মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “যার নেতৃত্বে এই ভাষা আন্দোলনের শুরু, আর ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। “ভাষা আন্দোলন থেকেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। এবং তারই নেতত্বে আমরা বিজয় অর্জন করি, স্বাধীন রাষ্ট্র প...
অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাবঃ করোনাকালে ফেসবুক লাইভ আর ভার্চুয়াল টিভি টকশোগুলোর কল্যাণে বলার আর তার চেয়ে বেশি জানার সুযোগ হয় অনেক। এমনি এক টকশোর কদিন আগের শিরোনাম ‘ভাষার মাসে ষড়যন্ত্র’। একুশ নিয়ে লিখতে বসে হঠাৎই মাথায় খেলল টকশোর শিরোনামটি। এই একুশেই আমার আরেকটি লেখায় আমি লিখেছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের এই যে পথ চলা এর সূচনাটা এ...
আবদুল মান্নানঃ একসময় প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস বা রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে এই দেশের ছাত্র-জনতা পালন করত। দিনটি বেশ ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে পালিত হতো। তেমনটি আজ আর দেখা যায় না। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছিল, সেই রাষ্ট্রটি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। বিশ্বে এমন ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত আর কোনো রা...
তোফায়েল আহমেদঃ স্বাধীন বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ প্রতিবছর অমর একুশের শহীদ দিবসে মহান ভাষা আন্দোলনের সূর্যসন্তানদের শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করে। ১৯৫২-এর ভাষা শহীদদের পবিত্র রক্তস্রোতের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের গৌরবগাথা। ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলার ছাত্রসমাজ আত্মদান করে মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। রক্তরাঙা অমর একুশে ফেব্রুয়ারি রক্ত...
এম. নজরুল ইসলামঃ বাঙালির মেরুদণ্ড মাতৃভাষা বাংলা-এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পাকি¯ানের জš§ থেকেই বাঙালিরা ছিল সোচ্চার। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন করাচীতে শুরু হলে পূর্ব বাংলার প্রতিনিধি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষার ওপর একটি সংশোধনী প্রস্তাবে বলেন, উর্দু এবং ইংরেজীর সঙ্গে বাংলাকেও গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হিসেবে ব্যবহার ক...
শেখ রেহানাঃ ১৯৬৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে আমার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৬-দফা দাবি পেশ করেন। ঢাকায় ফিরে ৬-দফার সমর্থনে জনমত তৈরি করতে সারা দেশে তিনি সভা-সমাবেশ করা শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যে ৬-দফার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়। স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ভীত হয়ে পড়েন। শেখ মুজিবকে রুখতে হবে। তিন মাসের মধ্যে বাবাকে আট বার গ্রেফতার করা হলো। আমার &lsquo...
হামিদ কায়সারঃ বাংলার মাটি বাংলার জল বাংলার প্রকৃতি রোদ হাওয়া তার আপন প্রয়োজনেই জন্ম দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, কেননা তাঁর জন্ম না হলে বাংলা মা খুঁজে পেত না নিজের সার্বভৌম ঠিকানা। হ্যা, শেখ মুজিবুর নামের প্রচণ্ড আবেগের বিস্ফোরণেই যেমন অভ্যুদয় হয়েছিল বাংলাদেশ নামে বাঙালির একমাত্র স্বাধীন রাষ্ট্রের, তেমনই এ দেশের প্রকৃতিও যেন নিজ হাতে গোপালগঞ্জের এক সাধ...
মো সাখাওয়াত হোসেনঃ সবচেয়ে বিশাল ও ভারি যে লাশটি বাংলাদেশ নিজের বুকের কবরে বয়ে চলেছে, সেটি মুজিবের লাশ'—হুমায়ুন আজাদ এ একটি উক্তির মাধ্যমেই শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের প্রগাঢ়তা এবং ব্যাপকতা উল্লেখ করা যায়। বিশ্বের ইতিহাসে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড অসংখ্যবার ঘটেছে, ভবিষ্যতেও হয়তবা ঘটতে পারে কিন্তু শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের প্রভাব সারা বিশ্বের মেহনতি এবং শোষিত মানুষের...
অঞ্জন রায়: চর্যাপদের কবিদের দ্রোহ থেকে কৈবর্ত্য বিদ্রোহ। ফকির বিদ্রোহ থেকে ফরায়েজী আন্দোলন। বাঁশের কেল্লা নিয়ে রুখে দাঁড়ানো তিতুমীর। কলের বোমা হাতে ক্ষুদিরাম বসু। চট্টলার সেনাপতি সূর্যসেন, প্রীতিলতা। ব্যারাকপুরে ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো মঙ্গল পান্ডে। বিনয়-বাদল-দিনেশ থেকে সুভাষ চন্দ্র বসু। রবি ঠাকুরের ছুঁড়ে ফেলা নাইট পদক আর নজরুলের দ্রোহ। সব সাহসের ...
সন্তোষ গুপ্তঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবেকে হত্যা করা হয়েছে আজ থেকে বিশ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট। তাঁকে হত্যা যারা করেছে সেদিন তাদের দেয়া যুক্তি আর কিছু রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিকদের দেয়া বিবৃতি ও সভা-সমিতিতে তাদের ভাষণের আশ্বর্য মিল দেখে আমাদের মনে কি কখনাে এ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে যে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের মানসিক সহযােগী আমাদের অনেকের মধ্যে রয়ে গেছে। আর এ...
