টর্নেডো ২০০৪: শতাধিক লাশ ফেলে রেখে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের অপেক্ষা করছিলেন খালেদা জিয়া

513

Published on মে 15, 2023
  • Details Image

প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহত মানুষের দুরাবস্থাকে কাজে লাগিয়ে দেশজুড়ে নিজের দাতা ভাবমূর্তি প্রচারের মতো জঘন্য কাজ করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। শুধু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম না আসায় দুর্যোগে হতাহতদের পাশে না দাঁড়ানোর এমন নির্মম নিকৃষ্ট ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর দ্বিতীয়টি নেই।

২০০৪ সালের ১৭ ও ১৮ এপ্রিল প্রথম আলো পত্রিকার সংবাদে এসব তথ্য জানা যায়। দেখা যায়, ১৬ এপ্রিলের ভয়াবহ টর্নেডোতে বিধ্বস্ত হয়ে যায় ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার অধিকাংশ এলাকা। প্রথম দিনেই বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক নারী-শিশুর লাশ উদ্ধার হয়। ঘরবাড়ি ও আশ্রয়স্থল ধ্বংস হয়ে যায় গ্রামের পর গ্রামজুড়ে। একমুঠো খাবার ও মাথাগোঁজার ঠাঁই খুঁজে না পেয়ে রাতভর পথে বসে থাকে অসহায় মানুষ। অথচ ঘটনার দুই দিন পরেও রাষ্ট্রীয়ভাবে এসব মানুষের জন্য বলার মতো কিছুই করা হয়নি।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষজনকে উল্টো বলা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আসবেন কয়েকদিন পর। ততদিন ধৈর্য ধরে থাকতে। তিনি নিজের হাতে ত্রাণ দেবেন সবাইকে। অথচ ক্ষুধার্ত ছোট শিশুদের আহাজারিতে তখন পুরো গ্রামে কান্নার রোল শুরু হয়। গৃহহীন নারীরা খাদ্যতো দূরের কথা, পরপর দুই রাত রাত মাথাগোঁজার ঠাঁই না পেয়ে ত্রাহি অবস্থায় পড়ে। গ্রামের পুরুষরা জমির ক্ষতিগ্রস্ত ফসল দেখতে গিয়ে জমির ভেতর থেকে, এমনকি বিল ও পুকুর থেকেও লাশ খুঁজে পেতে থাকে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনাজুড়ে যখন শোকের মাতম চলছিল, তকনও কিন্তু ঢাকায় বসে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে তার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার দাওয়াত পাঠাচ্ছিলেন খালেদা জিয়া!


পত্রিকার সচিত্র ফলোআপ সংবাদ আরো জানায়, টর্নেডোর পর হাসপাতালে সারি সারি মরদেহ। দুই জেলার গ্রামে গ্রামে খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে আরো শত শত মানুষ তখন মৃত্যুপথযাত্রী। অথচ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া একবারও এই দুর্যোগে পতিত অসহায় মানুষদের খোঁজ নেননি। উল্টো প্রশাসনকে বলা হয়েছে, তিনি একসময় ঘটনাস্থলে যাবেন, সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে! ময়মনসিংহ-নেত্রকোণায় যখন সহায়-সম্বলহীন হয়ে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিল কয়েকদিন ধরে, বিএনপির এমপি-মন্ত্রীরা তখন ঢাকা শহরের হাওয়াভবনে বসে লুটপাটে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলো। ফলে দুর্যোগের দুদিন পরেও কোনো সহায়তা পায়নি ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হলেও সেদিকে নজর ছিল না কারো। কারণ তারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় বিশ্বাস করে না। তারা মৃত্যুর রাজনীতি করে। বিএনপি-জামায়াত যেখানে নাশকতা ও নির্মমতার জন্য জনগণের কাছে আজ মৃত্যুর ফেরিওয়ালা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, তেমনি শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যেকোনো দুর্যোগে সবসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গণমানুষের পাশে থেকেছে। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর দর্শন অনুসরণ করে রাজনীতির মানবিকায়ন করেছেন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত