1515
Published on আগস্ট 15, 2021ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, জাতিকে পরিপূর্ণভাবে কলঙ্কমুক্ত করতে কমিশন গঠনের মাধ্যমে খুনি জিয়ার প্রতীকী বিচার সম্পন্ন করা দরকার। আজ বনানী কবরস্থানে ১৫ অগাস্ট হত্যাকান্ডে শাহাদাত বরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের কবরে সপরিবারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘খুনি জিয়াউর রহমান সর্বাত্মকভাবে এই ষড়যন্ত্রের সাথে (সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে) জড়িত ছিল। সেটা সাক্ষ্য-প্রমাণে এসেছে, তথ্য-উপাত্তে এসেছে এবং যারা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করেছেন, তারাও বিভিন্ন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাতে এটা পরিস্কারভাবে প্রতীয়মান যে, জিয়াউর রহমান এটার সাথে (হত্যাকান্ডের সাথে) ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘যদিও মামলায় (সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায়) খুনি জিয়াউর রহমানকে অভিযোগে আনা হয়নি। কারণ সে মৃত্যুবরণ করেছিল। কিন্তু জাতিকে পরিপূর্ণভাবে কলঙ্কমুক্ত করতে একটি কমিশনের মাধ্যমে খুনি জিয়ার প্রতীকী বিচার হলেও সম্পন্ন করা দরকার।’
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের মধ্যে যারা এখনও জীবিত আছে এবং এই ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত ছিল, তাদেরকে এখন পর্যন্ত জনগণের সম্মুখে আনা যায় নাই। আমাদের সবসময়ের আকাঙ্ক্ষা, সম্পূর্ণরূপে যেন বিচার সম্পন্ন হয় এবং সবাইকে যেন বিচারের আওতায় আনা যায়।’
পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে দিতে বহির্বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘একজন পিতা-মাতা হারা সন্তান হিসেবে অনুরোধ করব, বিচার পাওয়া আমার নাগরিক অধিকার। সেই লক্ষ্যে পলাতক খুনীদের যেন অচিরেই বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’
এর আগে তিনি নগর ভবন প্রাঙ্গণ এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবি পরিষদের ব্যানারেও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
পরে মেয়র ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের জীবনে একটি বড় আকাঙ্ক্ষা ছিল, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের কারণে দীর্ঘদিন এই পথ অবরুদ্ধ ছিল। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু হয়। আমরা এটুকু শান্তি এখন পাই যে, বিচার আংশিক কার্যকর করা হয়েছে। গত বছরও একজন কুখ্যাত খুনি, পলাতক আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু এখনো অনেক, যারা নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত ছিল, যারা এই হত্যাকান্ডের সুবিধাভোগী ছিল, খুনি জিয়াউর রহমানসহ তাদের সকলের বিচার বাংলার মাটিতে সম্পন্ন করা একান্তই আবশ্যক। সেটা সম্ভব হলেই জাতির পিতার আত্মা শান্তি পাবে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মা শান্তি পাবে।’
এরপরে মেয়র নগরীর নয়াবাজারে ঢাকা সমিতি এবং ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে মেয়রের সহধর্মিণী আফরিন তাপস, মেয়রের দুই সন্তান - শেখ ফজলে নাওয়াল ও শেখ ফজলে নাশওয়ান, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া, ঢাদসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, ঢাদসিক সচিব আকরামুজ্জামান, সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।