3845
Published on জুন 1, 2024বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৃঙ্খলমুক্তির চূড়ান্ত সিঁড়ি হয়ে উঠেছিল গণতান্ত্রিক আন্দোলন। পাকিস্তান আমলে ধর্মের নামে শোষণ ও অন্যায়ের প্রতিবাদে বাংলার আপামর জনতা বেছে নিয়েছিল অসাম্প্রদায়িক পথে যূথবদ্ধ সংগ্রামের পথ। মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার রক্ষার জন্য জাগ্রত সচেনতাবোধ, আবহমান কাল ধরে চলে আসা স্থানীয় কৃষ্টি রক্ষা এবং জাতিগত স্বাতন্ত্র্য সমুন্নত রাখার জন্য বাঙালি জাতির কাছে অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর এই দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতা আন্দোলনের পথে জাতিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় উপস্থাপক তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এবং পরবর্তীতে শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে পুনর্গঠিত এই দলটি।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল, আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিল অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার একটি বাক্যের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করা যায়। সেদিন দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, 'আমাদের নীতি পরিষ্কার।... দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে হবে।'
অসাম্প্রদায়িক ও মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজব্যবস্থা অর্জন
মূলত আওয়ামী লীগের এই জনমুখী, গণতান্ত্রিক ও কল্যাণকামী রাজনৈতিক দর্শনের কারণে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে বাঙালি জাতির আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছিল নৌকা। ১৯৫৪ সালে তাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টকে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে ২২৩টি আসনে বিজয়ী করে বাংলার জনগণ। ধর্মের ধাণ্ডা ধরে শোষণে লিপ্ত মুসলিম লীগ মাত্র ৯টি আসন পায়। বাংলার মানুষ আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িকতাকেই গ্রহণ করেছিল মনেপ্রাণে।
পরবর্তীতে ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে একচেটিয়া ভোট প্রদানের মাধ্যমে সেই ধারাবাহিকা রক্ষা করে গণমানুষ। ধর্মের নামে ফতোয়া দিয়েও বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাতে পারেনি ধর্মব্যবসায়ীরা।
পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং দেশজুড়ে হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর, উগ্রবাদী শক্তিরা তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার ষড়যন্ত্র করে। তারা বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িতকার নীতিকে 'ধর্মহীনতা' বলে অপপ্রচার চালাতে শুরু করে। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে স্বৈরচারেরা এই অপপ্রচার চালায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। অথচ আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যারা বাংলার মাটিতে সব ধর্মের মানুষের সমানাধিকারের নীতি নিয়ে পুরো দেশকে এক সুতোয় গাঁথতে সমর্থ হয়েছিল।
স্বয়ং বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদের ভাষণে এটি স্পষ্ট করে বলেন, 'ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। পঁচিশ বছর আমরা দেখেছি- ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেঈমানি, ধর্মের নামে অত্যাচার, এই বাংলাদেশের মাটিতে এসব চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার মাধ্যমে সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।'
রাষ্ট্রে ধর্মের অপব্যবহার রোধের জন্য বঙ্গবন্ধু যেমন বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে সংবিধানে মূলনীতি নির্ধারণ করেন, তেমনি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের সঠিক ধর্মচর্চার জন্যেও সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেন।
সুষ্ঠুভাবে ধর্ম-শিক্ষা, ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের জন্য, ১৯৭৫ সালের মার্চে ইসলামি ফাউন্ডেশন স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতার পর টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার জন্য ভূমি দান, ঈদে-মিলাদুন্নবী (স), শব-ই-কদর, শব-ই-বরাত উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেই সঙ্গে অন্য ধর্মাবলম্বীরাও যাতে নিরাপদে নিজেদের ধর্ম পালন করে শান্তিপূর্ণভাবে দেশে বসবাস করতে পারে, সেজন্য বারবার উগ্রবাদীদের সতর্ক করেছেন বঙ্গবন্ধু। আধুনিক বাংলাদেশ যেনো ধর্মীয় সহিষ্ণুতার মাধ্যমে মানবিক সমাজ গঠন করতে পারে, সেজন্য ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি সঠিক ধর্মশিক্ষার জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে ৩৬০টি মডেল মসজিদ ও পাঠাগার তৈরি করে দিয়েছেন।
জনগণ এবং জনমতের গুরুত্ব সর্বোচ্চ
ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতার ওপর আস্থা রেখেই বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য আওয়ামী লীগের পতাকাতলে এক হয়েছিল পুরো দেশ। ফলে স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি শাসনতন্ত্র উপহার দিতে সক্ষম হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এমনকি মুক্তি সংগ্রামের জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও, চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধ সংগঠনের আগে জাতির কাছ থেকে ম্যান্ডেট নেয় এই দল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগ একচেটিয়াভাবে জেতার পর বিজয়ী জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেই পরিচালিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ।
নির্বাচনে বিজয়ী দলের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিনায়ক এবং অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের দিয়ে সরকার গঠনের পর, আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রণয়নের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে মহান মুক্তযুদ্ধকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা গৃহযুদ্ধ বলে অভিহিত করার সব ধরনের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যায়। বাঙালি জাতিকে একতাবদ্ধ করে স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত যুদ্ধ পরিচালনার মতো ঘটনাটি সম্ভব হয়েছে শুধু আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক আদর্শের কারণে।
পরবর্তীতে স্বৈরাচার ও উগ্রবাদীদের কারণে দুই যুগ ধরে বাংলার মানুষ নিপীড়িত হয়েছে। কিন্তু ১৯৮১ সাল থেকে প্রায় এক দশক রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে দেশের মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ। এমনকি ১৯৯১ সালে সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকায় থেকে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা বাতিল করে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে বাধ্য করেছে এই দলটি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শক্তি জনগণ, তাই আওয়ামী লীগ সবসময় গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমেই দলটি সবসময় তার লক্ষ্য পূরণ করে আসছে।
বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি সমুন্নত রাখা
এ প্রসঙ্গে বলতে গেলে, আবারো একটু পেছনে ফিরতে হবে। আওয়ামী লীগের জন্ম ও বিকাশের ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহে দেখা যায়- বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানিদের স্বৈরতান্ত্রিক বিমাতাসুলভ আচরণের প্রতিবাদ এবং বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য এক ঐতিহাসিক সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় দলটি। জাতীয়তাবাদী চেতনার শেকড়ের ওপর প্রথিত হয়ে ধীরে ধীরে প্রতিটি বাঙালির মনে জায়গা করে নেয় আওয়ামী লীগ। গণমানুষের মনে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করে এই দলটি। যে বোধের ওপর ভিত্তি করে ১৯৬৬ সালের ছয়দফাকে সমর্থন দেয় সর্বোস্তরের জনগণ। যার ফলে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণের একচেটিয়া ভোটে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগ।
১৯৫৩ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর, সারা দেশের গ্রামগঞ্জ ঘুরে ঘুরে মানুষের জীবনের যাতনা এবং চাহিদাগুলো উপলব্ধি করেছেন বঙ্গবন্ধু। পরবর্তীতে মানুষের সেসব আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে একের পর এক রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন করেছেন। তেমনি ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে এক দশক ধরে স্বাধীন বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো পরিদর্শন করে মানুষের দারিদ্রতার কারণ এবং মুক্তির উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করেন শেখ হাসিনা। ফলে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর দেশ থেকে মঙ্গা দূরীকরণ এবং মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য একাধিক উদ্যোগ নেন তিনি।
আবহমান বাংলার চিরায়ত শান্তি ও সৌহার্দ্রের সংস্কৃতি লালন করে বাঙালি জাতীয়তাবাদের অনুপ্রেরণায় নতুন প্রজন্মকেও ডিজিটাল করে গড়ে তোলার ইশতেহার দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এজন্য সার্বজনীন সুশিক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নের ওপর সবসময় জোর দিয়ৈ আসছে দলটি। কারণ শিক্ষিত এবং স্ববলম্বী মায়ের পক্ষেই সম্ভব একটি মানবিক ও স্মার্ট প্রজন্ম সৃষ্টি করা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
মানবিক রাষ্ট্র এবং সেবামূলক রাজনীতি
স্বাধীনতা অর্জনের পর, যুদ্ধকালে পাকিস্তানি ও রাজাকারদের বর্বর নির্যাতনে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেওয়া এক কোটি শরণার্থীসহ দুই কোটি স্থানচ্যুত মানুষের পুনর্বাসনের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের প্রথমধাপে তাই মাত্র তিন মাসের মধ্যে এক কোটি শরণার্থীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সমর্থ হয় আওয়ামী লীগ সরকার। একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অভ্যন্তরীণ সংস্কার ও বাস্তুচ্যুত মানুষের মাথা গোঁজার জন্য বাড়িঘর সংস্কার ও নির্মাণ করে দেন। সেই ধারাবাহিকতাতেই ১৯৯৭ সালে দুর্যোগে সব হারানো অসহায় মানুষ এবং ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্প চালু করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ তত্ত্বাবধানে তাই এখন পর্যন্ত দশ লাখ মানুষের জন্য ঘর তৈরি করে দিয়েছে সরকার।
১৯৭১ সালের ১৪ মার্চ পাকিস্তানি জান্তাদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধু প্রশাসনকে যে ৩৫টি নির্দেশনা দেন; তার মধ্যে ঘূর্ণিদুর্গত এলাকায় বাঁধ তৈরিসহ সব উন্নয়নমূলক কাজ, সাহায্য-সহযোগিতা, পুনর্বাসন ও পুনর্নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখার কথাও বলেন তিনি। যেখানে খাজনা বন্ধ করে দেওয়ার মতো কঠোর নির্দেশ কুণ্ঠাবোধ করেননি, এরকম পরিস্থিতিতেও দুর্যোগে নিমজ্জিত মানুষদের জন্য সবরকমের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর জনকল্যাণমূলক মানবিক বৈশিষ্ট্যেরই প্রতিফলন।
আওয়ামী লীগ যেমন তার নির্দেশ মেনে ১৯৭১ সালের মার্চজুড়ে কঠোরভাবে অসহযোগ আন্দোলন বাস্তবায়িত করে পাকিস্তানিদের শাসনব্যবস্থা অকার্যকর করতে সমর্থ হয়, তেমনি ১৯৭০ সালের ভয়াল বন্যা পরবর্তী ক্ষতি মোকাবিলায় যার যা সামর্থ তাই নিয়ে অসহায় মানুষদের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেয়। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের বন্যায় দেশের ৭০ ভাগ এলকাা প্লাবিত হলেও, একজন মানুষকেও মরতে হয়নি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার এবং দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ নেতৃকর্মীদের স্বেচ্ছাসেবার কারণে।
এমনকি ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার পর, যখন পুরো দেশ লকডাউন হয়ে যায়; সবাই নিজের প্রাণ বাঁচাতে ঘরে নিরাপদ আশ্রয় নিলো, তখন দেশের অসহায় মানুষদের সাহায্যের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের স্বেচ্ছাশ্রমের আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তার ডাকে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রাণ বাজি রেখে করোনাআক্রান্ত অসহায় মানুষের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
ভাইরাস আক্রান্ত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা, তাদের বাড়িতে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসামগ্রী সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এমনকি অসহায় মানুষদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে, যখন পরিবারের সদস্যরাও লাশ দাফন না করে ফেলে রাখতো; আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গিয়ে সেই লাশ পর্যন্ত ধর্মীয় রীতি মেনে দাফন করে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোন রাজনৈতিক দল করোনার ভয়াল সময়ে জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ংকর এই দুর্যোগ মোকাবিলায় স্বেচ্ছাশ্রম দিতে গিয়ে প্রাণ পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছেন অনেক নেতাকর্মী। তবুও আওয়ামী লীগ জনসেবা থামায়নি। বাঙালি জাতির মুক্তি অর্জন, সেবাদান এবং মানবকল্যাণের লক্ষ্য নিয়েই ১৯৪৯ সালে জন্ম হয়েছিল আওয়ামী লীগের। সময়ের সাথে সাথে দল যতো বেড়ে উঠেছে, নেতাকর্মীদের ত্যাগের তালিকাও তত দীর্ঘ হয়েছে। দেশের প্রতিটি সংকটে এই দলের নেতাকর্মীরা গণমানুষের সেবার ব্রতকে সঙ্গী করে দেশকে ভালোবেসে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য
রক্ত-ঘাম-শ্রম দিয়ে দেশ এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়াটাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য। আওয়ামী লীগের রাজনীতি জনস্বার্থে আত্মদানের মহিমায় উদ্ভাসিত, কারণ এটি শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বাংলাদেশের জন্ম এবং বাঙালি জাতির উত্থানপর্বের প্রতিটি স্পন্দনের সঙ্গী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদর্শন বাস্তবায়নই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচি, কারণ আওয়ামী লীগের দিব্যদৃষ্টি থেকেই বাঙালি জাতির মানবিক ও মর্যাদাবোধ সম্পন্ন রাষ্ট্রদর্শনের সৃষ্টি। মাটির সাথে মানুষের সম্পর্ক যেমন, আওয়ামী লীগের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঠিক তেমনটাই।