1273
Published on ফেব্রুয়ারি 7, 2023২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে পলাতক খুনি ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র তুলে দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হত্যা ও ধর্ষণে অভিযুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দায়মুক্তি দেওয়ার শর্তে বিএনপির পক্ষে কাজ করতে বলেন জোট নেতারা। ঢাকার হাওয়া ভবনে বসে রাজধানীর টপ-টেররদের নিরাপদে কাজ করতে দেওয়ার আশ্বাস দেয় তারেক রহমান। ফলে সন্ত্রাসীরা ভোটের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে দেশজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালাতে থাকে।
২০০১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জনকণ্ঠ পত্রিকার সংবাদ থেকে জানা যায়, খুলনার সাংবাদিক শামসুর রহমানের পলাতক খুনি লিটু ও হীরকের ক্যাডার বাহিনী সরাসরি খালেদা জিয়ার সমাবেশে উপস্থিত হয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেয়। সন্ত্রাসের কারণে যুবলীগ থেকে বহিস্কৃত ব্যক্তিরাও বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় বিএনপি-জামায়াতকে জিতিয়ে আনার মিশনে নামে। শর্ত হয়, নির্বাচনে বিএনপিকে জিতিয়ে আনতে পারলে তারা ভোটের পর বিএনপিতে যোগ দেবে এবং তাদের নামে থাকা হত্যা মামলা প্রত্যাহার করে নেবে বিএনপি সরকার। এরপর থেকে খালেদা জিয়ার নির্বাচনি প্রচারণার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় এই খুনিদের হাতে, যাতে তাদের ভয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে না যায় এবং ব্যালট লুট করে অনায়াসে বিএনপি-জামায়াত জোটকে জেতানো যায়।
অন্যদিকে, নির্বাচনের সময় যতই এগিয়ে আসে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচার ততই বৃদ্ধি পায়। ২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে যশোরের আটটি উপজেলার লক্ষাধিক হিন্দু ভোটারদের বাড়িতে হামলা চালায় এই সন্ত্রাসীরা। তাদের বলা হয়, নৌকায় ভোট দিলে পরিবারসহ হত্যা করা হবে তাদের। এমনকি বাংলাদেশে থাকতে হলে চাঁদা দিতে হবে বলেও তাদের ওপর নির্দেশনা জারি করে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। সংখ্যালঘু নারীরা যেনো ভোটকেন্দ্রে না যায়, সেজন্য আতঙ্ক সৃষ্টি করতে কোলে থাকা ছোট শিশুদের কেড়ে নিয়ে উঠানে ছুড়ে ফেলার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায় তারা। এমনকি মানিকগঞ্জের একাধিক স্থানে হিন্দুদের উপাসান কালীমূর্তি পর্যন্ত ভেঙে ফেলে জামায়াত-শিবিরের এই বর্বরেরা।
চাঁদপুরের কচুয়ায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের হুমকি ও হামলার পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দু নারীরা শাখা-সিঁদুর খুলে ফেলতে বাধ্য হন। পুরুষদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর কচুয়ার ৮টি গ্রামে নির্মম হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। এসময় তারা কমপক্ষে ৬০টি বাড়িঘর, আওয়ামী লীগের নির্বাচনি অফিস, সাধারণ মানুষের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয়, ভাংচুর ক এবং নারীদের ওপর নিপীড়ন চালায়। ১৪ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কচুয়ায় সমাবেশের পরপরই বিএনপির চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে গ্রামে গ্রামে এই বর্বর হামলা চালানো হয়।