30224
Published on জুলাই 4, 2018প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে এক সময় বিশ্বের মানুষ মনেই করত—শুধু ভিক্ষার ঝুঁলি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এখন বাংলাদেশ ভিক্ষার ঝুঁলি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় না। আর ভবিষ্যতেও বেড়াবে না। ভবিষ্যতে যাতে না বেড়ায়, আমরা সেই ব্যবস্থাটা করার জন্যই কাজ করে যাচ্ছি।
বুধবার (৪ জুলাই) দুপুরে দশম জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশকে উন্নত করতে চাই এবং দেশের উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কাজ, কিন্তু আমরা প্রতিটি সেক্টরেই ব্যাপকভাবে কাজ করেছি।
এ সময় উচ্চশিক্ষা অর্জনে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার তুলনামূলক কম ব্যয়ের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, আমরা কিন্তু ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনাকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই। দারিদ্র্যমুক্ত করতে হলে শিক্ষাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
আজকে আমাদের দেশে অনেকেই আসছেন। প্রথম কারণটা হলো, বাংলাদেশ মাত্র এই নয় বছরের মধ্যে যে উন্নয়ন করেছে, সেই উন্নয়নে বিশ্ব আজকে বিস্মিত। যেহেতু এই উন্নয়নের ধারাটা এতো দ্রুত হয়েছে, এ কারণে আমাকে অনেকে জিজ্ঞাসা করেন, কী ব্যাপার ম্যাজিকটা কী? আমি বলি, ম্যাজিকটা কিছুই না। দেশকে ভালবাসা। মানুষকে ভালবাসি, মানুষের কল্যাণে কাজ করি, সেটাই কারণ। কারণ জাতির পিতা এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন যে স্বপ্ন নিয়ে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। এটাই আমার একমাত্র কর্তব্য বলে আমি মনে করি। সেই জন্যই এত কাজ করা সম্ভব হয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিব ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট একই সঙ্গে আসার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, আমরা প্রায় ১১ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছি। পৃথিবীর বহু উন্নত দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে চায় না। সেখানে আমরা আশ্রয় শুধু দেওয়া না, তাদের থাকার, তাদের চিকিৎসা, তাদের খাদ্য ব্যবস্থাসহ সব রকম ব্যবস্থা এতো সুশৃঙ্খলভাবে করেছি, এটাও তাদের জন্য একটা বিস্ময়।
এ ছাড়াও আমরা প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে আলোচনাও করে যাচ্ছি। সেখানে কিন্তু মারামারি-কাটাকাটি করছি না, বরং আলোচনা করে সমস্যাটা সমাধান করে এদেরকে যেন ফেরত দিতে পারি, সেই চেষ্টাটা করছি। সেকারণে সবাই এখন এখানে আসছেন (রোহিঙ্গা) দেখতে।
পাশাপাশি বাংলাদেশের উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি অর্জনের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে গ্র্যাজুয়েশন, সমুদ্র থেকে মহাকাশ পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছি, এত দ্রুত সময়ে, সেটার জন্য সকলে আজকে বাংলাদেশের দিকে দৃষ্টি পড়েছে। যে বাংলাদেশকে একসময় মানুষ মনেই করত, শুধু ভিক্ষার ঝুঁলি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এখন বাংলাদেশ ভিক্ষার ঝুঁলি নিয়ে ঘুরে বেড়ায় না। আর ভবিষ্যতেও বেড়াবেও না। ভবিষ্যতে যাতে না বেড়ায়, আমরা সেই ব্যবস্থাটা করবার জন্যই কাজ করে যাচ্ছি।
কারণ এই এ দেশে এক সময় জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস, মাদক এগুলো কারা সৃষ্টি করে গেছে? দুর্নীতিকে নীতি হিসেবে কারা নিয়েছে? দেশকে পাঁচ পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন করেছে কারা। ওই বিএনপি যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখনই তো ছিল। এখন আর বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ না। এখন উন্নয়নের রোল মডেল। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বিশ্বে আমরা এখন চলতে পারি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে যে সম্মান আমরা ফিরিয়ে এনেছিলাম, যে সস্মান আমরা অর্জন করেছিলাম, যে সম্মান হারিয়ে গিয়েছিল ৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর। আমরা পুনরায় আবার সেই সম্মান ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। দেশের মানুষের জন্য আর মানুষের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছি।