২০১৩ সালে জামায়াত-শিবিরের হিংস্রতা: রাজনীতির নামে দেশজুড়ে আগুন-সন্ত্রাস ও কুপিয়ে হত্যাযজ্ঞ

1170

Published on ফেব্রুয়ারি 22, 2023
  • Details Image

নির্বাচন এলেই বিভিন্ন অজুহাতে হত্যাযজ্ঞ ও নাশকতা চালাতে শুরু করে জামায়াত-শিবির। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন বানচাল এবং ২০০১ সালের স্টাইলে কেন্দ্র দখল করে ছাপ্পা ভোট করে ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে ছয় মাস আগে থেকেই বোমাবাজি, অগ্নিসন্ত্রাস ও কুপিয়ে হত্যার মিশন শুরু করে তারা। এমনকি পবিত্র রমজান মাসের দিন-দুপুরেও ঢাকার রাস্তায় পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ধরে নির্মমভাবে পেটায় এই খুনিচক্র।

২০১৩ সালে দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের হাট-বাজার, বাড়ি-ঘর, স্কুল-কলেজ সর্বত্র পেট্রোল বোমা মেরে শত শত নিষ্পাপ শিশু, নারী ও কর্মজীবী মানুষকে আজীবনের জন্য পঙ্গু করে দেয় জামায়াত-শিবির চক্র। প্রতিটি স্থানের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সামাজিক চলাচল পর্যন্ত বাধাগ্রস্ত করে। রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করে এই জামায়াত-শিবিরের দুর্বৃত্তরা দিনদুপুরে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের।

২০১৩ সালের ২ জুন দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সংবাদে জানা যায়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ড. সুমনকে হাসপাতালে প্রবেশের পথে অতর্কিত কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে চিহ্নিত শিবির ক্যাডাররা। কিন্তু সুমনের আর্ত চিৎকারে আশাপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাকে হত্যা করতে হয় সন্ত্রাসীরা। কিন্তু শিবিরের অস্ত্রধারী নেতাকর্মীদের এলোপাতারি কোপে গুরুতর আহত হন ড. সুমন। তাকে দ্রুত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

১২ জুলাই জনকণ্ঠের খবরে বলা হয়, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু হাটে ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির। রাতে অতর্কিত হামলায় পেট্রোল ঢেলে ১৫টি দোকার জ্বালিয়ে দেয় তারা। জামায়াত-শিবিরের এই পৈশাচিক অগ্নিসন্ত্রাসে দোকানে থাকা ৯ জন ব্যক্তি গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হন এবং আহত হন বাজারের আরো ২১ জন সাধারণ মানুষ।

এদের মধ্যে ১২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অন্যদের জলঢাকা ও ডোমার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ১১ এপ্রিল রাতে সড়কে অগ্নিসন্ত্রাস ও ভয়াবহ ভাংচুর চালানো হয় কুখ্যাত শিবির নেতা ফেরদৌস আহমেদের নেতৃত্বে। নাশকতার মামলার আসামি হিসেবে ১০ জুলাই বঙ্গবন্ধু হাট থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। এরপর ১১ জুলাই জামায়াত-শিবিরের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই এলাকার আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করে এবং হাটের দোকানগুলোতে পেট্রোল বোমা হামলা চালায়। জলঢাকার জাাময়াত শিবির নেতা ইউসুফ আলী, ইমরান, হাসনাই ও রফিকুলের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়।

১৫ জুলাই জনকন্ঠের সচিত্র সংবাদে দেখা যায়, পবিত্র রমজান মাসের ভর-দুপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে মাটিতে ফেলে চারপাশে ঘিরে রেখে নির্মমভাবে পেটাচ্ছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটে নিয়োজিত রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সর্বাধিনায়ক দেশদ্রোহী জামায়াত নেতা গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়কে কেন্দ্র করে এই নাশকতা চালায় তারা।

এর আগে, ১৪ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধে গোলাম আযম দণ্ডিত হওয়ার পরপরই ১৫ জুলাই হরতালের ডাক দিয়ে দেশজুড়ে নাশকতা শুরু করে জামায়াত-শিবির। এমনকি তাদের ঘোষিত হরতালের আগের দিনই ১৪ জুলাই রমজানের বিকালে অতর্কিত রাজধানীর সড়কে হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা করে তারা। এছাড়াও পুলিশের পল্টন, বিজয়নগর এলাকায় পুলিশের সহকারী কমিশনারের গাড়ি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে পেট্রোল বোমা মেরে অগ্নিসংযোগ এবং ভাংচুর চালায় এই সন্ত্রাসীরা।

এমনকি রাজধানীর সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় পল্টন থানার এএসআই রকিবুলকে থামিয়ে তাকে ঘিরে ধরে বর্বরভাবে মাটিতে ফেলে পেটায়। এমনকি ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা কয়েকটি মাইক্রোবাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় জামায়াত-শিবিরের মিছিলের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে ব্যাপক ভাংচুর ও নাশকতা চালানো হয় জামায়াতের নেতৃত্বে।

১৬ জুলাই জনকণ্ঠের সংবাদ জানায়, একাত্তরের খুনি-ধর্ষক ও মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার বাতিলের জন্য হরতালের নামে সাধারণ মানুষ, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে জামায়াত-শিবির। শিবিরের বর্বর পেট্রোল বোমা ও দেশীয় অস্ত্রের অতর্কিত হামলায় একদিনে সারাদেশে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন দেড়শ মানুষ। এমনকি সাতক্ষীরায় একজন আওয়ামী লীগ নেতাকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে এই জামায়াত নামের খুনিরা।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত