2672
Published on অক্টোবর 15, 2022২০০১ সালের ২০ অক্টোবর সরকার গঠনের পরপরই কারাগারে বন্দি থাকা দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তি দিতে শুরু করে বিএনপি-জামায়াত সরকার। তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশে তালিকা ধরে ধরে টোকাই সাগর থেকে শুরু করে সব সিরিয়াল কিলারকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে দেশজুড়ে টেন্ডারবাজি ও ভূমি দখল শুরু করে বিএনপি নেতারা। হাওয়া ভবনের নির্দেশনায় মির্জা আব্বাসসহ ঢাকার চার এমপি এই সন্ত্রাসীদের এলাকা ভাগ করে দেয়। এরপর পুরো শাসনামল জুড়ে এদের মাধ্যমেই অবৈধভাবে কয়েক হাজার কোটি টাকা পকেটে ভরে হাওয়া ভবন চক্র।
ঢাকার টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণ করতে তারেক রহমানের হয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোঅর্ডিনেট করতো বিএনপির যে এমপিরা, তারা হলো- মির্জা আব্বাস, নাসিরুদ্দিন পিন্টু, এস এ খালেক ও সালাউদ্দিন আহমদ। । এছাড়াও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতো ঢাকায় বিএনপির ওয়ার্ড কমিশনার কাইয়ুম, হাজী রফিক, হাসান এবং মাহমুদা বেগম।
২০০৭ সালের ১১ অক্টোবর, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় তথ্য প্রমাণ ও সন্ত্রাসীদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এই সংবাদ প্রকাশ হয়।
আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন কালা জাহাঙ্গীরের শিষ্য তাজ, ইব্রাহিম ও লম্বু সেলিম গ্রেফতার হওয়ার পর সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর পর গ্রুপ প্রধানের দায়িত্বে থাকা তাজ জানায়, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে তেজগাঁও ছাত্রদলের এজিএস ইমাম ও লম্বু সেলিমের মাধ্যমে হাওয়া ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার গুরু কালা জাহাঙ্গীরের। সেসময় নির্বাচনে জিততে যা কিছু করার, সব করার জন্য কালা জাহাঙ্গীরকে অনুরোধ করেছিল তারেক রহমান। বিনিময়ে পরবর্তীতে কালা জাহাঙ্গীরের গ্রুপকে সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল হাওয়া ভবন থেকে।
কুখ্যাত খুনি ও সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল সরাসরি তারেক রহমান, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন এবং হারিস চৌধুরীর। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং হাওয়াভবনের অন্যতম ক্রীড়নক লুৎফুজ্জামান বাবরের ডান হাত ছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান। আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী টোকাই সাগরকে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছিল তারেকের নির্দেশে। সিরিয়াল কিলার সুব্রত বাইনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের। এমনকি মামুনের ব্যবসাতেও সুব্রতর কোটি কোটি টাকা লগ্নি করা ছিল। মিরপুর-পল্লবীর এমপি এস এ খালেক জমিদখল এবং টেন্ডারবাজির জন্য শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত ও খুরশিদের পৃষ্ঠপোষকতা করতো। এসব টাকার ভাগ পৌঁছে যেতো হাওয়া ভবনে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমানের। এব্যাপারে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী তাজ জানায়, নিজে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আগে আরমানকেও পালানোর পরামর্শ দিয়েচিল সে। কিন্তু আরমান বলেছিল- তাকে বাঁচানোর লোক আছে। পরে আরমান আত্মসমর্পণের মধ্যরাতে ক্রসফায়ারের জন্য সাভারের কাছাকাছি পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রতিমন্ত্রী বাবরের ফোন পাওয়ার পর তাকে আবার ফিরিয়ে এনে নিরাপদে রাখা হয়।