মোনায়েম সরকার তত্ত্বগতভাবে সেকুলারিজম-এর ধারণা কয়েক শতাব্দী ধরে পাশ্চাত্যে এবং তারপরে প্রাচ্যে বিকাশ লাভ করেছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশে, বিশেষত বাংলাদেশে বাস্তব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসাবে সেকুলারিজম-এর স্বীকৃতি বঙ্গবন্ধুরই অবদান। শেখ মুজিব বাস্তব ঘটনাবলি অবলোকন করে বুঝতে পেরেছিলেন যে, সাম্প্রদায়িকতা, জাতিবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, গণহত্যা, যুদ্ধবিগ্রহ মানুষে...
মোহাম্মদ হাননান: বাঙালির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু এদেশের স্রষ্টাই ছিলেন না, দেশটির নামও তিনি রেখেছিলেন। আর এই জন্যই তিনি 'জাতির পিতা শিরোনামে অভিষিক্ত হন। শত সংগ্রাম, জেল, জুলুম, ফাসির কাষ্ঠ- সবকিছু তুচ্ছ করে তিনি বাঙালি জাতির শত বছরের স্বপ্নের দেশ 'বাংলাদেশ’-কে সত্যে পরিণত করে তোলেন। অনেক পিতা-মাতা তাদের সন্তান জন্ম হওয়ার আগেই সন্তানের নাম...
কবীর চৌধুরী: জাতির পিতা, 'ফাদার অব দি নেশান', একটি বহুল প্রচলিত শব্দগুচ্ছ। জাতি বলতে সেখানে অবশ্য স্বাধীন সার্বভৌম জাতি রাষ্ট্র বোঝায়, নৃতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো জনগোষ্ঠীর প্রতি ইঙ্গিত করে না। আমরা এ কথাও জানি যে, কোনো একক ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে একটি জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দেন না বা প্রতিষ্ঠা করেন না, কেউই শুধু তার একক চেষ্টায় পরাধীনতা বা ঔপনিবেশিকতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে ব...
বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম একটি স্তম্ভ হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। বিভিন্ন সময় এই 'ধর্মনিরপেক্ষতা' শব্দটিকে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়। অনেকের ধারণা, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মের অনুপস্থিতি, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা, এরকম অপপ্রচার বিভিন্ন সময় ছড়ানো হয়েছে। কিন্তু আসলেই কী তাই? নাকি ধর্মনিরপেক্ষতা মানে অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নৈরাজ্য সৃষ্টির পথ বন্ধ ক...
মিজানুর রহমান খানঃ শুধু যুক্তরাষ্ট্রই যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছিল, তা নয়। রেখেছিল ব্রিটেনও। ১৯৭১ সালের জানুয়ারির গােড়ায় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে বেরিয়ে লন্ডন হয়ে দেশে ফেরেন। তখন তাঁকে সরকারপ্রধানের প্রটোকল দেওয়া হয়েছিল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ ও তাঁর মন্ত্রিসভার মধ্যে এ নিয়ে কোনাে দ্বিধা ছিল না। কিন্তু ...
মেজর জেড এ খান (পরে ব্রিগেডিয়ার) ১৯৭০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩ কমান্ডাে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবে যােগ দেন। এই ব্যাটালিয়নের অবস্থান ছিল কুমিল্লায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করেন। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের এ অংশটুকু নেওয়া হয়েছে জেড এ খানের দ্য ওয়ে ইট ওয়াজ (ডাইনাভিস প্রাইভেট লিমিটেড, করাচি, ১৯৯৮) থ...
মােহাম্মদ শাহজাহান: ২২ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। গণআন্দোলনের চাপে ৫১ বছর আগে ১৯৬৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব কান কুখ্যাত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবসহ সব অভিযুক্তকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ওই মামলার এক নম্বর আসামি। আইয়ুব...
অজয় দাশগুপ্ত: জীবন নিবেদিত তাঁর বাংলার মানুষের মুক্তির সংগ্রামে। দাঁড়াবার ফুসরৎ যে নেই। মানুষকে পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তুলতে ছুটে চলেছেন উল্কার মত, এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে, শহর-বন্দর-গ্রামে। গোয়েন্দারা সর্বক্ষণ লেগে রয়েছে তাঁর পেছনে। আর জেলে থাকার সময়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সময়েও সর্বক্ষণ গোয়েন্দারা বসে থাকে। ডায়েরীতে দুঃখ করে তিনি লিখেছেন, ...
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। নয় মাসের যুদ্ধের কথা বলা হলেও বাঙালি ইতিহাসের পাতায় আবহমানকাল ধরেই পরাধীন জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। পাকিস্তানের দীর্ঘ চব্বিশ বছরের শাসন ও শোষণের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাঙালি স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনে। স্বাধীনতার এই সূর্যকে ছিনিয়ে আনতে বাঙালিকে হাজার বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ইতিহাসের নানা বাকে নানা ব্যক্তি ...
৯ মাস যুদ্ধের পর দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের অবসান ঘটলো। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জিত হলো। পাকিস্তানিদের বৈষম্য, শোষণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তি পেলো সাত কোটি মানুষ। প্রায় দুই যুগের দাসত্বের অবসান ঘটলো। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত এক দেশে মানুষের ঘরে ঘরে স্বাধীনতার অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুফল পৌঁছানোর কোনো উপায় ছিল না। তাই স্বাধীন দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি ও জা...