5137
Published on অক্টোবর 1, 2018ড. আতিউর রহমান
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রথম সন্তান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্ম হয়। বাইগার নদীর তীরে গ্রামবাংলার স্নিগ্ধ শ্যামল প্রকৃতির স্নেহধন্যে সাধারণ মানুষের মাঝেই কাটে তার শৈশব।
১৯৫৪ সালে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় আসেন। প্রথমে পুরান ঢাকার মোগলটুলির রজনী বোস লেন, তার পর মিন্টো রোড এবং সব শেষে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর রোডের ঐতিহাসিক বাড়িতে বাস করেছেন পরিবারের সঙ্গে। টুঙ্গিপাড়ায় শুরু করলেও ঢাকায় টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়, আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয়, বকশীবাজারে তৎকালীন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নেন। আর রাজনীতির পাঠশালা তো ছিল তার পরিবারই। তাই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতিতে বরাবরই সক্রিয় ছিলেন তিনি। বাবা জেলে। মা আড়ালে থেকেও রাজনীতির মধ্যমণি। আর তিনি সক্রিয় ছাত্র রাজনীতিতে। শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনের সক্রিয় নেত্রী।
উন্মাতাল গণআন্দোলনের মাঝেই কারাবন্দি পিতার আগ্রহে ১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় তার। একাত্তরে গৃহবন্দি, পঁচাত্তরে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শেখ হাসিনা ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর আনুকূল্যে দিল্লিতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেন। প্রায় অর্ধযুগ পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। এক বুক আশা নিয়ে স্বদেশবাসীর দুঃখ মোচনের সুবিশাল দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তিনি পা রাখেন বাংলাদেশের মাটিতে। এর পরের ইতিহাস সবারই জানা। গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও বারে বারে গৃহবন্দি, ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ, ২০০১ সালের পর ফের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম, কারাবন্দি শেষে ২০০৮ সালে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সালের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন। সেই দায়িত্ব তিনি এখনো পালন করে চলেছেন। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন যেমন সাফল্যে ভরা তেমনি আবার প্রাণনাশের মতো হীন আক্রমণের দুঃখজনক ঘটনারও সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। বাংলাদেশকে দুঃসময় থেকে সুসময়ে টেনে তুলেছেন তিনি তার অক্লান্ত দেশপ্রেম, প্রখর দূরদৃষ্টি ও দক্ষ নেতৃত্বের গুণে। রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অসামান্য পরিবর্তনের তিনি রূপকার। ‘দিন বদলের সনদ’ দিয়ে তিনি দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন পান ২০০৮ সালের নির্বাচনে। এর পর থেকে আর পেছনের দিকে তাকাননি তিনি। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে গরিবদুঃখী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে যে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ধারা চালু করেছিলেন তাকে আরও তীক্ষ্ণ ও গতিময় করেছেন দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার ক্ষমতাসীন হয়ে। বিগত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি অঙ্গনে যে ধরনের অভাবনীয় পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে তা এই অল্প পরিসরে লিপিবদ্ধ করা সত্যিই মুশকিল। তবু মোটা দাগে উন্নয়নের গতিময় অভিযাত্রার কিছু মাইলফলক তুলে ধরছি।
২০০৯ অর্থবছরের ৫.০৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে ২০১৮ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ৭.৮৬ শতাংশ। এ সময়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৭০৩ ডলার থেকে ১৭৫১ ডলারে। মূল্যস্ফীতি কমেছে ১২.৩ শতাংশ থেকে ৫.৩৫ শতাংশে। তার মানে গেল বছর মানুষের মাথাপিছু প্রকৃত আয় বেড়েছে আড়াই শতাংশের মতো। এ সময়ে মোট বিনিয়োগ বেড়েছে চারগুণ। ভোগ বেড়েছে তিনগুণ। গত একশ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত হতে পেরেছিল। আর গত এক দশকে সেই ক্ষমতা এর তিনগুণেরও বেশি বেড়ে আঠারো হাজার মেগাওয়াট হয়েছে। এই অঙ্ক দ্রুতই বেড়ে চলেছে। রপ্তানি বেড়েছে ১৫.৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩৬.৭ বিলিয়ন ডলারে (অর্থাৎ ২.৩৫ গুণ)। আমদানি বেড়েছে ৩.১৮ গুণ (২২.৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫৪.৫ বিলিয়ন ডলার)। রেমিট্যান্স বেড়েছে ৯.৭ বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ৭.৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩২.৯ বিলিয়ন ডলারে (প্রায় সাড়ে চারগুণ)।
বাড়ন্ত এই অর্থনীতির সঙ্গে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অগ্রগতি যোগ করলে সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের ইতিবাচক চেহারার সন্ধান মেলে। গত এক দশকে ব্যাংকের শাখা বেড়েছে তিনগুণ, আমানত বেড়েছে ২.৪৭ গুণ এবং ঋণ বেড়েছে ৩.২ গুণ। কৃষকের জন্য দশ টাকার হিসাব, কৃষি ঋণ, স্কুল ব্যাংকিং, এসএমই ঋণ, মোবাইল ও এজেন্ট ব্যাংকিং, সামাজিক দায়বদ্ধ কর্মকা- হিসেবে নিলে বোঝা যায় সামাজিক পিরামিডের সর্বনিম্ন অংশ অর্থনৈতিকভাবে কতটা শক্তিশালী হয়েছে। এর ফলে দারিদ্র্য ও অতিদারিদ্র্যের হার যেমন কমেছে, তেমনি গড় জীবনের আয়ু বেড়েছে অভাবনীয় হারে।
গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার কারণে দেশীয় বাজার বড় হয়েছে। মধ্য ও উচ্চ আয়ের মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফসল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষার নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এই সময়টায়। আর কে না জানেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাধারণের প্রতি পক্ষপাতিত্বের কথা। আর এ কারণেই কবি মহাদেব সাহা লিখতে পারেন, ‘শুধু জানি পিতার মতই তাঁরও বুক জুড়ে/এই দেশের মানচিত্র।’ প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও বহু আগে তিনি তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়িয়েছেন এ দেশের দুর্যোগে দুঃসময়ে কাতর সাধারণ মানুষকে। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের পর পরই বাবার মতো ছুটে গিয়েছেন দুঃখী মানুষের পাশে। একই সঙ্গে সুযোগ পেলেই লিখেছেন তাদের দুঃখের কথা। ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’, ‘কেন তারা পথ শিশু’, ‘যেতে হবে অনেক দূর’, ‘দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং কিছু চিন্তাভাবনা’, ‘জনগণ এবং গণতন্ত্র’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংগ্রাম’, ‘গণমানুষের উন্নয়ন’, ‘আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি’, ‘সাদাকালো’, ‘সবুজ মাঠ পেরিয়ে’ এমন অনেক বইয়ের তিনি লেখক। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে এসব বইয়ের বেশ কয়েকটির পর্যালোচনা করার। ‘দৈনিক জনকণ্ঠে’ প্রকাশিত ঐ পুস্তক সমালোচনায় সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্ট তীক্ষ্ণভাবে দেখার মতো চোখ যে তার রয়েছে সে কথা উল্লেখ করেছিলাম। তাই প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই যে তিনি দুঃখী মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ব্রতী হবেন তাতে অবাক হইনি। বিশেষ করে, ১৯৯৮ সালে বিরাট বন্যার সময় তিনি কোটি কোটি মানুষকে খাইয়ে পরিয়ে বাঁচিয়ে রাখার যে অভাবনীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা তো এখন ইতিহাস। আর মানুষের প্রতি এই অকৃত্রিম দরদের প্রতিফলন আরও স্পষ্ট করে দেখতে পেলাম ২০১৭ সালে যখন প্রায় এগারো লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে পড়ে। আজ অব্দি তিনি তাদের মায়ের স্নেহে বাঁচিয়ে রেখেছেন। একাত্তরে ইন্দিরা গান্ধী যেমন আমাদের দেশের শরণার্থীদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ঠিক তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার মানবিকতার পরশ দিয়ে এসব দুঃখী মানুষের দুঃখ মোচন করে চলেছেন। সারা বিশ্ব তার এই মানবিক গুণাবলির বহির্প্রকাশে অভিভূত। জাতিসংঘে বিশ্বনেতারা তার এই মানবিক নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাই জাতিসংঘ ও বিশ্বের নানা সংগঠন থেকে তিনি ডজন ডজন পুরস্কারে সিক্ত। অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন সম্মানীয় ডি-লিট উপাধি। তিনি নিজেও সারা জীবন সম্পৃক্ত রয়েছেন নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে। আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি যে কোনো দুর্যোগের পর (যেমন রানা প্লাজা ও বিডিআর ট্র্যাজেডি) দুঃখী মানুষের দুঃখ মোচনের জন্য কতটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। আর কতটা ক্ষিপ্রতার সঙ্গে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি, সেটাও দেখার সুযোগ পেয়েছি আমি। ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রদর্শনের আহ্বান তিনি প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রয়েছে তার বিশেষ টান। সুবিধাবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য তার সহযোগিতার হাত সর্বদাই অবারিত। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মারক সংরক্ষণে ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’, ‘গণহত্যা জাদুঘর’, ‘জাতীয় জাদুঘর’সহ শিল্প সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায় তার জুড়ি মেলা ভার। আর সে কারণেই হয়তো বাবার মতোই এ দেশের শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে তার যে আত্মার আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর সেই সম্পর্কের জোরেই প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন লিখে ফেলেন, ‘তোমার আমার ঠিকানা/পদ্মা-মেঘনা-হাসিনা’ (দেখুন ‘গণতন্ত্রের বহ্নিশিখা শেখ হাসিনা’, ২০১৬, পৃ. ২১৩)। আর জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তাই অনায়াসেই লিখতে পারেন, ‘আমি গর্ব করে বলতে পারি বঙ্গবন্ধুকে আমি দেখেছি। এখন জীবন সায়াহ্নে পৌঁছে আবার গর্ব করতে পারছি, আমি হাসিনার শাসনামল দেখে গেলাম।’ (ঐ, পৃ. ১৮১)। আর সদ্য প্রয়াত বরেণ্য বুদ্ধিজীবী মুস্তাফা নূরউল ইসলাম লিখেছেন, ‘শেখ হাসিনা একাধারে শান্তির দূত, উন্নয়নের উজ্জ্বল প্রতীক, নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত, বিশ্বের সেরা চিন্তাবিদদের একজন, দৃঢ়চেতা দেশপ্রেমিক নির্মোহ রাজনীতিক।’ (ঐ, পৃ. ২১)।
শুধু স্বদেশের বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বই শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণাবলি বিষয়ে লিখেছেন তা কিন্তু নয়। বিদেশের পন্ডিতদেরও দৃষ্টি এড়ায়নি তার নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য। যেমন বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. কৌশিক বসু মনে করেন যে মৌলবাদী শক্তিসমূহের মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়ন অভিযাত্রাকে টেকসই করার সক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে। তিনি আরও লিখেছেন যে কোনো দেশ যখন দ্রুত উন্নতির পথে হাঁটে তখন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বৈষম্য, সন্ত্রাস, ধর্মীয় উগ্রবাদিতার মতো ঝুঁকি দেখা দিতেই পারে। বাংলাদেশও এসব ঝুঁকির বাইরে নয়। সে কারণে এসব ঝুঁকির বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে। আর এসব ঝুঁকি মোকাবিলায় শেখ হাসিনার যে গভীর অঙ্গীকার রয়েছে তাও অস্বীকার করার উপায় নেই। তার নিজের ভাষায় বলা যায়, Bangladesh needs to be vigilant about the risks posed by fundamentalism. Given Prime Minister Sheikh Hasina’s deep commitment to addressing these risks, there is reason to hope for success. In that case, Bangladesh will be on a path that would have been unimaginable just two decades ago: toward becoming an Asian success story.
(Kaushik Basu, 'Why is Bangladesh booming', Project Syndicate, April 23, 2018) ।
সব মিলিয়ে এ কথা বললে ভুল হবে না যে বঙ্গবন্ধুর শারীরিক বিদায়ের পর তার কন্যার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সমৃদ্ধির দিকে। অধ্যাপক কৌশিক বসুর ধারণা এশিয়া মহাদেশের সাফল্যের এক অসাধারণ গল্পের নাম হবে বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দূরদর্শী বলেই আমাদের স্বপ্ন দেখাতে পারেন যে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে। কেননা তিনি যে সত্যি বিশ্বাস করেন আমাদের ‘যেতে হবে অনেক দূর’। আর তার এই চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’-এর কৌশলসমূহে। জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল মোকাবিলার জন্য চর, হাওর, উপকূল, নদীর মোহনা, বরেন্দ্র অঞ্চল, নগরাঞ্চলের মতো ‘হটস্পট’গুলোর উন্নয়ন, নদীর সঙ্গে বসবাসের জন্য ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ উপযুক্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনার যে উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন তাতেই বোঝা যায় তার চোখ কত দূরে। এমনি এক দূরদর্শী নেত্রীর জন্মদিনের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। উচ্চারণ করতে চাই সদ্য প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের কবিতার কয়েকটি পঙতি :
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্নবাহু তাঁর
শুভ শুভ জন্মদিন দেশরত্ন শেখ হাসিনার
আহা, আজ কী আনন্দ অপার!’
(‘গণতন্ত্রের বহ্নিশিখা শেখ হাসিনা’, পৃ. ৪০১)
লেখক: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