১৬ ডিসেম্বর, রক্তস্নাত বিজয়ের ৫২তম বার্ষিকী। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মাথা উচু করার দিন। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রাম করে বহু প্রাণ আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এদিনে বীর বাঙালি ছিনিয়ে আনে বিজয়ের লাল সূর্য। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের মুক্তিকামী মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের পর এদিন আত্মসমর্পণ করে মুক্তিকামী মানুষের কাছে। আর পাকিস্তানি বাহিনীর এই আত্মসমর্পণের...
জাহাঙ্গীর আলম সরকার: নীলফামারী জেলার সদর থানায় খরখরিয়া নদীর অবস্থান। বাংলাদেশের উত্তর গ্রীষ্ম মণ্ডলে অর্থাৎ প্রায় কর্কটক্রান্তি রেখা বরাবর অবস্থিত নীলফামারী জেলা। ১৯৭১ সালে ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সাথে এই খরখরিয়ার তীরেই ঘটেছিলো এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। ইছামতী যুদ্ধের দায়িত্ব ছিলো মিত্রবাহিনীর ৭১ মাউন্টেন ব্রিগেডের অধীনে থাকা ২১ রাজপুত রাইফেলসের ওপর।...
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ৩০ লাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সাক্ষর এবারের বিজয়ের মাস নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালিত হবে। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার...
দীর্ঘ দুই যুগের মুক্তিসংগ্রাম এবং স্বাধীনতা-যুদ্ধের মাধ্যমে হাজার বছরের শৃঙ্খলমুক্তি ঘটে বাঙালি জাতির। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মোহনী নেতৃত্বে বীরের জাতি হিসেবে বিশ্বমানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। সেই দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই নিয়মিত মহান মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস বিকৃতি এবং স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি ও ভীতি সৃষ্টি করে চলেছে বিএন...
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাঙালি জাতিরাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পৈশাচিকতা শুরু করার প্রারম্ভেই স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এর আগে পুরো মার্চজুড়ে একাধিক জনসভা ও নির্দেশনা দিয়ে সারা দেশের মুক্তিকামী মানুষকে সশস্ত্র যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেন তিনি। যার ফলে, ২৬ মার্চ প্র...
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু'র নেতৃত্বে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ রাত ০০ঃ০১ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত ৩০ লক্ষ শহীদ ও দু লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম এবং জাতীয় চারনেতা...
অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাবঃ বাঙালীর জাতীয় জীবনে সবচেয়ে গৌরবের মাসটি নিঃসন্দেহে ডিসেম্বর। কারণ ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টিয়ে নবেম্বর যখন পা দেয় ডিসেম্বরে, তখনই গোটা ক্যালেন্ডারটা শুধুই যেন লাল-সবুজ। এই ডিসেম্বরেই আজ থেকে ৪৮ বছর আগে হাজার বছরের পরাধীনতার শিকল ভেঙ্গে পৃথিবীর বুকে অভ্যুদয় ঘটেছিল একটি নতুন জাতি রাষ্ট্রের। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাঙালীরা পেয়েছিল একটি ...
স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালের সেই দিনের পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের কথা এখনও ভুলতে পারেনি বিনোদবাড়ি গ্রামের মানুষ। সেই দিনের কথা মনে হলে এখনও আঁতকে ওঠেন তারা। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৮ বছরেও সেই দিনের ক্ষত শুকায়নি তাদের। ওই সময় একই পরিবারের আটজনসহ তিন গ্রামের ২৬৫ জনকে হত্যা করা হয় একই দিনে। মায়ের কোলে থাকা দুধের শিশুও রক্ষা পায়নি তাদের নির্মম হত্যাকাণ্ড ...
সম্মুখযুদ্ধ শুরুর তৃতীয় দিনেই স্বাধীন বাংলার আকাশ শত্রুমুক্ত হতে শুরু করে। যৌথবাহিনীর কাছে বিপর্যস্ত হতে থাকায় জেনারেল নিয়াজি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সীমান্ত অঞ্চল ছেড়ে শহরভিত্তিক স্ট্রং পয়েন্ট তৈরির নির্দেশ দেন। একাত্তরের এই দিনে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় সব বিমান। ভারতীয় জঙ্গিবিমানগুলো সারাদিন ধরে অবাধে আকাশে উড়ে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে প্...
‘১৯৭১ সালের মার্চ মাস। আমি ইপিআরের সৈনিক। ট্রেনিংয়ের জন্য যশোর সেক্টর হেডকোয়ার্টারে অবস্থান করছি। ২২ মার্চ যশোর ছাত্রলীগ অফিসে গিয়ে একটি বাংলাদেশি পতাকা সংগ্রহ করি। রাতে আমার গার্ড কমান্ডার কাজী তৈয়বুর রহমানকে পতাকা আনার কথা বলি। তিনি রেখে দিতে বলেন। পরদিন সকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে যশোর ইপিআর হেডকোয়ার্টারের সামনে অবস্থান নেন। আমি আমার গার্ড কমান্ডার...
‘কানাইঘাটে পাক সেনাদের সঙ্গে আমাদের ২৫ নভেম্বরের ভয়াবহ যুদ্ধে একজন মেজরসহ ৮৮ জন হানাদার নিহত হয়। আটক করি ২৬ জনকে। অন্যরা পালিয়ে যায়। ভয়াবহ ওই যুদ্ধে আমরাও হারিয়েছিলাম ছয়জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ১১ জন মিত্রবাহিনীর সৈনিককে। ওই যুদ্ধের পর পাক হানাদার বাহিনী আর শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। ওই যুদ্ধের কথা মনে হলে এখনো শরীরের রক্ত টগবগিয়ে ওঠে।’ যুদ্ধদিনের স্...
১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর দিনটি ছিল শনিবার। এই দিন বাংলাদেশের সকল রণক্ষেত্রে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকায় হানাদার বাহিনী সর্বত্র পিছু হটছিল। পাকিস্তানী বিমান বাহিনী ক্রমশ পঙ্গু হয়ে পড়ছিল। সীমান্ত শহর দর্শনা সম্মিলিত বাহিনীর দখলে চলে আসে। এদিকে ভারতীয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী বাংলাদেশে দখলদার বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। চতুর্দিক থেকে ভারতীয় ...
মুক্তিযুদ্ধের এই দিন থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের পথে মুক্তিযোদ্ধাদের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অনমনীয়, তেজি অগ্রগতির কাছে সমস্ত বাধাই তখন তুচ্ছ। একাত্তরের ৪ ডিসেম্বর থেকেই বিভিন্ন অঞ্চল মুক্ত হতে থাকে। সে খবর ছড়িয়ে পড়ে আকাশে, বাতাসে, সর্বত্র। সেই বিজয়ের বার্তা যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাদের করে তোলে আরো দুর্বার, অপ্রতিরোধ্য। ডিসেম্বরে মুক্তিবাহিনী যখন ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে...
স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনঃ তখন ডিসেম্বর মাস শুরু হয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রমাগত আক্রমণে সংকুচিত হয়ে ঢাকার দিকে ঘাঁটি গাড়ছে পাকিস্তানিরা। সেই সময় ঢাকায় একটি বড় ধরনের অপারেশনের পরিকল্পনা চলছিল। আমেরিকান ইনফরমেশন সেন্টার গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ওটা ছিল ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর একটি। আমি তখন বুয়েটে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। গোপীবাগের ভাড়া বা...
একাত্তরের মার্চে সামরিক পোশাক ছেড়ে ছেঁড়া লুঙ্গি পরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন আবদুল জলিল খান। তাঁকে রাখা হয়েছিল এমন একটি ক্যাম্পে যেখানে বাঙালি নারীদের পাশবিক নির্যাতন করা হতো। একপর্যায়ে তিনজন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করে জলিল ওই নারীদের নিয়ে পালিয়ে আসেন। মানিকগঞ্জের বায়রা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জলিল খান জানান, ১৯৬৯ সালে তিনি যোগ ...
‘গলাকাটির যুদ্ধের কথা মনে অইলে এহনও শরীলে কাঁটা দিয়া ওঠে। গুলি করতে করতে আমার হাত আগুনে পোড়ার মতো হইয়া গেছিল। এসএলআরের ব্যারেল লাল টুকটুকা অইয়া গেছিল। কোনো কিছুই তহন খেয়াল আছিল না। নেশা চাপছিল, পাকিদের মারতে হবে। পাকিরাও গুলি ছুড়ছিল। সামনাসামনি দুই পক্ষে গোলাগুলি চলতে থাকে। মুহূর্তেই ১২ সেনা খতম। পাকি সেনারা তখন পিছু হটে যায়। আমরা ক্যাম্পে ফিরে ...