বিএনপি আমলে সরকারি পেশাজীবীদের ওপর খালেদা সরকার ও তারেক সিন্ডিকেটের নিপীড়ন

749

Published on আগস্ট 3, 2023
  • Details Image

মুখরোচক কথার মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রের সরকারি কর্মচারীদের বিভ্রান্ত করে পক্ষে টানার কূটকৌশল নিয়েছে তারেক রহমান। অথচ বিএনপি সরকারের সময় দেশজুড়ে সব পেশার সরকারি লোকদের ওপরে সীমাহীন নির্যাতন চালানো হয়েছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকাতেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনোই গণপ্রজাতন্ত্রের দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের জীবনে এতো দুর্বিষহ সময় আসেনি। এমনকি সরকারে না থেকেও নিরীহ চাকরিজীবীদের ওপর পেট্রোলবোমা ছুড়ে হত্যাযজ্ঞ পর্যন্ত চালিয়েছে এই বিএনপির সন্ত্রাসীরা। দেশের মানুষের স্মৃতি থেকে এসব বীভৎস ঘটনা এখনো মুছে যায়নি। তারেক রহমান ভুলে গেছেন যে, পুরনো গণমাধ্যমের পাতা উল্টালেই এসব ঘটনা তথ্যপ্রমাণসহ এখনো পাওয়া যায়। আসুন সংক্ষেপে একবার বিএনপি সরকারের সময় সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর নিপীড়নের ঘটনার কিছু নমুনা জেনে আসি..

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভের পরপরই দেশজুড়ে তাণ্ডব শুরু করে বিএনপি-জামায়াত জোট। শিবির, ছাত্রদল, যুবদলের সন্ত্রাসীদের হত্যা, লুটপাট, ধর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশের মানুষ। এমনকি খড়গ নেমে আসে সাধারণ সরকারি চাকরিজীবীদের ওপরও। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া যেসব কর্মকর্তা প্রশাসন ও পুলিশের বিভিন্ন পদে ছিলেন; গণহারে চাকরিচ্যুত করা হয় তাদের। এর আগে, ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত অবৈধভাবে দেশের ক্ষমতা দখলকারী স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের সময়েও একই কাজ করেছেন তিনি। অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনের অজুহাতে রাতারাতি কয়েক হাজার সেনা-নৌ ও বিমান বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্যকে বিচারের নামে রাতারাতি হত্যা করেন খালেদা জিয়ার স্বামী জিয়াউর রহমান।

জিয়াউর রহমানের দেখানো পথেই পরবর্তীতে হেঁটেছেন খালেদা জিয়া। ১৯৯১ সালে প্রথমবার সরকার গঠনের পর কুখ্যাত রাজাকারদের রাজনীতির নামে ক্ষমতায়ন করেন তিনি। পরের বার ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রশাসনকে রাজনীতিকরণের উদ্দেশ্যে চাকরিজীবীদের ওপর খড়গ চালান খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়ার নির্দেশে প্রশাসনের দক্ষ ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের গণ-চাকরিচ্যুত, বরখাস্ত ও বদলি: 

২০০১ সালের ৬ ডিসেম্বরের প্রথম আলো পত্রিকা থেকে জানা যায়, ১০ অক্টোবর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার গঠনের পর ১৫ জন সচিবের রদবদলের মাধ্যমে প্রশাসনে অস্থিরতা শুরু করে। এরপর সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও নারী কর্মকর্তাসহ ৫০ জনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল এবং বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। ৩৬ জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ প্রশাসন ক্যাডারের শতাধিক কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়। অতিরিক্ত আইজিসহ পুলিশের ৯ জন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয় বাধ্যতামূলক অবসরে। এমনকি বিএনপি-জামায়াত নেতাদের রাজনৈতিক সুপারিশ অনুসারে সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসক, পুলিশের এসপি-ওসি প্রভৃতি তিন শতাধিক পদে ব্যাপক রদবদল করা হয়।

যাদের চাকরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক অবসর, ওএসডি বা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে; তাদের কারো বিরুদ্ধেই অদক্ষতা বা অযোগ্যতা বা দুর্নীতির কোনো অভিযোগ ছিল না। সরকারের পক্ষ থেকেও তেমন কোনো অভিযোগ উত্থাপন করা হয়নি। এমনকি ২০০১ সালের তত্ত্বধায়ক সরকারের সময় মাত্র কয়েকমাস আগে 'নিরপেক্ষ' হিসেবে নিয়োগ দেওয়া শতাধিক সরকারি কর্মকর্তাকেও বিএনপি-জামায়াত সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছিল। এর মূল কারণ, দক্ষ কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিয়ে রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট লোকদের নিয়োগের পথ সৃষ্টি করা।

এমনকি সিনিয়র যাদের অন্যায্যভাবে পদচ্যুত বা কর্মহীন করা হয়েছিল, তাদের সবাই ১৯৭৩-সালের ব্যাচের মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা। তারেক রহমান ও হাওয়াভবনের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে গণহারে সর্বস্তরের সরকারি পেশাজীবীদের চাকরিচ্যুত, ওএসডি এবং রদবদলের ফলে কর্মকর্তাদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। এমনকি হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য রাজনৈতিক আনুকূল্য পাওয়ার আশায় ছোটাছুটি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন পেশাজীবীরা। ফলে ভেঙে পড়ে চাকরিবিধি ও চাকরির কাঠামো। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে প্রশাসন।

অনৈতিক কথা না শুনলেই হাওয়াভবনের মাধ্যমে ডিসিদের স্টান্ড রিলিজ করাতো বিএনপির এমপিরা:

এদিকে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি নেতাদের কথামতো ওঠা-বসা না করলে সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু করতো তারা। এমনকি তাদের অন্যায্য নির্দেশ সঙ্গে সঙ্গে পালন না করলে তারেক রহমান ও হাওয়াভবনে যোগাযোগ করে স্টান্ড রিলিজ করা হতো এসপি-ডিসির মতো সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরও।

এরই এক সামান্য উদাহরণ- খালেদা জিয়ার শাসনামলের ৫ বছরের বরগুনা থেকেই ৫ ডিসিকে বদলি করিয়েছেন তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বিএনপি নেতা এবং বরগুনা-২ আসনের (বামনা-পাথরঘাটা) এমপি নুরুল ইসলাম মনি। সরকারি জমির বন্দোবস্ত, ঠিকাদারি কাজের নামে লুটপাট, নিয়োগ বাণিজ্য প্রভৃতি অপকর্মে বাধা দেওয়ায় ডিসিদের ওপর এই নিপীড়ন চালানো হয়। সেই ভুক্তভোগী ডিসিরা হলেন- আবুল কাশেম, আলিমুশশান, মো. শফিকুল্লাহ, ফারুক আহমেদ এবং আবুল মনছুর মো. ফয়জুল্লাহ। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিবেদনে এই বিষয়ে বলা হয়, এমপির স্ত্রী শায়লাকে বরগুনা জেলা পরিষদের সামনে ৩০ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত না দেওয়ায় ডিসি ফারুক আহমেদকে ষঢ়যন্ত্র করে বদলি করানো হয়।

এমনকি ২০০১ সালে নির্বাচনে বিরোধিতা করায় ওই বছরই আবেদ মাস্টারের বাড়িতে হামলা করে মনির ৫০-৬০ জনের ক্যাডার বাহিনী। তার বড় ভাই মালেক ফরাজীর হাতের কব্জি কেটে নেয় তারা। সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় ঘরবাড়ি। এরপর আবেদের পরিবার এই ঘটনায় মামলা দায়ের করলে, আবেদের নামে পাল্টা মামরা দায়ের করে তাকে জেলে ঢোকায় এমপি মনির বাহিনী। ২০০৬ সালে আবেদ মাস্টারের জমি দখল করে বিএনপির কার্যালয় বানায় তারা।

জিয়া পরিবারের সদস্যরা অনিয়ম করে ঋণ দিতে বাধ্য করতো সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের:

এমনকি ব্যাংকিং সেক্টরে থাকা সরকারি ব্যাংকারদের ওপর চাপ দিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে শত শত কোটি টাকার ঋণ তুলে নিত বিএনপি নেতারা। ফলে পরবর্তীতে ফেঁসে যেতেন ওইসব ব্যাংকাররা। ২০০৭ সালের ১ আগস্ট দৈনিক সমকালের প্রতিবেদনে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে ঋণের নামে ব্যাংক সেক্টরে সুপরিকল্পিত লুটপাট চালানো হয়েছে তারেক রহমানের অফিস হাওয়া-ভবন থেকে।

সোনালী ব্যাংকের রমনা ও নারায়ণগঞ্জের শাখা থেকে নিয়মবর্হিভূতভাবে ঋণের নামে লোপাট করা হয় ৪০০ কোটি টাকা। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ এস্কান্দারের প্রতিষ্ঠান উডল্যান্ড, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ জসীম উদ্দীনের প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ট্রেড, হাওয়া ভবনের লোক হিসেবে পরিচিত আকরাম হোসেনের মাস্ক অ্যাসোসিয়েট; জিয়া পরিবারের মালিকানাধীন রহমান ইন্টারন্যাশনাল, রহমান ট্রেডিং প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার অর্থ লুটপাট করা হয় ব্যাংক থেকে।

পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে যখন ব্যাংকখাতে দুর্নীতিবাজদের ধরপাকড় শুরু হয়, তখন ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়- বনানীর হাওয়াভবন থেকে তালিকা দিয়ে ওই ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাক টু ব্যাক এলসির বিপরীতে এই ঋণ ছাড় করতে বাধ্য করা হয়েছে ব্যাংকারদের। এসব ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। পরে আর ওই ঋণ শোধ করেনি প্রভাবশালীরা। ফলে ফেঁসে যান কর্মকর্তা।

সরকারি চিকিৎসকদের নিজ হাতে পেটাতেন তারেকঘনিষ্ঠ বিএনপির এমপিরা:  

শুধু চাকরিচ্যুতি, ওএসডি, বদলি, অনিয়মে বাধ্য করাই নয়; সরকারি চাকরিজীবীদের নিজ হাতে পেটাতেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আশীর্বাদপুষ্ট বিএনপি নেতা ও এমপিরা। ২০০৬ সালের ১০ এপ্রিলের পত্রিকার খবরে দেখা যায়, নওগাঁর বিএনপি নেতা ও এমপি শামসুজ্জোহা খান হাসপাতালের ডাক্তারসহ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎকদের নিজ হাতে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন।

জরুরি রোগীদের চিকিৎসা বাদ দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের আগে সেবা না দেওয়ায় এই কাণ্ড ঘটান তিনি। বিসিএস ডাক্তার তাহমিদুর রহমানসহ চারজন সরকারি কর্মচারী এই ঘটনায় নির্মমভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে আহত হন। এরপর হাওয়াভবনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে তদবির করে নির্যাতনের শিকার চিকিৎসককে চাকরি থেকে বরখাস্ত পর্যন্ত করায় এই বিএনপি সরকারের এমপি জোহা।

দুর্নীতিতে রাজি না হলে সৎ কর্মকর্তাদের মন্ত্রণালয় থেকে তাড়িয়ে দিতেন খালেদা জিয়ার মন্ত্রীরা:

এমনকি অনিয়মে রাজি না হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাকে মন্ত্রণালয়ছাড়া করেন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বিএনপি নেতা এবং প্রতিমন্ত্রী মির্জা আব্বাস। হরিলুটের নিয়োগ বাণিজ্যে বাধা দিলে সরকারি কর্মকর্তাদের পোস্টিং করানোটা ছিল তার অভ্যাস।

১৭ জুন ২০০৭ সালের সমকাল পত্রিকা থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালের শেষের দিকে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে ৭১ জনকে দ্রুততার সাথে চাকরি দেয় প্রতিমন্ত্রী আব্বাস। ২০ আগস্ট পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর, শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪ থেকে ৬ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়। কিন্তু এই হরিলুটের নিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সংস্থার (জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ) তৎকালীন চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান। এরপর প্রতিমন্ত্রী আব্বাস তাকে সাভারে প্রশিক্ষণে পাঠানোর নামে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়।

এরপর ৬ অক্টোবর একই প্রশ্নে- দুই শিফটে- ভিন্ন ভিন্ন সব পদের পরীক্ষা হয় এবং ২০ অক্টোবর তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এই নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে এসব ঘটনা প্রকাশ করেন।

থানায় ঢুকে পুলিশ সদস্যদের সামনে প্রকাশ্যে ওসিকে মারতো তারেকের আশীর্বাদপুষ্ট বিএনপি নেতারা:  

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে তারেক রহমানের ডানহাত বলে পরিচিত ছিল পটুয়াখালীর বাউফলের এমপি শহিদুল আলম তালুকদার। তার লুটপাট ও সন্ত্রাসে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, থানার পুলিশ পর্যন্ত নিরাপদে থাকতে পারতো না। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায়, ২০০২ সালে ৮ মে স্থানীয় প্রভাষক ও সাংবাদিক মঞ্জুর মোর্শেদকে পিটিয়ে আহত করে সে। এলাকাছাড়া করে একাধিক সাংবাদিককে। এরপর প্রেসক্লাবে তালা দেয়।

২০০৪ সালে বাউফল থানায় ঢুকে ওসি কাজী হানিফকে মারধর করে শহিদুল।

এমনকি আওয়ামী লীগ করার কারণে এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে পিটিয়ে উলঙ্গ করে ঘোরায় তার ক্যাডার বাহিনী। এসব ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এই শহিদুলের টিকিটিও ছুঁতে পারেনি কেউ। উল্টো তার বাহিনীর কোনো সন্ত্রাসী পুলিশের হাতে আটক হলে, নিজে তাদের ছিনিয়ে আনতেন এই নিপীড়ক বিএনপি নেতা শহিদুল এমপি।

অতর্কিত হামলা ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে শতাধিক পুলিশকে হতাহত করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা:

পরবর্তীতেও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জিম্মি করে ২০১৪ সালের নির্বাচনে ক্ষমতা দখলের নীলনকশা করেছিল বিএনপি-জামায়াত চক্র। ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই জনকণ্ঠের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হরতালের নামে দেশজুড়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালে বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের মিছিল থেকে অতর্কিত সশস্ত্র হামলায় রাজধানীর শাহজাহারপুরে গুরুতর আহত হন পাঁচ পুলিশ সদস্য। পুরান ঢাকার বংশালে ওসির গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ও ককটেল নিক্ষেপ করে ছাত্রদল-শিবিরের ক্যাডাররা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জামায়াতের উপর্যপুরি পেট্রোলবোমা হামলায় মৃত্যু ঘটে পুলিশের জামাল নামের একজন কনস্টেবলের। তাদের হামলায় গুরুতর আহত হন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা পুলিশের এসআইসহ তিন পুলিশ সদস্য। বগুড়ায় পুলিশের ওপর পিকেটিং এবং উপর্যপুরি ককটেলের আঘাতে পিএসআই জুলহাম ও কনস্টেবল রমজান নামের দুজন পুলিশ গুরুতর আহত হন। বগুড়া থানার ওসি শহিদ আলম অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।

১৬ জুলাইয়ের পত্রিকার সংবাদে জানা যায়, হরতালের নামে ঢাকার বাংলামোটর পুলিশ বক্সে মোটরসাইকেল নিয়ে অতর্কিত বোমা হামলা এবং মহাখালীর ওয়্যারলেস এলাকায় পুলিশের একটি পিকআপ-ভ্যানে পেট্রোল বোমা মেরে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসীরা।

১৫ জুলাই জনকন্ঠের সংবাদে থেকে জানা যায়, রাজধানীর পল্টনের সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় এএসআই রকিবুলকে থামিয়ে মাটিতে ফেলে বর্বরভাবে পেটায় জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখানে অতর্কিত সশস্ত্র মিছিল বের করে আশেপাশের বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস ও কার পুড়িয়ে দেয় তারা। এছাড়াও পল্টন, বিজয়নগর এলাকায় পুলিশের সহকারী কমিশনারের গাড়ি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে পেট্রোল বোমা মেরে অগ্নিসংযোগ এবং ভাংচুর চালায় এই সন্ত্রাসীরা।

সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালেও দেশজুড়ে থানালুট এবং পুলিশ ফাঁড়িতে রাতের অন্ধকারে নিরস্ত্র ঘুমন্ত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং অগ্নিসংযোগ, দিনের বেলায় টহল পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর, এমনকি পেট্রোল বোমা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রায় বিশ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা এবং শতাধিক পুলিশ সদস্যকে আহত করে এই বিএনপি-জামায়াত চক্র।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত