16783
Published on জুলাই 24, 2018দেশেই তৈরি হবে হেলিকপ্টার, বিমানসহ সব ধরনের আকাশযান। এসব আকাশযান তৈরির কারখানা স্থাপনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে দেশের উত্তরের জেলা লালমনিরহাট জেলাকে। জেলার পরিত্যক্ত এয়ার স্ট্রিপে প্রথমে অ্যারোনেটিক্যাল সেন্টার স্থাপন করে প্রাথমিকভাবে বিমান ও হেলিকপ্টারগুলো মেরামত ও ওভারহোলিংয়ের কাজ করা হবে, পরে সেখানে এসব আকাশযান তৈরিও করা হবে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় নিজের এই পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে তিনি বিমানবাহিনী প্রধানকে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের শাপলা মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘লালমনিরহাটে একটা এয়ার স্ট্রিপ আছে। বিশাল জায়গা পড়ে আছে। আমি আমাদের বিমানবাহিনী প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা একটি অ্যারোনেটিক্যাল সেন্টার ঢাকায় করেছি। আর সেখানে এই ধরনের একটি অ্যারোনেটিক্যাল সেন্টার গড়ে তুলবো। ভবিষ্যতে সেখানে আমরা নিজেরাই হেলিকপ্টার তৈরি করতে পারবো, প্লেনও তৈরি করতে পারবো।’
বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কেন পারবো না? আমরা এখন নিজেরা যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছি খুলনা শিপইয়ার্ডে। যেটা একসময় একেবারে বসে গিয়েছিল, শেষ হয়ে গিয়েছিল। বিমানবাহিনী প্রধানকে বলেছি একটা প্ল্যান করতে। সেটা কেবল বাংলাদেশের নয়, আশপাশের দেশের বিমানবাহিনীর বিমান বা হেলিকপ্টার আমরা ওভারহোলিং করবো, মেরামত করবো।’
প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দ্রুত ও আধুনিক করতে বুলেট ট্রেন চালুর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেন এক ঘণ্টায়, ঢাকা থেকে দিনাজপুর যেন দুই ঘণ্টায় পৌঁছাতে পারি এবং ঢাকা থেকে বরিশাল পর্যন্ত, অর্থাৎ পায়রা বন্দর পর্যন্ত যেন রেলে পৌঁছাতে পারি এ জন্য আমরা বুলেট ট্রেন চালু করবো।’ ঢাকা-সিলেট বুলেট ট্রেন চালুর কথাও তিনি এ সময় বলেন।
ডিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফোকাস বাংলা)
তিনি সিলেট বিমানবন্দরকে উন্নত ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক এয়ারপোর্ট হিসেবে উন্নীত করার কথা জানান।
পটুয়াখালীর পায়রায় নতুন সমুদ্রবন্দর করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সোনাদিয়া ও মহেশখালীতে যেমন গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে উঠবে, তেমনি আমাদের পায়রা বন্দরটাকেও গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।’
গ্রামে নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর কথা বলে ডিসি সম্মেলেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো প্রতিটি গ্রামই যেন শহর হিসেবে গড়ে ওঠে। আমরা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিকল্পিত শহর গড়ে তুলতে চাই। গ্রামের মানুষও যেন সমানভাবে নাগরিক সুবিধা পায়। তাহলে মানুষ আর শহরমুখী হবে না। তার নিজের এলাকায় বসেই সব রকমের সুবিধা পাবে। মানুষ যেন নাগরিক সুবিধা নিয়ে জীবনযাপন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।’
নতুন শহর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিয়ে ডিসিদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, ‘ঢাকায় শুরুতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে আমরা এখন সমস্যায় পড়ে গেছি। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত যেহেতু আমরা শিল্প, বহুতল ভবন, অফিস আদালত গড়ে তুলতে চাই, তাই এখন থেকেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টা আপনাদের দেখতে হবে। এটা করা হলে ভবিষ্যতে কোনও দুশ্চিন্তা করতে হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সরকারি কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ দেন। প্রত্যেক উপজেলা সদরের পাশে বহুতল ভবন তৈরির কথা বলেন তিনি।