2890
Published on এপ্রিল 6, 2021বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে একজন তরুণ আওয়ামী লীগ কর্মী হিসাবে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। কথোপকথনে ছিলেন সারাবাংলার সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট নৃপেন রায়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর নিয়ে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই মুহূর্তে দুইটি বিশেষ সময় অতিক্রম করছে। আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান, দেশের ইতিহাস নির্মাণের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করার সুযোগ পেলাম। ঘটনা দুটির একটি যোগসূত্র তৈরি হয়েছে। মহাকালের ইতিহাস সেটি নির্ধারণ করেছে। কারণ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অভিন্ন সত্তা।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে দলের দফতর সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা অর্থবহ করেছেন। আজকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ একটি মর্যাদাবান জাতি। আমরা এই মুজিববর্ষেই স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। আমি মনে করি যে, বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ এবং ওনাকে ধন্যবাদ জানাই।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বের মূল্যায়ন করে তরুণ এই নেতা বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আমাদের কাছে প্রাসঙ্গিক। কারণ বঙ্গবন্ধু আজকে আমাদের নেই। ১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তক ঘটনা, মর্মান্তিক ঘটনা আমাদেরকে সবসময় অপরাধী করে। জাতির জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে আমরা অনেক আগেই সোনার বাংলার দেখা পেতাম। পরিতাপের বিষয়, বেদনার বিষয়, আমরা জাতির পিতার সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
তিনি বলেন, জাতির পিতার হত্যাকারীরা বাংলাদেশে পাকিস্তানি দর্শনের রাজনীতি কায়েম করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন চেতনা জাতির পিতার নীতি ও আদর্শ আমাদের জাতীয় জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। এরপর তিন দশক বঙ্গবন্ধুর খুনি, স্বৈরতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বিভিন্ন ব্যক্তি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ শাসন করেছিল। আজকে যে অর্জন সেটি কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের অল্প সময়ের বাংলাদেশ এবং পরবর্তী সময়ে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ধারাবাহিকতার ফল।
শেখ হাসিনার নেতৃত্ব গুণের ভূয়সী প্রশংসা করে চট্টগ্রাম থেকে উঠে আসা এই নেতা বলেন, বাংলাদেশকে আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পরিণত করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে চেতনা মুক্তিযুদ্ধের নীতি স্বপ্ন নির্বাসনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জাতি হিসাবে আমাদের অনেক খেসারত দিতে হয়েছে। আমরা পিছিয়ে পড়েছি। জাতি হিসাবে একসাথে পথচলার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল বাঙালি জাতির সামনে, আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন পুনরুদ্ধার করেছেন। তিনি পুনরায় বঙ্গবন্ধুর মতোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নীতির আলোকে বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১০দিনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিশ্বনেতাদের যোগদানকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, করোনা মহামারির কারণে উৎসবের আয়োজন সীমিত করা হয়েছে। আমরা দেখতে পেয়েছি সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতারা এসেছেন। উৎসবে যোগ দিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্ট্রিন ট্রুডো বলন, এ এক অন্য বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
চীনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘‘চীন তখন বাংলাদেশকে স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বীকৃতি প্রদান করে নাই। সেই চীনের রাষ্ট্রপতি শিং জিনপিং জাতির পিতা জন্মশতবার্ষিকীতে তার ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনিমার্ণে চীন বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে চায়।’ তার মানে বঙ্গবন্ধুর নীতি ও দর্শনের রাজনীতি যে ব্যর্থ হয় নাই, খুনিরা যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে মূলত বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্র আজকে যে পরাজিত হয়েছে আজকে বিশ্ব নেতাদের বক্ততায় সেটি প্রতিফলিত হয়েছে।’’
তিনি উল্লেখ করেন, নেপালের রাষ্ট্রপতি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী, শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এতে করে বোঝা যায়, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মর্যাদার আসন অর্জন করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশ্বনন্দিত হয়েছে। করোনা মহামারির সময়ও বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়কদের উপস্থিতি সেটিই প্রমাণ করে।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। সকল ধরনের ষড়যন্ত্র এবং নানামুখী অপপ্রচার, মিথ্যাচার এবং বিভাজনের রাজনীতির যে ষড়যন্ত্র বিভিন্ন মহল করে যাচ্ছে; সবকিছুকে পরাজিত করে দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, সঠিক সময়ে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসব বাঙালি জাতির সামনে নিয়ে এসেছে। যখন বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করে যাচ্ছে। আমি মনে করি, ইতিহাসের এই বিশেষ মুহূর্তে আমরা আরও বেশি দেশকে ভালবাসবো এবং যে মহান ৩০ লাখ শহিদ, আড়াই লাখ মা-বোন তাদের জীবনের সর্বোচ্চ সম্ভম বিসর্জন দিয়েছিলেন, তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ তারা করেছিলেন। তাদের সেই মহান আত্মত্যাগকে আমরা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি সুখি সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আত্মনিয়োগ করব।
সৌজন্যেঃ সারাবাংলা.নেট