আজিমপুর ও মতিঝিলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ১০-তলা ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

10842

Published on জুলাই 7, 2018
  • Details Image
  • Details Image
  • Details Image
  • Details Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাজধানীর মতিঝিল এবং আজিমপুর সরকারি কলোনি এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ১০টি বহুতল ভবন উদ্বোধন করেছেন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিদ্যমান আবাসন সুবিধা ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার অংশ হিসেবে সকালে পৃথক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মতিঝিলে ৪টি ২০ তলা ভবনে মোট ৫৩২টি এবং আজিমপুরে ৬টি ২০ তলা ভবনে মোট ৪৫৬টি ফ্লাটের উদ্বোধন করা হয়।

মতিঝিল সরকারি কলোনিতে ভবন উদ্বোধনকালে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজে সরকারি কলোনিগুলোতে কর্মচারীদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিদ্যমান আবাসন ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করার পরই তাদের জন্য উন্নত আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন।

তিনি বলেন, ‘আমি চাই কর্মস্থল থেকে ফিরে এসে আপনারা যেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি ভালো জায়গায় থাকতে পারেন।’

এ সময় তিনি সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১২৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধিসহ কর্মস্থলে তাদের পদবীগুলোকে যুগোপযোগীকরণে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর সরকারের সাফল্যের জন্য সরকারি কর্মচারীদের কর্তব্য সম্পাদনের প্রশংসা করে বলেন, আপনারা আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করাতেই এটা সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ভবনগুলোতে অবস্থানকারীদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হবার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, তাঁর সরকার বিদ্যুৎ ও পানি উৎপাদনে অনেক টাকা ভতুর্কি দিয়ে যাচ্ছে। কজেই এগুলোর ব্যবহারে সকলকে যতœবান হতে হবে, ঘর থেকে বের হবার সময় নিজের হাতেই বিদ্যুতের সুইচটি বন্ধ করের যেতে হবে, পানির কলটিও নিজেকে বন্ধ করতে হবে, যাতে পানির অপচায় না হয়।

এসব কাজ নিজের হাতে করায় কোন লজ্জা নেউ উল্লেখ করে তিনি নিজেও ব্যক্তি জীবনে এসবের চর্চা করে থাকেন বলে জানান।

প্রধানমন্ত্রী নিজের ফ্লাট এবং আশাপাশের এলাকা, লিফট, সিঁড়ি-এগুলো ব্যববহারকারীদের নিজেদেরই পরিচ্ছন্ন রাখতে সচেষ্ট থাকার সঙ্গে সঙ্গে রান্নাঘরের বর্জ্য নির্দিষ্টস্থানে ফেলার জন্য বলেন।

তিনি ভবনের আশপাশে এবং ব্যালকনিতে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, কলোনির পুরাতন ভবনগুলো ভেঙ্গে এখানে হাঁটার জায়গা, পার্ক, জলাধার, খেলার মাঠ এবং বাগান তৈরী করা হবে।

দুটি অনুষ্ঠানেই সভাপতিত্ব করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আজিমপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এবং মতিঝিলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. দবিরুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার উভয় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রী আজিমপুর কলোনির বক্তৃতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিতে আজিমপুর কলোনিতে থাকার কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ছোট ভাই শেখ কামালকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা নৌকায় করে গোপালগঞ্জ থেকে আজিমপুর কলোনিতে এসে এক আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন। জাতির পিতা তখন কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন।

নিজেকে আজিমপুর গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, এই এলাকাটি তাঁর শৈশব থেকেই অত্যন্ত পরিচিত। সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সমস্যা সমাধানে দেশ স্বাধীন হবার পর পরই জাতির পিতা কলোনির ভবনগুলোর একটি করে তালা বাড়িয়ে দেন।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় আছে বলেই আজ উন্নয়নটা দৃশ্যমান হচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ যখনই নৌকায় ভোট দিয়েছে তখনই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।’

উল্লেখ্য, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ঢাকা, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ অন্যান্য শহরে বহুতল বিশিষ্ট মোট ২৩টি আবাসিক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ সকল প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন আয়তনের মোট ৯৭০২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরো ১৯টি প্রকল্পের আওতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মোট ৮১৯০টি ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত