সবুজবাগ থানা ও ৪টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

1026

Published on অক্টোবর 22, 2022
  • Details Image

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সবুজবাগ থানা এবং ৪, ৫, ৭৩ ও ৭৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২২ই অক্টোবর) মাদারটেক আঃ আজিজ স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে এই সম্মেলনের আয়োজন করে সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগ।

সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: আশ্রাফুজ্জামান ফরিদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ (এমপি)।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলনে, বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে আজ স্থিতিশীল রাষ্ট্র এবং উন্নয়নের রোল মডেল। দেশে যখন সহিংসতা নেই, মানুষ নিরাপদে কর্মস্থলে যেতে পারছে, নিশ্চিন্তে ঘরে বাস করছে। ঠিক সেসময় আজকে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধীরা এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে চক্রান্ত করছে। তাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। কারণ তারা নির্বাচন চায় না।

হানিফ বলেন, বিএনপির লক্ষ্য হলো সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আমরা বলেছি, এসব দিবাস্বপ্ন বাদ দিয়ে নির্বাচনে আসুন। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ ভোট দিলে আপনারাই ক্ষমতায় আসবেন। আর জনগণ ভোট না দিলে ক্ষমতায় আসার কোনো সুযোগ নেই।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী জড়িতে ছিল- এমন অভিযোগ করে হানিফ বলেন, ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর সীমাহীন অত্যাচার করার পরও তাদের মধ্যে অনুশোচনা কাজ করেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যার ওপর পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম গ্রেনেড হামলার জন্য ক্ষমাও চায়নি। কয়েকদিন আগে জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় অভিযুক্ত এবং দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফর জামান বাবর এবং সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর মুক্তি দাবি প্রমাণ করেছে এ ঘটনায় বিএনপির সবস্তরের নেতাকর্মী জড়িত। বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে এর পরিকল্পনা হয়েছিলো।

অন্যের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা কথায় কথায় বলেন আওয়ামী লীগ তাদের সমাবেশে বাধা দেয়। আওয়ামী লীগ অন্যের কর্মসূচিতে বাধা দেয় না। আর আওয়ামী লীগ বাধা দিলে কারও সমাবেশ করার সুযোগ থাকে না।

বিএনপি শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে হানিফ বলেন, বিএনপির শাসনামলে আমরা রাস্তায় দাঁড়াতে পারিনি। বিএনপির সন্ত্রাসী হামলা, পুলিশের লাঠিপেটায় আমাদের সিনিয়র নেতারা আহত হয়েছেন, রক্তাক্ত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। সমাবেশে বাধা দেওয়ার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না।

বিএনপির সামবেশ দেখে আওয়ামী লীগ ভয় পায়- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ভয় পাওয়ার দল নয়। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ২৩ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে পাকিস্তানি সেনাদের পরাজিত করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আওয়ামী লীগ নয় বরং দেশের জনগণ বিএনিপির সমাবেশকে ভয় পায়। কারণ জনগণ সমাবেশের নাম করে বিএনপির কর্মকাণ্ড দেখেছে। বিএনপি সমাবেশের নাম করে সাড়ে ৩০০ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তাদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হওয়া ২৫০০ মানুষ এখনো অমানবিক জীবনযাপন করছেন।

বিএনপি সন্ত্রাসী, খুনির দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কর্মসৃচির নামে বিএনপি যদি কখনো দেশকে অশান্ত করতে চায়, জ্বালাও-পোড়াও করে তাহলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আগুন সন্ত্রাস প্রতিহতে এগিয়ে যাবে।

এই ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম (এমপি)।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন ২০২১ সালের আগে বাংলাদেশকে মধ্যম-আয়ের দেশে পরিণত করবেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করবেন। আজকে বাংলাদেশে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা যা বলেছেন তাই বাস্তবায়ন করেছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চান। আর এজন্য আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবুজবাগ এলাকায় ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ চক্রের গ্রুপ আছে। যাদের বিরুদ্ধে মাদককারবার, ভূমি দস্যুতা, চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে, তাদের কমিটিতে পদ দেওয়া যাবে না।

উক্ত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবু আহমেদ মন্নাফী। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ হুমায়ুন কবির। 

সম্মেলনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী (এমপি)। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মুহাম্মদ আনিসুর রহমান।

আজকের সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত, খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আনিস আহমেদ, সদস্য-মামুন রশিদ শুদ্র, আসাদুজ্জামান আসাদ, গিয়াস উদ্দিন সরকার পলাশ, অপু বড়ুয়া, সাজেদুল ইসলাম চৌধুরী দিপু সহ দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ। 

সম্মেলনের আয়োজন সহযোগীতায় ছিলেন, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মাসুদ হাসান শামীম, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর হোসেন, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি তানিয়া হোসেন, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক মাসুদ পারভেজ আকন্দ, দক্ষিন গাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক মো: ফজর আলী, ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন ৭৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক জিয়া, ৭৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: আজিজুল হক, (২, ৩ ও ৪) নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ফারজানা ইয়াসমিন বিপ্লবী, (৫, ৬ ও ৭) নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মাকসুদা শমশের, (৭৩, ৭৪ ও ৭৫) নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নাসরিন আহমেদ।

সম্মেলনটির সঞ্চালনায় ছিলেন সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাস।

এছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সবুজবাগ থানা ও ৪, ৫, ৭৩, ৭৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত