রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ আরো বাড়বে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

4809

Published on ফেব্রুয়ারি 19, 2018
  • Details Image
    সোমবার বিকেলে গণভবনে এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সম্প্রতি ইতালী ও ভ্যাটিকান সিটি সফরকে খুবই সফল ও ফলপ্রসূ অভিহিত করে আশা প্রকাশ করেছেন যে পোপ ফ্রান্সিস ও কার্ডিনালের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ আরো বৃদ্ধি পাবে।

প্রধানমন্ত্রী সোমবার বিকেলে গণভবনে এক জনকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সার্বিক বিবেচনায় ইতালী ও ভ্যাটিকানে আমার এ সফর অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ হয়েছে বলে আমি মনে করি। আশা করা যায়, এর মাধ্যমে বলপ্রয়োগে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ আরো বৃদ্ধি পাবে।

অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পোপের আমন্ত্রণে তিনি ১২ ফেব্রুয়ারি ভ্যাটিকান সিটি পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট এফ হংবো’র আমন্ত্রণে ১৩ ফেব্রুয়ারি রোমে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির গভর্নিং কাউন্সিলের ৪১তম সভায় যোগদান করি।’

প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়নশীল দেশের পল্লী অঞ্চলে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইফাদ বৈঠকে তাঁর মূল বক্তব্য উপস্থাপনের কথা উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৪ সালে বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনের সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের বিশেষায়িত আর্থিক সংস্থা হিসেবে ইফাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, ‘ইফাদ কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন বিশেষতঃ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। ইফাদের সদস্য দেশসমূহ কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও আলোচনা করে। এছাড়াও এই সভায় যুব উন্নয়ন এবং নারীর অধিকতর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিনিয়োগ এবং অংশীদারিত্বমূলক সহযোগিতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ৪০ বছর ধরে ইফাদ বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগণের ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা উন্নয়নে নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করে আসছে। সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার পর তাদের সর্বপ্রথম প্রকল্পটি বাংলাদেশে গ্রহণ করে। সংস্থাটি এ পর্যন্ত ৭৮২ মিলিয়ন ডলার অনুদান এবং স্বল্পসুদে ও সহজ শর্তে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য ঋণ দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ আন্তর্জাতিক ফোরামের গভর্নিং কাউন্সিলের সভায় তাঁর উপস্থিতি এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে ইফাদ’র সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সভায় তাঁর মূল প্রবন্ধে তিনি কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন ও সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন। গ্রামীণ যুবশক্তির উন্নয়নে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিনিয়োগের গুরুত্ব এবং পল্লী জনগণের ক্ষমতায়নে স্থানীয় সরকারের ভূমিকার বিষয়েও আলোকপাত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য উৎপাদনের সাফল্য তুলে ধরি এবং বাংলাদেশের জনগণের যে কোন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার অভিনব ক্ষমতার কথা তুলে ধরে প্রতিকূল পরিবেশেও আমাদের কৃষিজীবীরা যে খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়ে চলেছে তা বিশ্ববাসীকে অবহিত করি এবং জাতীয় পঞ্চবার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় কৃষিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ বাস্তবায়নে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার বিষয়টিও আমার বক্তব্যে প্রতিফলিত হয়।’

ছবিঃ ইয়াসিন কবির জয়

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত