1967
Published on মে 27, 2024জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের হত্যা-পরবর্তী এক ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ে, সব হারানোর বেদনা চেপে- জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন বলেই আজ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারছে বাঙালি জাতি। উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সীমাহীন হিংস্রতা দূরীভূত হয়ে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে প্রতিটি মানুষের, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আইনের শাসন। দারিদ্র্য-ক্ষুধা-মন্দার নিদারুণ কষ্টকর পথ অতিক্রম করে আজ সচ্ছল হয়ে উঠেছে আপামর জনগণ। উগ্রবাদী চক্র এবং স্বৈরশাসকদের অপশাসন ও তীব্র শোষণে একসময় অনাহারে-অর্ধাহারে ছেঁড়া কাপড় পরে বেঁচে থাকা দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ আজ পেয়েছেন অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ জীবন, তারা নিজের চোখে দেখে যাচ্ছেন নতুনপ্রজন্মের জন্য তৈরি হওয়া আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের এই স্বপ্নীল পরিবর্তন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে বর্বর ঘাতকেরা। সেসময় স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে ইউরোপে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে দেশবাসীকে জিম্মি করে রাখে উগ্রবাদী চক্র এবং স্বৈরশাসকেরা। তাদের নিপীড়নে আপামর বাঙালির জীবন যখন ওষ্ঠাগত, তখন দেশবাসীকে মুক্ত করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এদিন কোটি মানুষের আনন্দঅশ্রুতে সিক্ত হয়ে স্বদেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। আর একারণেই পরবর্তীতে পতন হয় স্বৈরাচারের, ব্যর্থ হয় উগ্রবাদী চক্র, ফিরে আসে গণতন্ত্র, শুরু হয় উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ, ভাগ্য বদলাতে থাকে সাধারণ মানুষের। যার ধারাবাহিকতাতে বাংলাদেশ উন্নীত হয়েছে মধ্যম আয়ের দেশে, উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অর্জন করে আমরা আজ ধাবমান উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নাম লেখানোর পথে।
সেদিন দীর্ঘ ছয় বছরের নির্বাসন ভেঙে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশের এই স্বপ্নময় অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে। এক যুগ আগেও মানুষের কাছে যা কল্পনাপ্রসূত মনে হয়েছে, সেসব বাস্তবে পরিণত করে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অগ্রগতির এই অবিশ্বাস্য সাফল্যের পেছনে কোনো জাদুমন্ত্র নেই, যা আছে তা হলো বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শনকে বাস্তবায়নের জন্য সুচিন্তিত কর্মপরিকল্পনার প্রণয়ন এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর দীর্ঘ একদশক ধরে দেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে ঘুরে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগকে সংগঠিক করেন শেখ হাসিনা, জাতীয় মুক্তির জন্য সংগঠিক করে তোলেন সর্বোস্তরের মানুষকে। গণসংযোগে গিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সমস্যাগুলো পর্যন্ত চিহ্নিত করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছুটে গিয়ে তিনি দেখতে পান- পর্যাপ্ত রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ নেই, এমনকি স্থানীয় পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য সহজ কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থাও নেই। দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই অজস্র মানুষের মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই, অধিকাংশ মানুষের জন্য নেই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য-শিক্ষার সুবিধা।
দেশের গণমানুষের এই মৌলিক সমস্যাগুলোকে একান্তই নিজের সমস্যা মনে করে, তা সমাধানের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা। একারণেই স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায় থেকে নতুন করে গোছাতে শুরু করেন তিনি। দলকে পুনর্গঠিত করার মাধ্যমে উগ্রবাদী ও স্বৈরাচারের হিংস্র থাবায় আক্রান্ত দেশকে পুনর্গঠনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ছক আঁকেন। যার ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গেছে এক নতুন বাংলাদেশ এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে আজকের ডিজিটাল প্রজন্ম, যাদের হাত ধরেই স্মার্ট রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বীর বাঙালির প্রিয় বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের সম্পর্ক কেন এতো তাৎপর্যপূর্ণ:
দীর্ঘ দুই যুগ ধরে চলমান মুক্তি সংগ্রামকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপান্তর করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বিশ্বের বুকে চূড়ান্তভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। এরপর সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেন তিনি। কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির বিকাশের পাশাপাশি শিল্প-বিপ্লব, তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষাদানের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নতুন প্রজন্ম তৈরি, অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যহীন সমাজ গঠন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশকে একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী ছাড়া বাকি সবাইকে নিয়ে দেশগঠনে মন দেন বঙ্গবন্ধু।
কিন্তু সেই কর্মযজ্ঞ অর্ধসমাপ্ত অবস্থাতেই, মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত আন্তর্জাতিক ও দেশীয় অপশক্তির চক্রটি তাকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে মাঝপথে থমকে দেয়। ফলে মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর উগ্রবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে স্বৈরাচারেরা। দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামের মূলমন্ত্র, বাংলাদেশের জাতীয় সংবিধানের মূলনীতি, বাঙালি জাতির হাজার বছরের সম্প্রীতির সংস্কৃতির চেতনার মূলে কুঠারাঘাত করে জামায়াতসহ স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলগুলো।
এছাড়া উগ্রবাদী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান কর্তৃক অবৈধভাবে বিএনপি গঠনের পরপরই দলটি মুক্তিযুদ্ধের জাতীয় স্লোগানকে নিষিদ্ধ করে দেশে, পতাকার রঙ বদলে দেওয়ার অপচেষ্টা করে, ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বোকা বানায় দেশের সাধারণ জনগণকে, দেশে চালু করে ধর্মব্যবসা, জঙ্গিবাদ এবং সহিংসতার রাজনীতি। এই অপশক্তির সন্ত্রাস ও কালোবাজারির কাছে অসহায় হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। ধসে পড়ে দেশের অর্থনীতি ও পঙ্গু হয়ে যায় জাতীয় সংস্কৃতি। রাজনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মী।
স্বৈরাচার ও উগ্রবাদীদের সীমাহীন সন্ত্রাস, দুর্নীতি, লুটপাট ও নির্যাতনে অস্থির হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ। দ্বিমুখী ষড়যন্ত্রে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এরকম পরিস্থিতিতে নিজের জীবনকে বিপন্ন করে পিতা মুজিবের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে ১৯৮১ সালের ১৭মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই দলকে পুনর্জীবিত করতে দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছুটতে শুরু করেন তিনি। শুরু হয় নতুন সংগ্রাম।
নব্বইয়ের দশকজুড়ে সারাদেশ সফর করে একদিকে আওয়ামী লীগকে তৃণমূল থেকে যেমন গুছিয়ে তোলেন, তেমনি দেশের প্রান্তিক মানুষের জীবনমান ও সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেন শেখ হাসিনা। ফলে ছিন্নভিন্ন আওয়ামী লীগকে যখন আপত্য-মায়ায় মেখে আবারো গড়ে তুলছিলেন, ঠিক তখনই বাংলাদেশ পুনর্গঠনের প্রাথমিক পরিকল্পনাও সম্পন্ন হয়ে যায়। এরপর শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যতোই গুছিয়ে উঠেছে, সন্ত্রাস-লুটেরা ও উগ্রবাদীদের কড়াল গ্রাস থেকে মুক্ত হয়ে ততোই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। একারণে বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগের যাত্রাপথ অনেকটা এক ও অভিন্ন।
বঙ্গবন্ধু যেমন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে, তেমনি শেখ হাসিনাও আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুনর্নির্মাণের পটভূমি রচনা করেন স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর। একারণে শেখ হাসিনার এই প্রত্যাবর্তন অনেকটা বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতীক। বাংলাদেশের জন্য এই দিনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। উগ্রবাদী ও লুটপাটকারীদের থাবায় পিষ্ট ও বিধ্বস্ত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি আবারো নবজীবন পেয়ে নবউদ্যমে অগ্রযাত্রার পথে ধাবিত হয়েছে শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও মানবিক নেতৃত্বের কারণে।
কিন্তু শেখ হাসিনা যাতে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন বান্তবায়ন করে দেশ ও মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করতে না পারেন, এজন্য তাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০০১ সালের ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে ক্ষমতা দখলের পর বিএনপি-জামায়াত সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রকাশ্যে শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। কিন্তু রাখে আল্লাহ, মারে কে! অঙ্গহানি হলেও প্রাণে বেঁচে যান তিনি। এরপর শেখ হাসিনাকে নির্বাচনের বাইরে রেখে দলীয় লোকদের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়কের সরকার সাজিয়ে আবারো অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা করেন খালেদা জিয়া। ফলে সৃষ্টি হয় এক-এগারোর পরিস্থিতি। এরপর গ্রেনেড হামলায় আহত কানের ফলোআপ চিকিৎসা নিতে ২০০৭ সালের ১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে গেলে শেখ হাসিনাকে নির্বাসন দেওয়ার অপচেষ্টা চালায় বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত এক-এগারোর কুশীলবরা।
কিন্তু সব হুমকি ও ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে ২০০৭ সালের ৭ মে দেশে ফিরে আসেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান তিনি। ফলে ভীত হয়র ১৬ জুলাই তাকে একটি সাজানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। মিথ্যা মামলায় বঙ্গবন্ধুকন্যাকে জেলে ঢোকানোর পর মোট ১৩টি মামলা সাজানো হয় তার নামে। ৩৩১ দিন জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় বিচলিত না হয়ে, বরং ওই সময়জুড়ে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প তৈরি করেন তিনি। তীব্র জনদাবি এবং শেখ হাসিনার পর্বতপ্রমাণ ব্যক্তিত্ব্যের কাছে হার মেনে, অবশেষে ২০০৮ সালের ১১ জুন তাকে মুক্তি দিয়ে সুধাসদনের বাসায় পৌঁছে দিতে বাধ্য হয় এক-এগারোর কুশীলবরা। এরপরেই 'দিন বদলের সনদ' ঘোষণা করেন তিনি। বাংলাদেশকে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের জন্য সব মানবিক সুবিধা নিশ্চিতের ঘোষণা দেওয়া হয় এই ইশতেহারে। এভাবেই শেখ হাসিনা বারবার ফিরে এসেছেন গণমানুষের মাঝে, প্রতিবারই নতুন করে আশার স্বপ্ন নিয়ে এসেছেন গণমানুষের জন্য।
বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনার জন্যই আজ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো মৌলিক সঙ্কটের দিন থেকে উত্তরণ হয়ে, মানুষ এখন অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছে। যার প্রভাবে ব্যক্তি মানুষের পাশাপাশি স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে রাষ্ট্র হিসেবে স্বয়ং বাংলাদেশ।
এক যুগ আগের তুলনায় এখন মানুষের চাহিদার ধরণ ও চিন্তাধারা যেমন আমূল বদলে গেছে, তেমনি অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণে দেশের বাহ্যিক অবস্থার পরিবর্তনও চোখে পড়ার মতো। যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে আমূল বিপ্লবের ফলে সারাদেশে ইন্টারনেটের বিস্তৃতির কারণে সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের খাত, সর্বোস্তরের মানুষ এসেছে অর্থনৈতিক অন্তর্ভূক্তির মধ্যে। ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে মাত্র এক যুগের ব্যবধানে একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্র থেকে ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়ে বিশ্বজুড়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। এসবই হয়েছে একজন শেখ হাসিনা আছেন বলে।
শেখ হাসিনা ফিরেছেন বলেই ফিরে এসেছে গণতন্ত্র, অনটন শেষে বাঙালি জাতি পেয়েছে শক্তিশালী মানবিক রাষ্ট্র:
স্বাধীনতার সুফল গণমানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার অদম্য প্রচেষ্টাকে থামিয়ে দিতে নব্বইয়ের দশকজুড়ে স্বৈরাচার এরশাদের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় মদতে অজস্রবার তাকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়। কিন্তু বাঙালি জাতির মুক্তি এবং বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতাকে জনতার কাছে অর্থবহ করে তোলার জন্য সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যান শেখ হাসিনা। শুধু তার অনড় অবস্থানের কারণেই একপর্যায়ে স্বৈরাচারের পতন হয় এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসে।
এমনকি অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র এবং বিএনপি-জামায়াত উগ্রবাদী চক্রের ভোট-সন্ত্রাসের কারণে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে খুব সামান্য ভোটে অর্ধ-শতাধিক আসনে হেরে যায় আওয়ামী লীগ। এরপর স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি। কিন্তু বিরোধী দলের আসনে বসেও রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা পরিবর্তন ও সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর জন্য প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করেন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। অবশেষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজপথে আওয়ামী লীগের তীব্র দাবির মুখে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় বাংলাদেশে।
