2310
Published on সেপ্টেম্বর 28, 2020সুভাষ সিংহ রায়ঃ
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ হাসিনা জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়– ‘জন্মদিন আসে বারে বারে/মনে করাবারে–/এ জীবন নিত্যই নূতন/ প্রতি প্রাতে আলোকিত/ পুলকিত দিনের মতন।’
১৯৯৬ সালে বেগম সুফিয়া কামাল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিয়ে আর্শীবাণী দিয়েছিলেন- ‘শেখ হাসিনা সাহসের সাথে সংগ্রামে এগিয়ে অগ্রবর্তিনী হয়ে আমাদের শ্রদ্ধা অর্জন করছেন আর ঘাতক মুষক গোপন থেকে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পদদলিত হবার আকাঙ্ক্ষায় কৃমিকীট হয়ে আত্মগোপন করছে। আল্লাহ সহায় হোন, শেখ হাসিনা অজেয় অমরত্ব লাভ করে সর্বদলের বিজয়েনী হয়ে বিরাজ করুন এই প্রার্থনা আজ সর্বজনার কাছে।’
সময় গড়িয়েছে আর শেখ হাসিনা ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছেন। হাসিনা আ ডটার’স টেল যারা দেখেছেন তারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার সেই সংলাপের কথা– ‘মাকে যদি বলতে পারতাম, তোমার হাসু আর আলসে ঘরের মেয়ে নেই। যে মেয়েটা নাকি গল্পের বই পড়ে, গান শুনে দিন কাটিয়ে দিতে চেয়েছিল, সেই মেয়েটিই এখন বাঙ্গালি জাতির পরিত্রাণ কর্তা, বাঙ্গালি জাতির বিকল্পহীন অবলম্বন।’
শেখ হাসিনা একমাত্র সরকারপ্রধান যিনি সোজাসুজি স্পষ্ট করে বলতে পারেন। এটাও তার জন্মসূত্রে পাওয়া। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে আমরা দেখতে পেয়েছি– ‘আমি কথা চিবাই না, যা ভালো মনে করি বলে ফেলি, ভুল হলে তা সংশোধন করি।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে আসেন। সরকার গঠন করার চার মাসের মধ্যে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছিলেন। পিতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালের জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে দৃপ্তকণ্ঠে বলেছিলেন, ‘বিশ্ব আজ দু’ভাগে বিভক্ত-শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’
১৯৯৬ সালের তৎকালীন বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে অনেক কিছুই বলা না বলার বিষয় থাকতো। বিশ্ব সভায় জাতি সংঘে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল খুবই দুর্বল, নতজানু। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ অক্টোবর একবারেই স্পষ্ট করে বলে দিলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পুঁজি, বাণিজ্য ও সেবা প্রবাহের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার অনুকূলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম এবং সেমিনারে জোরালো যুক্তি প্রদর্শন করা হয়। আমরা মনে করি, এর পাশাপাশি শ্রমিকদের গমনাগমনের ওপর বিধি-নিষেধের নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। এ বিষয়টি নিশ্চিতভাবে খোলামনে কোনোরূপ বৈষম্য ছাড়াই যথেষ্ট গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত। ইতিহাস দৃঢ়ভাবে সাক্ষ্য দেয় যে, উন্নত জীবনের সন্ধানে অভিবাসনকারীরা স্ব-স্ব অভিবাসনের দেশকে দরিদ্র নয়; বরং বিত্তশালী করেছে, উন্নত করেছে।’
২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভার্চুয়াল ভাষণে বিশ্ববাসী জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের আত্মমর্যদার কথা। সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে আমরা কেউই সুরক্ষিত নই। মহান পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমনটি ১৯৭৪ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিশ্বের নিপীড়িত নির্যাতিত বুভুক্ষু মানুষের পক্ষে কথা বলেছিলেন, “মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেছিলেন তেমনি কন্যা শেখ শেখ হাসিনা সেই কথাই জানিয়েছেন । সারা পৃথিবীর মানুষের ভ্যাকসিন প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধানের কথা বলেছেন । কারিগরি জ্ঞান ও মেধাস্বত্ত্ব প্রদান করা হলে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষমতার কথা জানান দিয়েছেন । এটাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আত্ম মর্যদার বাংলাদেশ।”
১৯৬২ সালের দুর্বার ছাত্র অন্দোলন ও স্বায়ত্তশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবির সমর্থনে দেশব্যাপী গণঅন্দোলনের সময়
ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। সে সময় আন্দোলনে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ১৯৬৬-৬৭ সালে তিনি ইডেন কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা মহাবিদ্যালয়) ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সহ-সভানেত্রী নির্বাচিত হয়ে জনপ্রিয়তা প্রমাণ করেন। ১৯৬৯ সালের আইয়ুববিরোধী গণঅভ্যুত্থানে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ‘৬৯ সালের রাজপথের মিছিলে তাকে খুবই সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। ১৯৮০-র দশকে (১৯৮১ ) বাংলাদেশের রাজনীতির এক জটিল, কুটিল ও ভয়ঙ্কর ত্রাসমূলক ফ্যাসিস্ট সামরিকতন্ত্র ও তাদের আজীবন সঙ্গী ধর্মব্যবসায়ী, মিথ্যাচারী ও সুবিধাবাদী রাজনীতির আর্বতের মধ্যে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সিভিল সুশাসনের ঝান্ডা হাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আবির্ভূত হন।
দৈনিক ইত্তেফাকের ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১ সালের সংখ্যা থেকে জানতে পারি কীভাবে শেখ হাসিনা ওই সময়ে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করেছেন। সেই সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে এগিয়ে যান।’ ঐতিহাসিক হোটেল ইডেনে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশনে বৈরুত থেকে আগত ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থার রাজনৈতিক শাখার পরিচালক জাকারিয়া আব্দুর রহিম তার শুভেচ্ছা বক্তৃতায় শেখ মুজিবের মৃত্যুকে সারা বিশ্বের সংগ্রামরত জনগণের জন্য বেদনাবহ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। এক দশক, দুই দশক পরে হলেও বাংলাদেশে শেখ মুজিবের উত্তরসূরি আবার ক্ষমতায় আসবে একথাও তিনি বলেছিলেন। তার কথা শেষ পর্যন্ত বাস্তব রূপ পেয়েছে।
দীর্ঘ ছয় বছর যন্ত্রণাদগ্ধ প্রবাসী জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। আমরা কি এখন ভাবতে পারি- শেখ হাসিনা কত দুঃখ-কষ্ট এক জীবনে পেয়েছেন। আজ পৃথিবীর সর্বত্র শেখ হাসিনাকে নিয়ে আলোচনা হয়। এটা একদিনে হয়নি। তিনি অনেক কারণে বাঙালি জীবনে জরুরি; জরুরি থাকবেন। সৃষ্টিশীলতা তাকে অমরত্ব দান করবে। এটাও তিনি অসম্ভব পরিশ্রম করে অর্জন করেছেন। রাজনীতিতে তার নিত্য যাওয়া আসা ছিল। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের আগাম বার্তা ছিল না। কিন্তু চলার পথ ছিল ‘দুর্গমগিরি কান্তার মরু’ পথের মতো । শুধু দেশের মানুষের উন্নয়নের ভাবনায় তুফান ভারি পথে পাড়ি দিয়েছেন । অনেক আপন ছেড়ে গিয়েছেন কিন্তু ভাবনা করেননি । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা’, বলিষ্ঠ একজন সমাজ সংস্কারক।
ইউনেস্কোর সাবেক প্রধান ইরিনা বোকোভা বলছিলেন, ‘সাহসী নারী’ হাসিনা সবাইকে পথ দেখাচ্ছেন। ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো ‘ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল । নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা প্রসারে স্বীকৃতি স্মারক ‘শান্তি বৃক্ষ’ দেয়ার সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইউনেস্কোর প্রধান। শেখ হাসিনাকে ‘সাহসী নারী’ অভিহিত করে জাতিসংঘের এ সংস্থাটির প্রধান বলেছেন, নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব মঞ্চের ‘জোরালো এক কণ্ঠ’।
শেখ হাসিনা নিপীড়িত মানুষের ভালবাসা পেয়েছেন। পাঠকদের অনেকই হয়তো জেনে থাকবেন গফরগাঁওয়ের সেই গরীব রিকশাচালক হাসমত আলীর কথা, যিনি শেখ হাসিনার জন্য জমি কিনে রেখে যান। মৃত্যুর আগে হাসমত আলী তার স্ত্রী রমিজা খাতুনকে শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন। ২০১০ সালের ৪ এপ্রিল সকালে ‘কালের কণ্ঠে’র সাংবাদিক হায়দার আলীকে জড়িয়ে ধরে রমিজা খাতুন কাঁদলেন। বললেন, ‘মরার আগে কাদিরের বাপ (হাসমত আলী) জমির দলিলডা হাতে দিয়া আমারে কইছিল, আমি মইরা গেলে আমার এতিম মাইডার কাছে (শেখ হাসিনা) জমির দলিলটা পৌঁছাইয়া দিবি। অহন দলিলডা তার হাতে দিয়া যাইতে পারলে আমি মইরাও শান্তি পামু।’
শেখ হাসিনা বোঝেন জনগণের সুখ-দুঃখ, বোঝেন তাদের নাড়ির টান। যে কারণে প্রয়াত কথা সাহিত্যিক শওকত ওসমান, গাফফার চৌধুরীর হাত ধরে বলেছিলেন, ‘গাফ্ফার দোহাই তোমার, হাসিনার সমালোচনা করো না। দীর্ঘকাল ধরেই তো চারিদিকে তাকিয়ে দেখছি, এত জ্ঞানী-গুণী, ডান-বামের বড় বড় নেতা। মুখে হাসিনার এত নিন্দা ও সমালোচনা। কিন্তু ক্রাইসিসের সময় হাসিনা ছাড়া কাউকে দেখি না।’
আবার দেখি পাঁচ বছর আগে কোনো এক লেখায় আব্দুল গাফফার চৌধুরীই লিখেছেন,
কাছের মানুষের বড়ত্বের পরিমাপ অনেক সময় কাছে থেকে করা যায় না। শেখ হাসিনারও করা যাবে না। কারণ এখন তিনি আমাদের বড় কাছে আছেন। আমাদের মাঝেই আছেন। কোনো দূর ভবিষ্যতে তিনি যখন থাকবেন না, তখন সেই শূন্যতা কতোটা অপূরণীয় তা বোঝা যাবে। বোঝা যাবে দেশের মাটিতে তিনি কতোটা অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হয়ে উঠেছিলেন। হাসিনার নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য এই যে, তিনি ইন্দিরা গান্ধী বা মার্গারেট থ্যাচারের মতো লৌহমানবী হয়ে ওঠেননি। কিন্তু তাঁদের চাইতেও কঠিন সঙ্কটের সম্মুখীন হয়ে শক্ত ধাতুর মনের পরিচয় দিয়েছেন। যে সাহসের প্রমাণ দিয়েছেন, তা অনেক লৌহমানবীর মধ্যেও দেখা যায়নি।’
আমি একবার বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলাম, শেখ হাসিনা আপনার মেয়ে না হয়ে ছেলে হলে ভালো হতো। বঙ্গবন্ধু জিজ্ঞেস করেছিলেন একথা কেন বলছো? জবাব দিয়েছিলাম, তাঁর চেহারায় আপনার সাহস, দৃঢ়তা ও তেজস্বিতা যতোটা দেখি, এতোটা আর কারো মধ্যে দেখি না। আপনার রাজনীতির যোগ্য উত্তরাধিকার তার হাতেই মানাতো ভালো। বঙ্গবন্ধু তাঁর ঠোঁটের পাইপে দীর্ঘ টান দিয়ে বলেছিলেন, “দরকার পড়লে হাসু তা পারবে। তাকে মেয়ে হিসেবে দেখো না। তার মধ্যে অনেক ছেলের চাইতেও বুদ্ধি, সাহস ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার শক্তি বেশি।” নিজের কন্যা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর এই চিন্তাভাবনা যে কতোটা সঠিক, বাংলাদেশের মানুষ এখন তা বুঝতে পারছে।
শেখ হাসিনাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে নতজানু করার জন্য আমেরিকা তার বিশ্বব্যাংক ও মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সাহায্য তার সরকারের ওপর কম চাপ প্রয়োগ করেনি। শেখ হাসিনা সেই চাপের মুখে নতশির হননি। পদ্মা সেতুর জন্য প্রতিশ্রুত অর্থ সাহায্য যখন বিশ্বব্যাংক প্রত্যাহার করে, তখন সবাই ভেবেছিলেন হাসিনা ভেঙে পড়বেন। তিনি ভাঙেননি। রাষ্ট্রীয় ও বিকল্প সূত্রের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। বিশ^ব্যাংককেই এখন ভুল স্বীকার করতে হয়েছে।
জওহরলাল নেহেরু সম্পর্কে বলা হয়, তিনি ছিলেন একজন ভিশনারি এবং তার কন্যা ইন্দিরা ছিলেন মিশনারি। আমার মনে হয় এই তুলনাটি বাংলাদেশের শেখ মুজিব ও তার কন্যা শেখ হাসিনা সম্পর্কে সমভাবে প্রযোজ্য। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি মধ্যযুগীয় ধর্মীয় রাষ্ট্রীয় কাঠামো থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করে একটি আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন। এই স্বপ্ন সফল করতে গিয়ে তিনি আত্মহুতি দিয়েছেন। তার কন্যা শেখ হাসিনা এই আত্মহুতিকে ব্যর্থ হতে দেননি। তার ছিল মিশন ইমপসিবল। কিন্তু তাকে তিনি পসিবল করেছেন। দেশের ছিনতাই করা স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোকে ধরে রাখার জন্য লড়াই করে চলেছেন। যদি এই লড়াইয়ে তিনি জয়ী হন, তাহলে শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা উপমহাদেশের জনগণের ভাগ্য বদলে যাবে। এখন তার অনেক সমালোচকও স্বীকার করেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে দেশটি বহুদিন আগে আধাতালেবান রাষ্ট্র হয়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো কিলিং ফিল্ডে পরিণত হতো।
কলকাতার এক সাংবাদিক বন্ধু বলেছিলেন, “তোমাদের হাসিনা যেন দশভুজা। দশ হাতে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ছে।” তার কথা সত্য।
ঘরের সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তি, তথা কথিত সুশীল সমাজ ও তাদের পৃষ্ঠপোষক বিগ এনজিও ও বিগ বিজনেস সিন্ডিকেট, একটি শক্তিশালী মিডিয়া চক্র এবং দেশের বাইরে বিরাট প্রভাবশালী একটি আন্তর্জাতিক মহলের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য বিরোধিতা, সব কিছুর বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা লড়ছেন। মনে হয় তিনি একাই লড়ছেন। বঙ্গবন্ধুর পেছনে ছিল দুটি শক্তিশালী বাম গণতান্ত্রিক সংগঠনের সমর্থন। এখন বাংলাদেশে সেই শিবির দুর্বল ও অনৈক্যে জর্জরিত। শেখ হাসিনার ভরসা জনসমর্থন এবং পেছনে ছোট ছোট দলের একটি মহাজোট।
কবি ছড়াকার আমীরুল ইসলাম লিখেছিলেন-
তুমি মানেই
দেশনেত্রী চিরঞ্জীব,
বঙ্গবন্ধু কন্যা,
শতবছর জীবন তোমার
কর্মে গুণে অনন্যা ।
দীর্ঘ হোক ভালবাসা
বাংলাদেশ ধন্যা,
তুমি মানেই বাংলাদেশ
বঙ্গবন্ধু কন্যা
ইতিহাসের পাদটীকা
আশির দশকের কোনো একদিন কবি হাসান হাফিজুর রহমান বঙ্গবন্ধু কন্যার সাথে কথোপকথনের সময় শেখ হাসিনাকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করছিলেন । বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেছিলেন, ‘আমি আপনার অনেক ছোট , আপনি আপনি করছেন কেন?’ তখন কবি হাসান হাফিজুর রহমান বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা আপনিই তো বাংলাদেশ।’
সৌজন্যেঃ বিডিনিউজ২৪.কম