মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো বাংলাদেশ

1001

Published on জানুয়ারি 15, 2023
  • Details Image

সাদিকুর রহমান পরাগ:

২০২২ পেরিয়ে ২০২৩। ক্যালেন্ডারের পাতায় সূচনা হয়েছে আরেকটি নতুন বছরের। কালপরিক্রমায় অতীতকে পিছনে ফেলে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখে মানুষ। আর মানুষের সেই স্বপ্নকে ধারণ করে এগিয়ে যায় একটি দেশ। আগামীর সেই পথরেখা তৈরির জন্য অতীতের নির্মোহ মূল্যায়নও অত্যন্ত জরুরি। সেই বিবেচনায় ২০২২ সালটি বাংলাদেশের জন্য কেমন ছিল তারও পর্যালোচনা করা দরকার।

২০২২ সাল বিশ্বের জন্য একটি সংকটকালীন বছর হিসেবেই গণ্য। করোনা অতিমারির ছোবল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধকল, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় বিপর্যস্ত পৃথিবী- এসব মিলিয়ে আবর্তিত ২০২২ সাল। এ-রকম একটি সংকটময় সময়ে কেমন ছিল বাংলাদেশ?

বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২২ সাল বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। কারণ এ-বছরটি বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত গৌরবময় একটি বছর। মন্দা, যুদ্ধ, করোনা, বিএনপির মিথ্যা অপপ্রচারসহ বিভিন্ন কারণে জনমনে কিছুটা শঙ্কা সৃষ্টি হলেও পদ্মা সেতু এবং মেট্রোরেলের মতো দুটি আইকনিক স্থাপনার উদ্বোধন মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। এ দুটি স্থাপনার মাধ্যমে বিশ্বের কাছে আমরা আমাদের সক্ষমতা ও সামর্থ্যরে প্রমাণ দিতে পেরেছি।

প্রাণের পদ্মা সেতু

২০২২ সালে বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় আনন্দের উপলক্ষ হয়ে আসে প্রাণের পদ্মা সেতু। সকল দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি ২৫ জুন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন তিনি টোল প্রদান করে প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতুতে আরোহণ করেন। পরবর্তীতে এই সেতু সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আমাদের সক্ষমতা ও সামর্থ্যরে প্রতীক হয়ে ৪২টি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে আছে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নান্দনিক এই সেতু। দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে রাজধানীর সঙ্গে সংযুক্ত করেছে এই সেতু। পদ্মা সেতুকে ঘিরে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর অর্থনীতিতে গতিশীলতা এসেছে আর বেড়ে গেছে কর্মচাঞ্চল্য। এই সেতুর কারণে দেশের জিডিপি বাড়বে ১.২৩ শতাংশ বলে আশা করা হচ্ছে।

স্বপ্নের মেট্রোরেল

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বছরের শেষ চমক হিসেবে চালু হয় স্বপ্নের মেট্রোরেল। আর এই মেট্রোরেল চালুর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের পথে একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। যানজট নিরসন, যাত্রীসেবা নিশ্চিতকরণ এবং ঢাকা শহরকে একটি আধুনিক স্মার্ট শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ২০৩০ সালের মধ্যে ১২৮.৭৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ৬টি মেট্রোলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার। এরই অংশ হিসেবে উত্তরা দিয়া বাড়ি থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি-৬ এর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই এমআরটি-৬ এর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য চালু করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জুন মাসে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু করবে। ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি মেট্রোলাইন চালু হলে দিনে ৫২ লাখ ৬৬ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম হবে। সে-সঙ্গে সময় সাশ্রয় হবে, পরিবেশ দূষণ কমবে, জ্বালানি সাশ্রয় হবে।

এখানে উল্লেখ্য, যানজটের কারণে ঢাকায় প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা সময় হয়। বিশ্বব্যাংকের হিসাবমতে, ঢাকায় যানবাহনের গতি আগে ছিল ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার, যা এখন কমে ৭ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। মেট্রোরেল চালু হওয়ার ফলে প্রতিদিন সময় বাঁচবে ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার এবং অন্যান্য গাড়ি চলাচলের সময় বাঁচবে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকার।

যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫-দফা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক সংহতির আহ্বান জানিয়ে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান যুদ্ধ বন্ধে ৫-দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

প্রথম প্রস্তাব : বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে বৈশ্বিক আর্থিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করতে হবে। জি-৭, জি-২০, ওইসিডি, আইএফআই ও এমডিবি’কে এখন তাৎক্ষণিক উদ্বেগগুলো মোকাবিলার প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এসডিজি অর্থায়নের অভাব, সীমিত আর্থিক সংস্থান, ক্রমহ্রাসমান ওডিএ এবং ঋণ পরিষেবা।

দ্বিতীয় প্রস্তাব : মহাসচিব ব্ল্যাক সি গ্রেইন উদ্যোগ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আপনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য আমরা আপনাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা সংঘাতের সময় খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণব্যবস্থাকে ক্ষতির হাত থেকে দূরে রাখার জন্য ভবিষ্যতের যে কোনো উদ্যোগকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তৃতীয় প্রস্তাব : বিশ্ব বাণিজ্য পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সাহসী ও ব্যাপক উদ্যোগের প্রয়োজন এবং বিশ্ব বাণিজ্য ও রপ্তানি আয়ে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ন্যায্য অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা অপরিহার্য।

চতুর্থ প্রস্তাব : উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং কার্যকর খাদ্য সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর কৃষি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি করতে প্রযুক্তি সহায়তা, বর্ধিত ওডিএ এবং রেয়াতি অর্থায়নের লক্ষ্যে আমাদের আরও জিটুজি ও বিটুবি সহযোগিতার প্রয়োজন।

পঞ্চম প্রস্তাব : জলবায়ু সহযোগিতার জন্য বৈশ্বিক কাঠামোকে আরও কার্যকর এবং ন্যায্য করতে হবে। আমাদের আসন্ন কপ-২৭ এর সুযোগটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর উদ্বেগ নিরসনে কাজে লাগানো উচিত। আমরা অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে চাই, যাতে সার্বিক উপায়ে জ্বালানি নিরাপত্তার সমস্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় উদ্দীপনা সৃষ্টি করা যায়।

সবার জন্য ভ্যাকসিন কার্যক্রম অব্যাহত

২০২২ সালেও কোভিড অতিমারি থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মতো গত বছরেও বাংলাদেশের মানুষের জন্য করোনা ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হয়েছে। ৫ থেকে ১১ বছরের শিশুদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি চালু হয়েছে। বছরের শেষে ২০ ডিসেম্বর থেকে চতুর্থ ডোজ টিকা প্রদানও শুরু হয়েছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত বিনামূল্যে ৩৪ কোটি টিকা দেওয়া হয়েছে। দেশের জনসংখ্যার ৭৫.৪ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছে। নিম্নোক্ত ছকটি থেকে সহজেই বাংলাদেশ করোনা ভ্যাকসিন প্রদানের বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
মহামারির শুরুতে দেশে করোনা পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল একটি। আর তিন বছর পরে সেটি এসে দাঁড়িয়েছে ৮৮৩টিতে।

ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি

২০২১-২২ সালে ঘোষিত বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০২২-২৩ সালে ঘোষিত বাজেটের আকার বেড়ে হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ২ হাজার ৮২৪ ডলারে।

দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের ইতিহাসে ২০২২ সালে সৌদি আরবকে হটিয়ে প্রথমবারের মতো শীর্ষস্থানে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্রের নাম। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স আসে ৯৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, যেখানে সৌদি আরব থেকে আসে ৯৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৬৩ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা।

বিশ্বমন্দার মধ্যেও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হারে চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। কানাডায় ১৮.৪৯, জার্মানিতে ১৬.১৪, স্পেনে ২৪.৫২, ফ্রান্সে ৩৭.৭৩ ও যুক্তরাজ্যে ৩৫.৬৪ শতাংশ রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জাপান এবং ভারতসহ অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩৭.৯০ শতাংশ।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি তার সক্ষমতার প্রমাণ রেখে চলেছে। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডসহ বহুদেশের অর্থনীতিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আইএমএফ বলেছে যে ২০২২ সালে ক্রয়ক্ষমতার (পিপিপি) ভিত্তিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতি ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ এক প্রতিবেদনে বলেছে যে এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে।

এই সমস্ত তথ্য-উপাত্ত বলে দেয় যে বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি কতটা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

একশ-তে একশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় এক অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধিত হয়েছে। সারাদেশের মধ্যে গড়ে উঠেছে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। ২০২২ সালে ১০০টি সেতু এবং ১০০টি মহাসড়ক উদ্বোধন করে বিশ্বকে আরেকবার চমকে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

১০০ সেতু

২০২২ সালের ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে বিভিন্ন জেলার ১১০টি সেতুর উদ্বোধন করেন। একসঙ্গে এতগুলো সেতুর উদ্বোধন এটিও একটি বিরল ঘটনা। চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৫টি, সিলেট বিভাগে ১৭টি, বরিশাল বিভাগে ১৪টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬টি, রাজশাহী বিভাগে ৫টি, রংপুর বিভাগে ৫টি, ঢাকা বিভাগে ২টি এবং গোপালগঞ্জ জেলায় ৫টি ও কুমিল্লায় জেলায় ১টি। এই ১০০টি সেতুর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ হাজার ৪৯৫ মিটার।

১০০ মহাসড়ক

১০০ সেতু উদ্বোধনের দেড় মাস পরে ২১ ডিসেম্বর দেশের ৫০টি জেলায় ১০০টি জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিভাগে ৩২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫টি, সিলেট বিভাগে ৪টি, খুলনা বিভাগে ১৬টি, রংপুর বিভাগে ১৫টি, রাজশাহী বিভাগে ৮টি এবং বরিশাল বিভাগে ৪টি। এসব মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১৪ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০৬.৫৪ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৬২১.৬৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ১১৯৩.৩৪ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক।

নদীর তলদেশে টানেল

২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারামুখী দক্ষিণ সুড়ঙ্গের পূর্তকাজের সমাপ্তি ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে এটাই প্রথম টানেল। এটি একটা বিস্ময়। এটি আমাদের জন্য বিরাট কাজ।’ টানেলের কারণে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ই সমানভাবে উন্নত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে নদীর দক্ষিণ প্রান্তে পরিকল্পিতভাবে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। টানেলের মাধ্যমে “ওয়ান সিটি টু টাউন” গড়ে উঠবে।’

এদিকে আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গামুখী উত্তর সুড়ঙ্গের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩৬ মিটার গভীরতায় ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলের ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার প্রতিটি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট ৪টি লেন রয়েছে। আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ উড়ালসড়ক। আশা করা যাচ্ছে যে ২০২৩ সালের মধ্যেই কর্ণফুলি নদীর তলদেশে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি চালু করা হবে।

পারমাণবিক বিদ্যুতের যুগে বাংলাদেশ

২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ ২০২২ সালেও অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলেছে। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এতে দুটি ইউনিট থাকবে। প্রতিটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট। প্রথম ইউনিটের ৭০ শতাংশ কাজ এবং দ্বিতীয় ইউনিটের ৪৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ও শেষ ইউনিটের চুল্লি (রি-অ্যাকটর প্রেসার ভেসেল) স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন। আশা করা যাচ্ছে যে ২০২৩ সালের শেষের দিকে ফুয়েল লোডিংয়ের মাধ্যমে প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। পারমাণবিক নিরাপত্তা বিধানে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

পায়রা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি

দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নাব্য বৃদ্ধিতে ক্যাপিটেল ড্রেজিং, ৮টি জাহাজ (দুটি পাইলট ভেসেল, দুটি হেভি ডিউটি স্পিডবোট, একটি বয়া লেইং ভেসেল, একটি সার্ভে বোট এবং দুটি টাগবোট) নির্মাণ, বন্দরের প্রথম টার্মিনাল, ৬.৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয়-লেনের সংযোগ সড়ক, আন্ধারমানিক নদীর ওপর ১১৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ। ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর এসব নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