কিন্তু সরকারে থাকা বিএনপি-জামায়াত চক্র লুটপাটে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় দেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। ফলে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে গণমানুষের জন্য নিয়মিত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হয় শেখ হাসিনাকে। যার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সাল থেকে ভূমি ও গৃহহীন মানুষদের জন্য আশ্রয়ের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প চালু করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর কমপক্ষে ২ কোটি স্থানচ্যুত মানুষের পুনর্বাসন এবং ১৯৭২ সাল থেকে ছিন্নমূল মানুষের বাসস্থান নির্মাণের জন্য যে কর্মযজ্ঞ শুরু করেছিলেন, সেই ধারাবাহিকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১০ লক্ষাধিক পরিবারকে পুনর্বাসন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে পরিবারগুলোর নতুন প্রজন্মের সামনে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে কর্মমূখী জীবনে প্রবেশের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে নেতাকর্মীরা ১৯৯৮ সালের বন্যা মোকাবিলা থেকে শুরু করে জনতার পাশে থেকেছেন সবসময়, যা আজো চলমান। নিকট অতীতে করোনা মহামারিতেও গণমানুষের সেবা করতে গিয়ে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী অকাতরে প্রাণ দিয়েছেন। এমনকি মহামারির মধ্যে দেশের কৃষকরা যখন ধান কাটার লোক পাচ্ছিলেন না, তখনও শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশজুড়ে কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
রাজনীতিবিদদের সরাসরি জনবান্ধব কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে দেশের রাজনীতির প্রক্রিয়াকে মানবিক-মেরুকরণ করতে সমর্থ হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। সাধারণ নাগরিকদের অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় যেমন প্রশাসনিক কাঠামোকে ব্যবহার করেছে আওয়ামী লীগ সরকার, তেমনি মানবিক সঙ্কট নিরসনে দেশজুড়ে স্বেচ্ছাশ্রম এবং সেবামূলক কাজের মাধ্যমে দেশবাসীর পাশে থেকেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বৈশ্বিক সঙ্কট মোকাবিলায় কীভাবে রাজনৈতিক দলকে সরাসরি মানবিক কাজে লাগানো যায়, সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেকারণে সহিংসতা থেকে বেরিয়ে এসে মানবিক সমাজ গঠনের দিকে প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে নতুন প্রজন্মের রাজনীতিতে।
শেখ হাসিনা দেশে ফেরার কারণে আশাহত বাঙালির সঙ্কট দূর হয়ে সমৃদ্ধি ফিরে এসেছে:
শোষণমুক্ত সমাজ ও সমৃদ্ধ জীবনের আশায় ষাট ও সত্তরের দশকসহ দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে বাঙালি জাতি জীবন বাজি রেখে মুক্তি সংগ্রামে অংশ নিয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ মানুষকে অভাবমুক্ত জীবন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামাজিক সম্প্রীতি যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, সেই জীবন অর্জনের জন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামের পর সরাসরি স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে আমাদের পূর্বপুরুষরা। স্বাধীনতার পর জাতীয় মুক্তি অর্জনের সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য একের পর এক উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বহুমার্ত্রিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেও স্বাধীনতার সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ প্রায় সম্পন্ন করছিলেন বঙ্গবন্ধু।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শক্তি ও দেশের অভ্যন্তরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধিরা যখন বুঝতে পারলো, তাদের সব অপপ্রয়াস ছিন্ন করে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দেওয়ার যাবতীয় উদ্যোগ প্রায় গুছিয়ে এনেছেন বঙ্গবন্ধু, তখনই তারা তাকে সপরিবারের হত্যার মাধ্যমে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে এতিম করে ফেলে। এরপর উগ্রবাদী চক্র ও স্বৈরাচারেরা একজোট হয়ে দেশ পুনর্গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধুর গৃহীত যাবতীয় উদ্যোগকে বাতিল করে জঙ্গিবাদ, সহিংসতা ও সামাজিক বিভাজন সৃষ্টি করে দেশের মানুষের জীবন দূর্বিষহ করে তোলে।
কিন্তু পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন বাস্তবায়নে কাজ শুরু করলে, আবারো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত করে সমৃদ্ধ জীবনের স্বপ্ন দেখতে থাকে সাধারণ মানুষ। নব্বইয়ের দশকের পুরোটা সময় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিরোধী দলে থেকে দেশের মানুষের যেসব সমস্যা চিহ্নিত করেন শেখ হাসিনা, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর সেসব সঙ্কট দূর করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই দশক দরে রাষ্ট্রযন্ত্র খুবলে খাওয়া অপশক্তিদের বহুমুখী ষড়যন্ত্রে বারবার ধাক্কা খেতে হয় আওয়ামী লীগ সরকারকে। তারপরও ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও পার্বত্য অঞ্চলের দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসন করে আওয়ামী লীগ সরকার খাদ্য উৎপাদনে দেশকে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে তোলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর নতুন প্রজন্মের দাবি অনুসারে পশ্চিমাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ১৯৭১-এর খুনি-ধর্ষক-লুটপাটকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নিশ্চিত করেন শেখ হাসিনা।
এমনকি পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রের জান্তাদের নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৮ লক্ষাধিক মানুষকে মানবিকতার কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বিবাদমান জলসীমায় থাকা বিশাল অঞ্চল উদ্ধারের মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য যেমন নতুন অর্থনীতির দুয়ার খুলে দেন, তেমনি প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গেও সংঘর্ষে না গিয়ে কূটনৈতিকভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। ফলে যুদ্ধ-বিগ্রহের সম্ভাবনা আমূলে বিনষ্ট হওয়ায়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশে। শান্তিকামী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে, একারণে করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারিতে ইউরোপ-আমেরিকায় মন্দায় নিমজ্জিত হলেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। যার সুফল পেয়েছে দেশের প্রতিটি মানুষ।
অর্থনীতি ঠিক থাকায় দেশের অসহায় মানুষদের জন্য একের পর এক সরকারি সহায়তার দ্বার খুলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। গ্রামের বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, এতিম- যাদের কেউ দেখে না, তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় কমেছে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার। এমনকি বুদ্ধিদীপ্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত নতুন প্রজন্ম সৃষ্টির লক্ষ্যে অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতি নারীদের পুষ্টিকর খাবারের জন্য বিশেষ ভাতা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। শেখ হাসিনার উদ্যোগে মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ছয় মাস, চালু হয়েছে পিতৃত্বকালীন ছুটিও। টিসিবির পরিধি বৃদ্ধি এবং ওএমএস-এর মাধ্যমে কার্ডধারীদের জন্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে স্বল্পমূল্যে ও বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় খাবার ও ব্যবহার্য সরঞ্জাম।
শেখ হাসিনা ফিরেছেন বলেই বিশ্বজুড়ে নতুন রূপে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ:
বৈশ্বিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা পদ্মা নদীর বুকে আজ নিজস্ব অর্থে নির্মিত পদ্মাসেতু বাংলাদেশের সক্ষমতা সম্পর্কে নতুন বার্তা দিচ্ছে বিশ্বকে। দেশজুড়ে উন্নত চার ও ছয়লেনের রাস্তা, ঢাকা শহরের যানজট কমাতে মেট্টোরেল, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু টানেল, পায়রা বন্দর, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প- এসবের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন উন্নত ও সহজ হচ্ছে, তেমনি দেশের প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে। এসব অবকাঠামোগত উন্নয়নের সরাসরি অর্থনৈতিক সুফল পাচ্ছে প্রান্তিক অঞ্চলের প্রতিটি মানুষ।
এভাবেই গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, শহর-উপশহর-মফস্বলের প্রতিটি স্তরের মানুষের জীবনমান পরিবর্তনে বৈপ্লবিক কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এমনকি তথ্যপ্রযুক্তিসহ শিক্ষাখাতের যে আধুনিকায়ন করা হয়েছে, তার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম নিজেদের মানবিক ও স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনায় স্মার্ট প্রজন্মের হাত ধরে ক্রমেই গড়ে উঠছে স্মার্ট বাংলাদেশ।
একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই আজ সুসংগঠিত হয়ে সরকার পরিচালনা করছে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সব হারানোর বেদনা বুকে চেপে, নীলকণ্ঠ হয়ে, বুলেট-বোমার বজ্র-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বারবার একজন শেখ হাসিনা ফিরে এসেছেন বলেই- সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে আপামর বাঙালি। সেই স্বপ্ন ধরে ধরেই আজ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা আছেন বলেই, হতাশার গুমোট মেঘ চিঁড়ে উঁকি দেওয়া স্বপ্নগুলো আজ সত্যি হয়েছে, বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের বুকে।