831
Published on মে 16, 2023২০০৬ সালের ৮ মার্চের খবরে দেখা যায়, দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসালয় বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়েও চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের অভাবে। আবার নিয়মিত লো-ভোল্টেজের কারণে হাসপাতালে পানির সরবরাহও কমে যায়। ফলে পানির সঙ্কটে ত্রাহি অবস্থা শুরু হয় রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে। অপারেশন চলাকালে এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মানুষের প্রাণ সঙ্কটে পড়ে যায় বলেও মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকরা। তারা জানান, স্মরণকালের মধ্যে এরকম ভয়াবহ লোডশেডিং কখনো হয়নি হাসপাতালে।
৯ মার্চের পত্রিকার সংবাদে জানা যায়, খোদ ঢাকার মানুষরাও ভোর ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত টানা ১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন সময় কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। উত্তরাঞ্চলের ধানি জমি ফেটে চৌচির। ভারী-মাঝারি-ক্ষুদ্র শিল্প সব অচল হয়ে পড়ে। ৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৩ হাজার মেগাওয়াটের কথা সরকার বললেও বাস্তবতা আরো অনেক কম। এই পরিস্থিতিতে এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনেও ছিল না বিদ্যুৎ। ফলে অনেক স্থানে মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা দিতে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা।
১০ মার্চের সংবাদে জানা যায়, তীব্র গরমে দেশজুড়ে ভয়াবহ বিদ্যুৎহীনতার কারণে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের হাতে মোমবাতি ও দেশলাই দিয়ে দিচ্ছে অভিভাকরা।
১১ মার্চের জনকণ্ঠের প্রতিবেদনে দেখা যায়, পানি ও বিদ্যুৎ সঙ্কটের কোনো সুরাহা না হওয়ায় শহর ও গ্রামের মানুষ নিয়মিতই রাস্তায় নামতে শুরু করে। মফস্বলে কৃষক বিক্ষোভের পর খোদ রাজধানীতেই হারিকেন ও কলসি নিয়ে মিছিল বের করে নারী-শিশুসহ সাধারণ জনতা। ১২ মার্চের সচিত্র প্রতিবেদনে দেখা যায়, হারিকেন জ্বালিয়ে পরের দিনের এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষার্থীরা।
কয়েকমাসব্যাপী পুরো দেশ বিদ্যুৎহীনতার মধ্যে থাকলেও খালেদা জিয়ার সরকারের কোনো মাথাব্যথাই ছিল না জনদুর্ভোগ নিয়ে।
২০০৬ সালের ৭ মের জনকণ্ঠের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১৪মে থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘদিনের টানা বিদ্যুৎহীনতায় প্রস্তুতিতে বিঘ্ন ঘটে পরীক্ষার্থীদের। শহরের চাইতে গ্রামের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ আরো বেশি।
১৪মের সংবাদে দেখা যায়, রাজধানীতে একদিকে পানি ও বিধ্যুতের দাবিতে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে কলসি হাতে রাজপথে নেমে এসেছেন গৃহিণীরা, অন্যদিকে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখেই এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। মার্চে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার মতোই পরীক্ষার হলে মোমবাতি জ্বালিয়ে গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে পরীক্ষায় অংশ নেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী।