শেখ রেহানা ॥ দুুঃখকষ্টের জীবন- তবু মাথা নোয়াবার নয়

2045

Published on সেপ্টেম্বর 14, 2020
  • Details Image
মুহম্মদ শফিকুর রহমান:
 
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়ি। সামনে ছোট্ট লন। দুর্বা ঘাসে ভরা, যেন মখমলের গালিচা বিছানো। এখানে ক্রিকেট ম্যাচ হতো ভাইবোনে। ভাইয়ের হাতে থাকত ব্যাট আর বোনের হাতে বল। বোন বল করত ভাই ব্যাটিং। বোন বোলিং করল- ভাই এমনভাবে ব্যাট চালাল যে বল লন ছাড়িয়ে বাউন্ডারি ওয়ালের ওধারে চলে গেল। ভাই এমনভাবে উল্লাস করতে থাকল যে, বোনের মনে কিছুটা হলেও কষ্টের ছাপ পড়ল। পরক্ষণেই বোন হাসতে হাসতে দৌড়ে এসে ছোট্ট ভাইটিকে জড়িয়ে ধরল। ভাইয়ের সঙ্গে বোনও উল্লাস করতে করতে এক সময় ঘরে চলে গেল।
 
পাঠক, এই ভাইবোনকে আমরা সবাই চিনি। ছোট্ট ভাইয়ের বয়স যখন ১০ চলছে আর বোনের তখন ১৩। পরিবারের পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে বোনটি চতুর্থ এবং ভাইটি পঞ্চম তথা সর্বকনিষ্ঠ। আর কেউ নয়। আমাদের সেই ছোট্ট ভাইটি শহীদ শেখ রাসেল আর বোনটি শেখ রেহানা। তবে সর্বময় ক্ষমতার মালিক এবং এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের একমাত্র রক্ষাকর্তা, জীবনমৃত্যুর মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শেখ রেহানাকে তুলে নেননি। বড় বোন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জার্মানি বেড়াতে গিয়েছিলেন ১৫ আগস্টের কয়েকদিন আগে। তাই তো দুই বোন -শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা আজও বেঁচে আছেন। বাবা-মা, ভাই-ভ্রাতৃবধূ সবাইকে হারিয়ে একবুক বেদনা বয়ে বেড়াচ্ছেন। শেখ রেহানাকে সরকার একটি বাড়ি দিয়েছিলেন। খুনী জিয়া ক্ষমতা দখল করে সেই বাড়ি কেড়ে নেয় এবং তাতে পুলিশের ধানমন্ডৈ থানা স্থাপন করে। নিষ্ঠুরতারও মাত্রা থাকে। মিলিটারি জিয়ার তাও ছিল না। নইলে শিশু শেখ রাসেলকে হত্যা করত না। কত সুন্দর এবং কি মিষ্টি চেহারা ছিল রাসেলের। একটি ছবিতে দেখেছি, বঙ্গবন্ধু রাসেলকে বুকে জড়িয়ে আদর করছেন। ইতিহাসবিদ গবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন বেশ আগে শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেছিলেন। ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। মামুন বলেছিলেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের টুকরা রাসেলকে আসুননা নিজের সন্তান মনে করি এবং তার বুক ঝাঁজরা, চেহারা বুলেটের ঘায়ে বিকৃত টকটকে লাল তাজা রক্তের ওপর ভাসছে, ওর নিথর দেহটি কোলে তুলে নিতেও দিচ্ছে না খুনীর দল, একবার ভাবুন তো চিত্রকল্পটি আপনার-আমার কেমন লাগবে? শেখ হাসিনা, শেখ রেহানার কেমন লাগছে। এত এত অকালমৃত্যুর ভার দুবোন বয়ে চলেছেন ৪৫ বছর ধরে। কেউ কেউ বাঙালী জাতিকে সিভিলাইজড মনে করে গর্ববোধ করেন। ১৫ আগস্ট, ৩ নবেম্বর, ২১ আগস্টের পর কোন বাঙালী কি নিজেকে সিভিলাইজড দাবি করতে পারে? পারে না। পশ্চিমবঙ্গের একজন গায়ক নচিকেতা। তার একটা গান শুনেছিলাম, তাতে একটি লাইন ছিল -মন্ত্রী-এমপিরা সব হারামজাদা (?) জানি না, তিনি নিজেকে এবং সিভিলাইজড ধ্বজাধারী লুঙ্গি-ধুতি-পাঞ্জাবি বাঙালীদের ওই শব্দটির বাইরে রাখলেন কিনা? যে বাঙালী বঙ্গবন্ধু মুজিবকে হত্যা করতে পারে, বঙ্গমাতাকে হত্যা করতে পারে, শিশু শেখ রাসেলকে হত্যা করতে পারে; যে বাঙালী এই হত্যাকান্ড সমর্থন না করলেও নীরব থাকে, প্রতিবাদ করে না, প্রতিশোধ নেয় না-সেই বাঙালী সম্পর্কে নচিকেতার সেই শব্দটি আপনা আপনি চলে আসে, গান-কবিতা শেখার দরকার পড়ে না।
 
আমার লেখার সিডিউল ছিল গত শুক্রবার শনিবার ছাপা হবার জন্য। কিন্তু লিখতে পারিনি। আমার বাপ-চাচারা সাত ভাইবোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ এবং একমাত্র জীবিত ছোট চাচা গত বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি....রাজিউন)। মহামারী করোনা তাকে কেড়ে নিল। বৃহস্পতিবারে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ বালিথুবায় তাকে নিয়ে যাই এবং সেখানে জানাজা ও দাফন শেষে গভীর রাতে ঢাকা ফিরি। তাই লিখতে পারিনি।
 
তবে এই লিখতে না পারার কারণে একটা সুযোগ এলো। আগামী রবিবার ১৩ সেপ্টেম্বর শেখ রেহানার ৬৬ তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে একটা লেখা তৈরি করার সুযোগ পেয়ে গেলাম।
 
জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। পুরো জীবনটাই তাদের কাটছে চোখের জল ফেলতে ফেলতে। কত চেনা লোক ১৫ আগস্টের পর অচেনা হয়ে গেলেন। তবে কেউ কেউ মিলিটারি জিয়ার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। তাদের একজন তখন জার্মানিতে রাষ্ট্রদূত ও জাতীয় সংসদের স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ও তার সহধর্মিণী। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বাংলাদেশের জাতির পিতার কন্যা। অথচ শেখ হাসিনার যখন বিয়ে হয় প্রখ্যাত অণুবিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ আলী মিয়ার সঙ্গে তখন বঙ্গবন্ধু কারাগারে। শুনেছি বিয়ের অনুষ্ঠানও ছিল একেবারেই সাদামাটা এবং বিয়ের পর নবদম্পতি জেলগেটে গিয়ে বাবাকে সালাম করেন ও আশীর্বাদ নেন। কিন্তু শেখ রেহানার ভাগ্যে তাও জোটেনি। শেখ রেহানার বিয়ে ১৯৭৭ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর। বর ডক্টর শফিক সিদ্দিক। আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমানের আত্মীয়। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকতে ১৯৭৪ সালে তাদের বিয়ের কথা হয়েছিল, কিন্তু তিনি বিয়ে দিয়ে যেতে পারেননি। ডক্টর শফিক সিদ্দিক তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সেই সুবাদে লন্ডনের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণারত ছিলেন। শেখ হাসিনার বিয়েতে তবু বঙ্গবন্ধু জেলে থাকলেও অন্যরা সব অনুষ্ঠানে ছিলেন। কিন্তু রেহানার বিয়েতে পরিবারের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। ঘাতকরা সবার জীবন কেড়ে নিয়েছিল। একমাত্র জীবিত বড় বোন শেখ হাসিনা টিকেটের টাকা যোগাড় করতে পারেননি বলে ছোট বোনের বিয়েতে অংশ নিতে দিল্লী থেকে লন্ডন যেতে পারেননি। একইভাবে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অল্প কিছুদিন হলেও নানা-নানি, মামা-মামির আদর-যতœ পেয়েছেন। কিন্তু শেখ রেহানার সন্তান ববি টিউলিপ ও রুপন্তি তাদের কারোরই আদর পাননি। বরং শেখ হাসিনা যখন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশে ফিরলেন, বলা যায় নিজের তিন সন্তান -ববি টিউলিপ ও রুপন্তির সঙ্গে শেখ হাসিনার দুই সন্তান- জয়, পুতুলের দেখাশোনাও শেখ রেহানা করতেন। শেখ হাসিনাও ছোট বোনকে কন্যার মতো স্নেহ করেন।
 
হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর প্রচেষ্টায় এবং ভারতের তৎকালীন মহীয়সী প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধীর আমন্ত্রণে তার আশ্রয়ে বড় বোনের সঙ্গে দিল্লী চলে আসেন। সিদ্ধান্ত হলো লেখাপড়া করবেন। কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে তার ভর্তির ব্যবস্থাও হলো। কিন্তু তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজি হলেন না। তারা শেখ রেহানার নিরাপত্তা দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন। তখন সিদ্ধান্ত হলো লন্ডন চলে যাবেন। সেখানে তাদের খোকাচাচা আছেন, আছেন ফুপা জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান। রয়েছেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীসহ অনেকেই। কিন্তু দিল্লী থেকে লন্ডন যাবার প্লেন ভাড়ার টাকা জোগাড় হবে কিভাবে। দুশ্চিন্তার মধ্যে কাটছিল। এই সময়ে মিসেস গান্ধী জানতে পেরে টিকেটের টাকা পাঠিয়ে দিলেন। তিনি লন্ডনে গিয়ে তার খোকাচাচার বাসায় উঠলেন। ১৯৭৭ সালে বিয়ের পর তাদের অর্থকষ্ট বেড়ে যায়। একটি পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করে থাকতে শুরু করেন। ওই সময় একদিকে শেখ রেহানা চাকরির সন্ধান শুরু করার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেন। তিনি স্যার টমাস উইলিয়ামের সঙ্গে দেখা করলে স্যার উইলিয়াম রাজি হন এবং বাংলাদেশে আসার জন্য টিম গঠন করেন। কিন্তু মিলিটারি জিয়া তাদের বাংলাদেশে আসতে দেয়নি। দিল্লীতে থাকাকালে শেখ হাসিনা নিজ হাতে রান্নাবান্না, কাপড়কাচা সবই করতেন। কারণ, ড, ওয়াজেদ মিয়ার আয়ে সংসার চালানো কষ্টকর ছিল। ড. ওয়াজেদ মিয়াকে মিসেস গান্ধী একটা চাকরি দিয়েছিলেন বলে কিছুটা স্বস্তি ছিল। এও জানা যায়, মিসেস গান্ধী বঙ্গবন্ধুর কন্যাদের দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন ভারতীয় রাজনীতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও মিসেস গান্ধীর বিশ্বস্ত পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জীকে। প্রণব বাবু বাংলাদেশের নড়াইলের জামাইবাবু। সেই সুবাদে মিসেস মুখার্জী সব সময় তাদের খোঁজখবর রাখতেন। শেখ রেহানাও লন্ডনে বড় বোনের মতো সব কাজ করতেন। পাশাপাশি মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের শিক্ষা অনুযায়ী সন্তানদের মানুষ করতে লাগলেন। পাশাপাশি খুঁজতে খুঁজতে একদিন চাকরিও পেয়ে গেলেন একটি লাইব্রেরিতে। লাইব্রেরির চাকরির আগে যখন কোথাও জব পাচ্ছিলেন না, তখন রেস্টুরেন্টে চাকরি করতেও চেয়েছিলেন। হায়রে বাঙালী! তোদের যে মানুষটি মানুষ বানাল, পাসপোর্ট দিল সেই মানুষটির কন্যা একটি অতি সাধারণ চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এরই নাম বাঙালী! না, নচিকেতার গানের ভাষার সেই শব্দ। হারামজাদা শব্দটি খুব খারাপ। তাই সরাসরি উচ্চারণ করছি না, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কিছু একটা বলে কাজ সারতে চাচ্ছি। কোন এক মনিষী বলেছেন, মানুষকে বিশ্বাস না করা পাপ। কিন্তু আমি বলি, আজকের বাংলাদেশে বরং মানুষকে বিশ্বাস করাই পাপ। এভাবে কষ্ট এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে চলতে চলতেই দু’বোন বাঙালীকে বিশ্বাস করেছেন এবং বাঙালীর ভাত-কাপড়, শিক্ষা, চিকিৎসা, উন্নয়নে দিনরাত্রি কাজ করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির নেপথ্যে যেমন বেগম মুজিব ছিলেন প্রধান পরামর্শদাতা, ঠিক তেমনি শেখ রেহানাও শেখ হাসিনাকে পেছন থেকে সাহস যোগাচ্ছেন।
 
সংসার, রাজনীতি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, স্যার টমাস উইলিয়মকে নিয়ে টিম গঠন। স্যার টমাস উইলিয়াম তাদের পূর্ব পরিচিতি এবং ঘনিষ্ঠ। তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কৌঁসুলি হিসেবে বহুবার ৩২ নম্বরের বাসভবনে গেছেন এবং বেগম মুজিবের সঙ্গে মামলা সংক্রান্ত পরামর্শ করার সময় শেখ রেহানা পাশে ছিলেন। সেই সুবাদে রেহানাকে মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করেন যেন তার প্রচেষ্টা সফল হয়।
 
একটা জিনিস লক্ষণীয়Ñ বঙ্গবন্ধু ও বেগম মুজিব তাদের কন্যাদের কোন ধনাঢ্য, শিল্পপতি বা আমলার সঙ্গে বিয়ে দেননি। দিয়েছেন দুজন শিক্ষাবিদের সঙ্গে। শেখ হাসিনার স্বামী পিএইচডি করে আসা ড. এম ওয়াজেদ আলী মিয়া তখন এটমিক এনার্জির তরুণ গবেষক। শেখ রেহানার স্বামী শফিক সিদ্দিক তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক এবং বিয়ের সময় লন্ডনের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিরত ছিলেন। পিএইচডি শেষ করে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। অর্থাৎ, দুই বোনের জামাই ডক্টরেট এবং পিএইচডি ডিগ্রীধারী। বঙ্গবন্ধু পরিবার এখানে কালচারালি সম্পূর্ণ আলাদা। তাদের সন্তানরাও সেভাবেই গড়ে উঠেছেন:
 
* শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় -আইটি বিশেষজ্ঞ ভারতের বেঙ্গালুরু এবং আমেরিকায় আইটিতে গ্র্যাজুয়েট এমএস, পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক এ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা লোকপ্রশাসনে এমএস করা। তরুণ আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিশ্বে আড়াই শ’ জনের একজন এবং তার মা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আইটি এ্যাডভাইজার (অবৈতনিক)।
 
* শেখ হাসিনার কন্যা যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেসিডেন্ট এ্যাওয়ার্ড নিয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী শেষ করে পরে অটিজমে উচ্চতর গবেষণা শেষ করেন। বর্তমানে তিনি জাতিসংঘ সেক্রেটারি জেনারেলের অটিজম উপদেষ্টা। একই সঙ্গে মায়েরও উপদেষ্টা (অবৈতনিক)।
 
* শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা (বিসিএল) গ্রহণ শেষে দেশে ফিরে আসেন এবং একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকরি নেন। সে চাকরিতেই আছেন।
 
* শেখ রেহানার বড় মেয়ে যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা শেষে সেখানেই লেবার পার্টির ব্যানারে রাজনীতি শুরু করেন এবং বর্তমানে দ্বিতীয়বারের মতো ব্রিটিশ পার্লামেন্টে হাউজ অব কমন্সের লেবার দলীয় প্রভাবশালী সদস্য। তিনি হাউজ অব কমন্স কাঁপাচ্ছেন।
 
* শেখ রেহানার ছোট মেয়ে রুপন্তি লেখাপড়া করছিলেন যুক্তরাজ্য। এরইমধ্যে লেখাপড়া সমাপ্ত করার কথা।
 
এখানেই বঙ্গবন্ধু পরিবার সম্পূর্ণ আলাদা। বঙ্গবন্ধু নেই, বঙ্গমাতা নেই। কিন্তু তাদের দুই কন্যা পারিবারিক আদর্শ থেকে এতটুকু বিচ্যুত হননি। শেখ হাসিনা একবার বলেছিলেন-
 
‘মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ লেখাপড়া
 
টাকা পয়সা গাড়ি বাড়ি একদিন হারিয়ে যেতে
 
পারে চুরি হয়ে যেতে পারে কিন্তু শিক্ষা
 
হারায় না কোনদিন, চোর ডাকাত চুরিও
 
করতে পারে না’।
 
সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, তার সবাই বিদেশে লেখাপড়া করেছে। তাও ইংরেজী ভাষায়। ইংরেজী ভাষাটা যেমন শিখেছেন ইংরেজদের মতো, তেমনি বাংলা একটুও ভোলেননি। বরং বাংলাও বলেন শিক্ষিত বাঙালীর মতো। এখানেই বঙ্গবন্ধু পরিবারের সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা।
 
সবশেষে শেখ রেহানাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।
 
 
লেখক : এমপি এবং সিনিয়র সাংবাদিক, সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত