1098
Published on মার্চ 22, 2023আজ ২১ মার্চ, মঙ্গলবার, সকাল ১১টায়, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্কুল মাঠ, বংশাল (বাংলাদেশ মাঠ সংলগ্ন) বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ডের ইউনিটসমূহের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলন উদ্বোধন করেন-শেখ ফজলে শামস্ পরশ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন-জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; মাননীয় মন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
উদ্বোধকের বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, তৃণমূল কর্মীরাই আমাদের প্রকৃত শক্তি। তাদের পরিশ্রম এবং শক্তির উপর ভর করেই আমরা নেতা হই, আমাদের রাজনীতি প্রসারিত হয়। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কখনও বেঈমানি করে না, বেঈমানি করি আমরা নেতারা। নেতাদের বলবো, আমাদের তৃণমূল কর্মীদের সম্মান দিয়ে কথা বলবেন, ওরাই আমাদের প্রধান ভরসা। ওরাই বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রকৃত প্রধান সৈনিক। ওরা আছে বলেই আমরা নেতা। তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, রাজনীতিতে নৈতিকতা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন নেতা নৈতিক স্খলনজণিত অপরাধের কারণে দ-প্রাপ্ত হলে পৃথিবীর কোন দেশেই তিনি রাজনীতি করতে কিংবা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। খালেদা জিয়া যে অপরাধের কারণে দ-প্রাপ্ত, এটি শুধু নৈতিক স্খলনজণিত অপরাধই নয়, এতিম শিশুদের কল্যাণে রক্ষিত অর্থ আত্মসাতের কারণে দ-প্রাপ্ত। এই ধরণেই জঘন্য অপরাধের আভিযোগ পৃথিবীর খুব কম রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধেই শোনা যায়। আমাদের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী দ-প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি নির্বাচন করতে পারে না। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত ইতোমধ্যে খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। এ ধরণের কৃতকর্ম করার জন্যই আসলে বিএনপি এখন নির্বাচনে যেতে চাচ্ছে না; এই বিষয়টি এখন পরিষ্কার। নির্বাচনে যাওয়ার শক্তি বা ক্ষমতা তাদের নাই। তিনি আরও বলেন, আমার বিশ্বাস, দেশ, জাতি, সমাজ, পরিবারসহ সব স্থানে এমনকি বিরোধী রাজনীতিতেও সঠিক নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ। একটা পরিবারে যদি সঠিক নেতৃত্ব না থাকে, তাহলে ঐ পরিবারে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে না। সমাজেও সঠিক নেতৃত্বের অভাবে হানাহানি, মারামারি, সহিংসতা দেখা দেয়। নেতৃত্বের সংকট থাকলে কোন দেশই উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হতে পারে না। বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন-অগ্রগতির রোল মডেল; যেটা শুধু সম্ভব হয়েছে যোগ্য ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে। সেই নেতৃত্বের নাম বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য, তাঁকে পুনরায় ২০২৪ সালে নির্বাচিত করার জন্য রাজনৈতিকভাবে আমাদের রাজপথে, মাঠে-ময়দানে থাকতে হবে, জনগণের পাশে থাকার কাজ অব্যাহত রাখতে হবে এবং ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে। একই সাথে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। তিনি উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের কাছে আমার বার্তা আমাদের দেশপ্রেম আনতে হবে আর দেশপ্রেম দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদেরকে শহীদদের রক্তের মূল্য দিতে হবে। প্রেম এবং ভালবাসার সাথে সাথে কিছু দায়িত্ব আসে। আমরা কি সেই দায়িত্ব পালন করি? মহান স্বাধীনতার সাথে সাথে অর্পিত হয়েছিল বহুমাত্রিক দায়িত্ব। দেশ গড়ার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা অনেকে নিজেদেরকে ‘মুজিবাদের’ সৈনিক বলে দাবি করি। মুজিব মানে দেশপ্রেম, দেশের মানুষের জন্য ত্যাগ শিকার করা, জাতীয়তাবোধ, সততার রাজনীতি এবং সেবামূলক রাজনীতি। এই তাৎপর্যগুলো বুকে ধারণ করে আগামীর প্রজন্মের উন্নত দেশ গড়ার কাজে মননিবেশ করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে বিদেশিদের মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজেদের চেহারা দেখুন। পৃথিবীর কোন দেশে ত্রুটিমুক্ত গণতন্ত্র আছে? যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন, তাদের দেশেও গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার আগে ঘরের খবর নিন। তিনি উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজও তার পরাজয় মেনে নেননি। বিচারবহির্ভূত হত্যার কথা বলেন, আপনাদের দেশেও (যুক্তরাষ্ট্র) গান অ্যাটাক হয়। অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজেদের চেহারা দেখুন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে ত্রুটিমুক্ত করতে শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনি ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আইনগতভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।’
বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে, লবিস্ট নিযোগ করেছে অভিযোগ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যতই নালিশ করুক, বিদেশিদের কথায় বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেবে না।’ বিএনপির আন্দোলন কাদায় আটকে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের এই গাড়ি আর উঠবে না। তাদের আন্দোলনে জনগণ নেই। নেতাকর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাই তাদের এখন অবলম্বন ষড়যন্ত্র, নাশকতা ও চোরাগোপ্তার পথ। সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।’ শেখ হাসিনার মতো দেশের এত উন্নয়ন অর্জন আগে কোনও নেতা করতে পারেননি বলেও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জননেতা ওবায়দুল কাদের।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ঢাকার রাজপথে ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তর এবং দক্ষিণের নেতাকর্মীরা যে কোনো সময় যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজের জীবন বাজি রেখে প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়েছে। এই দক্ষিণ যুবলীগ থেকে নূর হোসেন-ফাত্তাহ হয়েছে, পোস্টার হয়েছে, তারপরও শেখ হাসিনার প্রশ্নে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আপোস করেনি। প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামাত যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণসহ সারাদেশের যুবলীগের নেতা-কর্মীরা সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত আছে, থাকবে ইনশাআল্লাহ।
এছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের প্রেসডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর ড. রেজাউল কবির, সহ-সম্পাদক এহতাসামুল হাসান ভূইয়া রুমি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মুক্তার আক্তার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।