4516
Published on মার্চ 21, 2018জাতির জনকের জন্মদিনে পাওয়া নতুন এক সুখবর। উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ। জনকের জন্মদিনে এই অনন্য অর্জনের চেয়ে বড় উপহার আর কী হতে পারে। সমৃদ্ধ দেশ ও জাতির স্বপ্ন দেখেছিলেন যিনি, তাঁর জন্মদিনে বাংলাদেশের এই স্বীকৃতি তো দেশের সব মানুষের জন্যই খুশির খবর। আমরা যারা প্রবাস জীবন যাপন করি তাদের জন্য এটি উদযাপনের খবর। আজ উদযাপনের দিন। ‘এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিলো দ্বার/ আজি প্রাতে সূর্য ওঠা সফল হলো কার।’ জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিপিডি) এই ঘোষণা সংক্রান্ত চিঠি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের কাছে হস্তান্তর করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতের হাতে চিঠিটি তুলে দেন সিডিটি সেক্রেটারিয়েটের প্রধান রোলান্ড মোলেরাস। এই অর্জনের মধ্য দিয়ে অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই অসাধারণ সাফল্যের পরও যাঁদের দৃষ্টিতে সুশাসনের অভাব ধরা পড়ে, তাঁদের চশমার কাঁচটা এবার বোধহয় বদল করতেই হবে। তাহলেই তাঁরা দেখতে পাবেন, বিশ্বের কাছে কী উজ্জ্বলতায় উদ্ভাসিত আমাদের প্রিয় জন্মভুমি।
বিশ্ব ব্যাংকের বিবেচনায় বাংলাদেশ ২০১৫ সালের জুলাই মাসে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়। এখন জাতিসং ঘের মাপকাঠিতেও বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটছে। জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি), উন্নয়নশীল ও উন্নত এ তিন পর্যায়ে বিবেচনা করে। ১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক (ইভিআই) এই তিন শর্ত পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন যোগ্যতা অর্জন করল, ২০২৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল (ইকোসক) এর মানদণ্ড অনুযায়ী উন্নয়নশীল দেশ হতে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হয় কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, জাতিসংঘের হিসাবে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ১২৭৪ ডলার। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, মাথাপিছু আয় এখন ১৬১০ ডলার। ইকোসকের মানবসম্পদ সূচকে উন্নয়নশীল দেশ হতে ৬৪ পয়েন্টের প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশের আছে ৭২। অর্থনৈতিক ঝুঁকির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ২৫ দশমিক ২। এই পয়েন্ট ৩৬ এর বেশি হলে এলডিসিভুক্ত হয়, ৩২ এ আনার পর উন্নয়নশীল দেশে যোগ্যতা অর্জন হয়।
আজ আমাদের বড় আনন্দের দিন। জাতির জনকের জন্মদিনে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেল এর চেয়ে বড় আনন্দ তো আর কিছু থাকতে পারে না। কিন্তু এই আনন্দের জোয়ারে ভেসে গেলে চলবে না। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ায় আত্মতুষ্টিতে না ভুগে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বজায় রাখতে নতুন উদ্যমে কাজ করতে হবে সবাইকে। অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার করতে হবে। আমাদের এই অগ্রগতি বজায় রাখতে হবে। ২০২১ সাল নাগাদ আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে জাতি হিসেবে আমাদের সম্মিলিত চেষ্টা এই দেশ বিশ্বের বিস্ময় হবেই হবে।