ধ শুরুর তৃতীয় দিনেই স্বাধীন বাংলার আকাশ শত্রুমুক্ত হতে শুরু করে। যৌথবাহিনীর কাছে বিপর্যস্ত হতে থাকায় জেনারেল নিয়াজি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সীমান্ত অঞ্চল ছেড়ে শহরভিত্তিক স্ট্রং পয়েন্ট তৈরির নির্দেশ দেন। একাত্তরের এই দিনে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় সব বিমান। ভারতীয় জঙ্গিবিমানগুলো সারাদিন ধরে অবাধে আকাশে উড়ে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়, অকেজো করে দেয় বিমানবন্দরগুলো।
ভারতের বিমান বাহিনীর হিসাব মতে ১২ ঘণ্টায় ২৩২ বারে তেজগাঁও এবং কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটিতে পঞ্চাশ টনের মতো বোমা ফেলা হয়। পাকিস্তানি বাহিনীর কনভয়ের ওপর ভারতীয় জঙ্গিবিমানগুলো আক্রমণ চালায়। এতে পাকিস্তানি বাহিনীর ৯০টি গাড়ি ধ্বংস হয়। এছাড়াও পাকিস্তানি বাহিনীর সৈন্যবোঝাই কয়েকটা লঞ্চ এবং স্টিমার ধ্বংস হয়।
সাবমেরিন ‘পিএন গাজী’ ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর গর্বের বস্তু। বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনীর যৌথকমান্ডের সফল আক্রমণে তা ধ্বংস হয়। সাবমেরিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তান ধার হিসেবে পেয়েছিল।
একাত্তরের এই দিনে নৌবাহিনীর যৌথ কমান্ড চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের সকল নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জাহাজগুলোকে বন্দর ত্যাগের পরামর্শ দেয়। তারা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতেও তাদের অপারগতা প্রকাশ করে। বিশ্বের সব দেশ বুঝতে পারে বাংলাদেশের বন্দরগুলো রক্ষা করার ক্ষমতা আর পাকিস্তানি বাহিনীর নেই। এদিকে লে. আরেফিনের নেতৃত্বে চালনা নৌবন্দরে বড়ো ধরনের আক্রমণ পরিচালিত হয়। এই যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীসহ সকল সৈন্য বন্দর ত্যাগ করে। কোস্টাল গানসহ প্রচুর গোলাবারুদ হস্তগত হয় মুক্তিবাহিনীর।
সৌজন্যেঃ দৈনিক ইত্তেফাক