2966
Published on মার্চ 2, 2021বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে আনন্দ র্যালি ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১:৩০ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে কলাভবন, ভিসি চত্বর, টিএসসি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশে মিলিত হয়।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য উক্ত শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব প্রদান করেন। শোভাযাত্রায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অভিবাদন জানান। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সহ কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
র্যালি শেষে ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে এটি আমাদের দেশের জন্য বড় অর্জন। দেশরত্ন শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও জঙ্গীবাদমুক্ত উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। যাঁর প্রত্যক্ষ যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে, সেই জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজকে জঙ্গিমুক্ত হয়েছে, রাজাকারদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। দেশে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত করিয়েছেন। তিনি এখন দেশরত্ন থেকে বিশ্বরত্ন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির নেতৃত্বে এ দেশ জঙ্গীবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিলো, দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নের মহাসড়কে অবস্থান করছে। এসব দেখে এক পক্ষের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য তারা দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মাঠে আছে। তাদের এই দিবাস্বপ্ন কখনো সফল হবে না।’ এ সময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং সকলের নিকট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে, বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। দেশরত্ন শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ যখন আজকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, যখনই আমরা কোনো সুখবর পাই, তখনই তাদের চুলকানি শুরু হয়। আপনারা দেখেছেন এই কোভিডের মধ্যে তারা একটার পর একটা ইস্যু তৈরি করে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার পায়তারা করেছে। তারা আল জাজিরার নাটক সাজানোর চেষ্টা করেছে, ছাত্রদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এতদিন তারা বলতো পুলিশ তাদের উপর হামলা করে, এখন আমরা দেখেছি পুলিশের উপর ছাত্রদলের গুণ্ডারা ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করেছে। কারাভ্যন্তরে একজন লেখকের মৃত্যুকে ইস্যু করার পায়তারা করছে। যেখানে মৃত ব্যক্তির পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ করছে, সেখানে রাজাকারের মদদপুষ্ট একদল রাজনৈতিক পরিবেশ ঘোলাটে করার ইস্যু তৈরি করেছে। বিপ্লবকে তারা ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করেছে। সকল যৌক্তিক আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিত্ব করবে।’ এ সময় তিনি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং বাংলাদেশের এ অসাধারণ অর্জনে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক চলার পথ মসৃণ রাখবে ছাত্রলীগ। বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ কোটি শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপোষহীন, প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত। আল জাজিরা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে নামসর্বস্ব প্রতিবেদন তৈরী করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিলো। কিন্ত তাদের চেষ্টা সফল হয়নি। এ দেশের মানুষ তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আজকে বামপন্থীরা গুটিকয়েক লোকজন নিয়ে শাহবাগে জমায়েত করে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করছে, ছাত্রলীগের এরকম হাজার হাজার জমায়েত রয়েছে এদের প্রতিহত করার জন্য।’
এছাড়া বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ায় দেশব্যাপী ছাত্রলীগের সকল ইউনিট একযোগে আনন্দ র্যালি উদযাপন করেছে। প্রসঙ্গত, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে বাংলাদেশ। গত ২২-২৬ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) বৈঠকে বাংলাদেশকে এলডিসি উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়।