116
Published on মে 16, 2025বাংলাদেশ এখন এমন এক বাস্তবতার সম্মুখীন, যেখানে ন্যায় ও সত্যের পক্ষে কথা বলার আগে ভাবতে হবে কোন কথা আওয়ামী লীগের পক্ষে চলে যায় কিনা, যা স্বৈরাচার ইউনূসের মব বাহিনীকে উস্কাতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, ধর্মনিরপেক্ষতা কিংবা রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সংগীত বিষয়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করলেই রাজাকার পাকিস্তানপন্থী সন্ত্রাসীরা আপনাকে ঘিরে ধরবে, আপনাকে আক্রমণ করবে, হেনস্তা করে চিৎকার দিয়ে বলে উঠবে আপনি 'আওয়ামী দোসর'।
বাংলাদেশে আজ কেউ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বললে কিংবা মৌলবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই সেই ব্যাক্তিটি হয়ে যায় ইসলাম বিরোধী; মৌলবাদ-জঙ্গীবাদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ব্যাক্তিটি যদি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়কারী সাচ্চা মুসলমানও হয় ইউনূসের মব সন্ত্রাসীরা একপলকেই ব্যাক্তিটিকে নাস্তিক, কাফের বানিয়ে দিতে দ্বীধা করবে না। নারীর পক্ষে দাঁড়ালে তো আরও বিপদ। হেফাজতে ইসলামের মতে প্রগতিশীল স্বাবলম্বী নারীরা স্রেফ বে**শ্যা কারণ তারা পুরুষের সাথে সমান অধিকার ভাগাভাগি করে মানুষের মত বাঁচতে চায়। আর এসমস্ত কার্যকলাপে দেশবিরোধী অপশক্তি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নীতির ছায়া দেখতে পায়। অর্থাৎ যা কিছু মানবিক, প্রগতিশীল, ইতিহাসনির্ভর সব এই দেশে নিষিদ্ধ।
সত্য, শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে বক্তব্যে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব আছে এমন ইন্টারপ্রিটেশন পাকিস্তান পন্থীদের ফ্যাসিজম কালচার জনগণের সামনে তুলে ধরছে। চরম উগ্রবাদী এই ফ্যাসিস্টরা তাদের ফায়দা হাসিলের নেপথ্যের মতামতগুলো প্রথমে প্রতারণা ও মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে জনগণের উপর চাপাতে চায়। ব্যর্থ হলেই তারা খুন করে, জেলে পুরে, কিংবা ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে কণ্ঠরোধ করে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে তাদের নৃশংস নিধন কর্মসূচি জাহির করবার চেষ্টা করে। স্বয়ং ইউনূসও এই আওয়ামী লীগ হত্যার নামে চরম মানবতাবিরোধী এই অপরাধ যজ্ঞকে সমর্থন দিয়েছে। গণমাধ্যমেও আজ মুক্ত বাকস্বাধীনতা নেই, নিয়ন্ত্রিত সংবাদ প্রকাশে যাদের আপত্তি তারাই হয়েছেন চাকরিচ্যুত অথবা হুমকির স্বীকার।
একমাত্র শেখ মুজিবই এখন পথের কাঁটা। কোন ভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মুছতে পারলেই মুজিবও চিরতরে মুছে যাবে। বাংলাদেশ নামক নামটিও আর থাকবে না, থাকবে না রবিঠাকুরের 'আমার সোনার বাংলা'। এরপর কোনদিন হয়তো শুনতে পাবেন, জাতীয় সংগীত গাইলেই গ্রেফতার করছে পুলিশ। গোলাম আযমের যদি বাংলা হয়, তবে এটিই আসন্ন ভবিষ্যৎ, অসম্ভব কিছু নয়।
গোলাম আযমের বাংলায় আজ 'জয় বাংলা' স্লোগান অবৈধ? ফৌজদারি অপরাধ? হাস্যকর! যেই স্লোগানে রাজাকারের বাচ্চারা এক পাকিস্তান খুইয়েছে আজও কি সেই স্লোগান শুনলে আত্মা কেপে ওঠে? এত কেন ভয় পাও? 'জয় বাংলা' স্লোগান মুছতে এত পায়তারার পিছনে কি ষড়যন্ত্রকারীদের আরেকবার গদি হারানোর ভয়? একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা এখনো মরে নাই, পারবানা ইতিহাস মুছতে। 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়েই বাংলার বিজয় আবার আসবে।