2315
Published on নভেম্বর 4, 2022বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিল মোসাদ্দেক আলী ফালু। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই ৫ বছরেই হাজার কোটি টাকার মালিক হয় সে। ঢাকা-গাজীপুর-সাভারেই ১২০ বিঘা জমির দখল করে। এসব জমির বাজারমূল্য ২০০৭ সালে ছিল দেড়শ কোটি টাকা। এছাড়াও লন্ডন ও মালয়েশিয়াতে তেলের ব্যবসায় বিনিয়োগ, সৌদি আরবসহ পাঁচটি দেশে বিশেষ অ্যাকাউন্ট, দেশে ১৫টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক হয় ফালু। দুর্নীতি ও লুটের টাকা পাচার করে বিদেশে বিনিয়োগের জন্য ২০০৬ সালে ১০ বার সৌদি আরব যায় সে।
২০০৭ সালের ১ জুন প্রথম আলো পত্রিকার সংবাদে এসব তথ্য জানা যায়। মূলত, ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময়েও তার একান্ত সচিব ছিল ফালু। কিন্তু ওই মেয়াদে খুব বেশি সম্পদের মালিক হয়নি সে। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হলে তার রাজনৈতিক সচিব হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে হাজার কোটি টাকার পাচার করে ফালু। এসব লুটপাটের টাকা দিয়ে দুটি ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং একটি প্রিন্ট মিডিয়া প্রতিষ্ঠা করে গণমাধ্যম-মাফিয়া বনে যায় সে। খালেদা জিয়ার প্রভাব ও গণমাধ্যমের মালিক হওয়ায় বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে কেউ টু শব্দটি পর্যন্ত করতে পারেনি ফালুর লুটপাট নিয়ে। কিন্তু ২০০৭ সালে জোট সরকারের পতন হলে মুখ খুলতে শুরু করে গণমাধ্যম।
দুর্নীতি দমন কমিশন জানায়- এসবের বাইরেও ফালুর নামে শাহজাহানপুরে একটা সাত তলা ও দুটি পাঁচ তলা বাড়ি, পুরনো ডিওএইচএসে সাড়ে আট কাঠার জমির ওপর ছয় তলা বাড়ি, গুলশানে দুটি প্লটে দেড় বিঘা জমি, তেজকুনী পাড়ায় চারটি প্লটে আড়াই বিঘা, তেজগাঁওয়ে দুটি প্লটে দশ কাঠা, মিরপুরে চার কাঠা এবং মগবাজারে তিন বিঘা জমি আছে। সাভারে আছে আরো ১০৯ বিঘা জমি। আশিয়ান সিটিতে দশ কাঠা, বসুন্ধরার দুটি প্লটে ১৫ কাঠা এবং গাজীপুরে আড়াই বিঘা জমিও আছে তার।
তদন্তকারীরা আরও জানান, বিদেশে নিজের নামে পাঁচটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে ফালুর। সৌদি আরবে ২০০৫ সালে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পর, ২০০৬ সালেই ১০ বার সৌদি ভ্রমণে যায় সে। তার নামে ও বেনামে মোট কতো সম্পদ থাকতে পারে; তা মেলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে গোয়েন্দাদের।