1217
Published on নভেম্বর 16, 2022২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় অবরোধ ও হরতালের নামে সাধারণ পরিবহন শ্রমিকদের পেট্রোল বোমা মেরে হত্যা করেছে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এমনকি দরিদ্র দিনমজুর, রিকশাচলক ও কর্মজীবী মানুষও রেহাই পায়নি তাদের হিংস্রতা থেকে। জীবনের টানে ঘর থেকে বের হয়ে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায় প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে এই সরলপ্রাণ হতদরিদ্র ড্রাইভার-হেলপারদের।
২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রথম আলো পত্রিকা থেকে জানা যায়, ট্রাকে করে পণ্য নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন চালক মো. আনিছ। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে পৌঁছানোর পর হুট করেই তার ট্রাকে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারে বিএনপি-জামায়াতের দুর্বৃত্তরা। সাথে সাথে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ট্রাকে। চোখের পলকে শরীরের অর্ধেক পুড়ে যায় আনিছের। রংপুর মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে জীবন-মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ার সময়, নিজের পরিবারের জন্য বেঁচে থাকার আঁকুতি প্রকাশ করে এই অগ্নিদগ্ধ ড্রাইভার। তার মা নাজমা বেগম বলেন, 'হামার ছাওয়াল তো কারো রাজনীতি করে না। অরে কেনে আগুন দেলে? এলা হামরা কী খামো!'
ঠিক এভাবেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে ট্রাকচালক রফিকুল ইসলামের পরিবারের। দিনাজপুরের কাহারোলে ভাতগাঁও সেতুর কাছে তার ট্রাকে পেট্রোল বোমা মেরে আগুন ধরিয়ে দেয় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। পোড়া শরীর নিয়ে রংপুর মেডিক্যালে শুয়ে আহাজারি করে তিনি বলেন, 'ট্রাক চালায়ে জীবন চলে। আমরা কী দোষ করছি। এভাবে পেট্রোল বোমা দিয়ে গরিব মানুষক মারলো কেন?'
একইদিন, আনিছের ট্রাকে করে বিশ্ব ইজতেমা শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন নীলফামারীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবদুল মালেক। বার্ন ইউনিটে নীরবে পড়ে থাকে তার দেহ। মুখ, হাত, পা সব পুড়ে গেছে। ৪০ শতাংশ বার্ন। কথা বলার শক্তি পর্যন্ত নাই তার। তার স্ত্রী মালেকা বলেন, 'হামার স্বামীর এই অবস্থাত তিন ছেলে, দুই মেয়ে নিয়া বাঁচি থাকমো কেমন করি? কার কাছোত বিচার চাই। আল্লায় ওমারগুলার বিচার করবে।'