১২ নভেম্বর গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গসহ ৩০টি জেলার যোগাযোগ সহজ ও দ্রুততর হবে।

এদিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালি পর্যন্ত ৪৬.৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এটি সম্পন্ন হলে বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ি যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৫ মিনিট। এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ বিকল্প সড়ক হিসেবে কাজ করবে। এর ওপর দিয়ে প্রতিদিন ৮০ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। ২০২৩ সালের মধ্যে ১৯ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

৩৫ লাখ মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে দেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। তার সেই ঐতিহাসিক ঘোষণার প্রেক্ষিতে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দুই ধরনের ক্যাটাগরিতে প্রায় ৯ লাখ পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০২২ সালেও এই উদ্যোগ অব্যাহত ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত অঙ্গীকার অনুসারে ইতোমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে স্থায়ীভাবে ঘর প্রদান করে ৩৫ লাখ মানুষকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। পুনর্বাসিত এই পরিবারগুলোর জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রশিক্ষণ ও নগদ অর্থ সহায়তাও প্রদান করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে উপকারভোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৫৪ লাখ মানুষ। ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৪৯২টি উপজেলার ৬৬ হাজার ১৮৯টি পরিবারের হাতে বিনামূল্যে ঘরের চাবি তুলে দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘… এটাই সবচেয়ে বড় উৎসব, এর চেয়ে বড় উৎসব বাংলাদেশের মানুষের আর হতে পারে না… একদিনে এত মানুষকে ঘর দিতে পারলাম, এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এই সময়ের মধ্যে একজন মানুষও গৃহহারা থাকবে না। যাদের গৃহ নেই, তাদের ঘর করে দিতে পারা অসাধ্য সাধন করতে পারলাম, এর চেয়ে বড় পাওয়া আর হতে পারে না।’

মিথ্যা অপপ্রচারের ফাঁদে জাতিসংঘ

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ ‘জোর করে গুমের’ শিকার হওয়া ৭৬ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করে। ১৪ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেত ঢাকা সফরের সময় এ তালিকা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।

এই তালিকায় থাকা ৭৬ জনের মধ্যে দুজন ভারতীয় নাগরিকসহ ১১ জনের খোঁজ পাওয়া গেছে। ভারতীয় দুজন ছাড়া বাকিরা নিজ পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছে। ভারতীয় দুজন নাগরিক হচ্ছে ভারতের মনিপুর রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট-ইউএনএলফ-এর চেয়ারম্যান মেঘেন রাজকুমার ওরফে সানায়াইমা এবং মেজর পদমর্যাদার কেইথেল্লাকপাম নবচন্দ্র ওরফে শিলহেইবা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রানুযায়ী সানাইয়া রাজকুমার ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ভারতে গ্রেফতার হয় এবং ১০ বছর কারাভোগের পর ২০১৯ সালে মুক্তি পায়। আর নবচন্দ্র শিলহেইবাকে ভারতের ডাউকি সীমান্ত থেকে বিএসএফ গ্রেফতার করে। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে যে জাতিসংঘের গুম তালিকাভুক্ত ব্যক্তি শামীম উদ্দিন প্রধান গত বছর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছে। জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, জঙ্গি সংগঠনগুলোকে অস্ত্র সরবরাহ, সেনাবাহিনীর স্পর্শকাতর তথ্য পাচারসহ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগে সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকা অবস্থাতে সেনা কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমানকে সামরিক আইনে ২০১৮ সালে গ্রেফতার করা হয় এবং সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়। তালিকায় ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নিখোঁজ হওয়া বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ শফিক উল্লাহ মোনায়েমের নাম রয়েছে। রয়েছে ২০০৮ সালের ২৫ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে র‌্যাব পরিচয়ে তুলে নেওয়া মো. হাসান খানের নাম। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগেই গুম হওয়া পাহাড়ি মহিলা ফেডারেশনের (এইচডব্লিউএফ) নেত্রী কল্পনা চাকমার নামও তালিকায় রয়েছে।

এই তালিকায় ২৮ জন পলাতক দাগি আসামির নামও রয়েছে। ধারণা করা যায়, গ্রেফতার এড়াতে এসব পলাতক আসামি বিদেশে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে- জাতিসংঘের মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা কীভাবে এত বড় ভুল করতে পারে? উত্তরটি সহজ। জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত বিএনপি এবং তাদের অনুগত কিছু সংখ্যক এনজিও দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ-বিরোধী প্রচারণা চালিয়ে আসছে। তাদের এই পরিকল্পিত মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হচ্ছে অনেকে। জাতিসংঘও তাদের মিথ্যা অপ্রপচারের ফাঁদে পা দিয়েছে। কোনোরকম যাচাই-বাছাই ছাড়া এসব সংস্থার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তালিকার ওপর নির্ভর করার কারণে জাতিসংঘের তালিকায় এই ত্রুটিগুলো হয়েছে। কোনোরকম যাচাই-বাছাই না করে এই তালিকা প্রকাশ আন্তর্জাতিক সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য

সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে যে জাতিসংঘ বাংলাদেশের গুমের তালিকা প্রকাশ করলেও ২০২২ সালে বাংলাদেশ পঞ্চমবারের মতো জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৮৯টি দেশ ভোটে অংশ নেয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬০টি ভোট পেয়ে বাংলাদেশ নির্বাচিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। ভোটগ্রহণ শেষে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বাংলাদেশ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে ১৮৯ দেশ ভোট দেয়। বাংলাদেশ পেয়েছে ১৬০ ভোট।’ বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এ ধরনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের ফল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকারের উন্নয়ন ও সুরক্ষায় বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টা এবং প্রতিশ্রুতির প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতির প্রকাশ।

আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়কে সামনে রেখে অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে ব্যয় কমাতে আড়ম্বর কমিয়ে এবারের কাউন্সিল একদিনে করা হয়। কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা দশমবারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ওবায়দুল কাদের তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

যুব মহাসমাবেশ

১১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তীতে আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক ঐতিহাসিক যুব মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির সকল ষড়যন্ত্র-নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের রাজনীতির বিরুদ্ধে জবাব দিতে প্রায় ১০ লাখ নেতাকর্মীর জমায়েত ঘটে স্মরণকালের বড় এই যুব সমাবেশে। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই যুব মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

স্মার্ট বাংলাদেশ

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। ৪টি ভিত্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য ৪টি ভিত্তি ঠিক করা হয়েছে। স্মার্ট সিটিজেন অর্থাৎ আমাদের প্রত্যেকটি সিটিজেন প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে, স্মার্ট ইকোনোমি অর্থাৎ ইকোনোমির সমস্ত কার্যক্রম আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে করব ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট, যেটা আমরা ইতোমধ্যে অনেকটা করে ফেলেছি, বাকিটাও করে ফেলব এবং আমাদের সমস্ত সমাজটাই হবে স্মার্ট সোসাইটি।’ বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরে তরুণ প্রজন্মকে সৈনিক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের সৈনিক হিসেবে তোমাদের (তরুণদের) স্মার্ট নাগরিক হিসেবে প্রস্তুত হতে হবে।’

মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের ছবি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা মহামারির অভিঘাত এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিশ্ব আজ জর্জরিত। নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার খড়গে পড়ে বিভিন্ন দেশকে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পণ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে, ফলে একদিকে পণ্যের অপ্রতুলতা অন্যদিকে পণ্যের দাম বৃদ্ধি জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। তৈরি হচ্ছে বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা। বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি হুমকির সম্মুখীন। বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যায়। এ-রকম একটি পরিস্থিতির মধ্যেও ২০২২ সালে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। আর এই কৃতিত্বের দাবিদার বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ভিশনারি নেতৃত্ব।

লেখক : সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, উত্তরণ

সৌজন্যেঃ উত্তরণ

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত