আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে নির্মম নির্যাতন ও ভাঙচুর চালাতো খালেদা জিয়ার সরকার

1896

Published on ডিসেম্বর 17, 2022
  • Details Image

২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার গঠনের পরপরই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম অত্যাচার, তাদের বাড়ি-ব্যবসা লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। এর প্রতিবাদ এ বিচারের দাবিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রাজধানীতে অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেই অনশন পন্ড করতে বর্ষীয়ান নেতানেত্রীদের রাস্তার ওপর ফেলে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে খালেদা জিয়ার পেটোয়া বাহিনী। এসবের প্রতিবাদে যুবলীগের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ করলে খালেদা সরকারের নির্দেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালানো হয়।

২০০৩ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রথম আলোর পত্রিকা থেকে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঢুকে লাঠিপেটা করা হয় নেতাকর্মীদের। নির্মম লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হন যুবলীগ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাধারণ সম্পাদক ও বিরোধী দলীয় হুইপ মির্জা আজম, ঢাকার সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ, নারী নেত্রী হেলেন, হীরা এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক, ছাত্রলীগের সভাপতিসহ শীর্ষ নেতারা।

জরুরিভিত্তিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে নিয়ে তাদের চিকিৎসা করানো হয়। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে লাঠিচার্জের পর পড়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের পায়ের বুট দিয়ে লাথি মেরে নির্যাতন চালানো হয়। এমনকি দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর শেষে শতাধিক নেতাকর্মীকে গণগ্রেফতার করে জেলে ঢুকায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।

এরআগে, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনের জেতার পর, ১৫ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমানের ঘরোয়া বৈঠকে ওয়ার্ড কমিশনার ও বিএনপি নেতা হাসান আহমেদের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে বোমা হামলা চালানো হয়। এই সন্ত্রাসী হামলায় নারী নেত্রী শিলা মালেক-সহ মোট ৬ জন আওয়ামী লীগ কর্মী গুরুতর আহত হন। ৬ অক্টোবরের সংবাদ পত্রিকা আরো জানায়, জিল্লুর রহমানের গাড়িসহ ১২-১৩টি গাড়ি ভাংচুর করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরপর দেশজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের গণগ্রেফতার ও নির্যাতন করতে থাকে বিএনপি-জামায়াত।

২০০২ সালের ২৫ মার্চ জনকন্ঠের সচিত্র প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতানেত্রীদের ওপর জোট সরকারের পৈশাচিক হামলার খবর জেনে চমকে ওঠে দেশবাসী। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদা চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, মতিয়া চৌধুরী, আবদুস সামাদ আজাদ, তোফায়েল আহমেদ, আসাদুজ্জামান নূর, সোহেল তাজসহ কমপক্ষে ২০ জন কেন্দ্রীয় নেতানেত্রীকে মেরে ঢাকার রাস্তায় ফেলে রাখে খালেদা জিয়ার পেটোয়া বাহিনী।

এই পৈশাচিক ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ডাকলে, ২৯ মার্চ শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়ার সময় জোট সরকারের নির্দেশে পুলিশের সঙ্গে যুগপথ হামলা চালায় টোকাই বাহিনী। এসময় মতিয়া চৌধুরী, সেগুফতা ইয়াসমিন, মারিয়া, লিপি, শিখা, হেলেন, মেয়র হানিফ, মোখরুসুর রহমান, আবদুস সাত্তারসহ কমপক্ষে ৩০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। নারীদের রাস্তায় ফেরে বুট দিয়ে লাথি মেরে নির্যাতন করা হয়। ৩০ মার্চ জনকণ্ঠ পত্রিকায় এসব ঘটনার ছবিসহ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

২০০৪ সালের ২ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকা থেকে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের প্রতিবাদী কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে কয়েক ঘণ্টা ঢাকার রাস্তায় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দশে। এমনকি গাড়ির সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের বেধড়ক পিটুনি ও গ্রেফতার করা হয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নির্দেশে। সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে সন্ধ্যায় যখন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌঁছান শেখ হাসিন, তখন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পুরো এলাকা অন্ধকার করে ফেলে খালেদা জিয়ার সরকার।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত