6617
Published on জানুয়ারি 16, 2018বাড়ানো হচ্ছে সমুদ্র নিরাপত্তা। স্থাপন করা হবে আধুনিক দুটি নিরাপত্তা সিস্টেম। ফলে জাহাজ ও সাগর তীরের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক কনভেনশনেরও বাধ্যবাধকতা পূরণ হবে। এ ছাড়া সমুদ্র নিরাপত্তায় নজরদারি বাড়ানো, নৌ-পরিবহন সহায়তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর সমুদ্রতীরভিত্তিক সুবিধা বাড়ানো ও পরিচালনা এবং সামুদ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজ করা হবে। অর্থাৎ সমুদ্র ঘিরে নানা উদ্যোগ আধুনিক করা হচ্ছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ‘জিএমডিএসএস এবং ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম স্থাপন’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৪৫৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথম দিকে ৩৭০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা খরচ ধরা হলেও বর্তমানে তা বাড়ানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদও।
২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ থাকলেও বর্তমানে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রকল্পটির বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইউনাইটেড ন্যাশনস কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্যা সি (ইউএনসিএলওএস) এবং সেফটি অব লাইফ অ্যাট সি (এসওএলএস) কনভেনশনের অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌ-নিরাপত্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত শর্তগুলো বাস্তবায়ন করতে দায়বদ্ধ।
গ্লোবাল মেরিটাইম ডিসট্রেস এন্ড সেফটি সিস্টেম (জিএমডিএসএস)-সহ বেতার যোগাযোগের জন্য সমুদ্র উপকূলীয় স্থাপনা, ভেসেল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, জাহাজের তথ্য প্রদান পদ্ধতি, নৌ-চালানো সহায়তা, জাহাজের নিরাপত্তা সতর্কীকরণ পদ্ধতি, দূরবর্তী জাহাজ চিহ্নিতকরণ এবং গতিবিধি পর্যবেক্ষণ বিষয়ে লং রেঞ্জ আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ট্র্যাকিং অব সিপস (এলআরআইটি) কার্যক্রমগুলো এসওএলএস নিরাপত্ত অনুযায়ী করা জরুরি।
কিন্তু বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল)-এর মাধ্যমে পরিচালিত মোংলা এবং ছিলিমপুর বিভিন্ন রেডিও স্টেশনের এর যন্ত্রপাতি বা জনবল নেই। সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার ও কতুবদিয়াতে তিনটি লাইট হাউজ (বাতিঘর) রয়েছে যেগুলো অনেক পুরনো এবং মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ না পাওয়ার ফলে লাইট হাউজগুলো যথার্থ কার্যকর নয়। তা ছাড়া কুয়াকাটা, নিঝুম দ্বীপ, ঢালচর ও দুবলার চরে আরও ৪টি লাইট হাউস স্থাপন করা প্রয়োজন। এ জন্য ৩৭০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা খরচে প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ১১ মার্চ একনেকে অনুমোদিত হয়।
পরবর্তীকালে ৪৫৯ কোটি ৯ লাখ টাকা খরচে গত বছরের জানুয়ারি হতে ২০১৯ সালের জুনে প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হলে গত বছরের ২৬ অক্টোবর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার পর পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (আরডিপিপি) প্রকল্পের ব্যয় ৪৫৫ কোটি ৯৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা খরচে ধরা হয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে, ২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৮৯ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, ৩ হাজার ৪৫০ মিটার বাউন্ডারি এবং রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, সিকিউরিটি গার্ড রুম নির্মাণ, ইন্টারনাল এপ্রোচ রোড, ৭৫ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট ৬টি উপকুল রেডিও স্টেশনের জন্য, ৪৫০ মিটার স্টিল টাওয়ার নির্মাণ, ইন্টারনাল ইলেক্ট্রিক ওয়ার্কস, ফাইয়ার ফাইটিং ওয়ার্কস, সিভিল ওয়ার্কস, ২টি যানবাহন ক্রয়, ৩টি কেবিন টাইপ পেট্রোল বোট ক্রয় এবং ৫৮ জনের স্থানীয় ও ২৫ জনের বৈদেশিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সমুদ্রে জাহাজ চলাচলে এর নিরাপত্তা, নজরদারি, নৌ-পরিবহন সহায়তা ও ২৪ ঘণ্টা নেভিগেশনাল যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সমুদ্রতীর ভিত্তিক অন্যান্য সুবিধাদি স্থাপন ও পরিচালনা করা সম্ভব হবে এবং আন্তর্জাতিক কনভেনশনের চাহিদা পূরণ হবে।
সৌজন্যেঃ সারাবাংলা.নেট