953
Published on সেপ্টেম্বর 29, 2022আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করেছে আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটি। আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে কমিটির নিজস্ব অফিসে শেখ হাসিনা সম্পর্কে আলোচনা, তার সুস্থ জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
কমিটির চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. মির্জা আবদুল জলিল সভাপতির বক্তব্য বলেন, মানবিক গুণাবলিতে অনন্য এক ব্যক্তিত্বের নাম শেখ হাসিনা। এক জাদুকরি সম্মোহনী ব্যক্তিত্বের কারণেই শত্রুকেও পরম মমতায় কাছে টেনে নেন তিনি। তার লক্ষ্য মানুষের কল্যাণ সুনিশ্চিত করা। শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা। ব্যক্তিগত দুঃখ-কষ্ট-বেদনা ভুলে গিয়ে সবাইকে নিয়ে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চান তিনি। আর সে কারণেই তিনি অন্যতম প্রভাবশালী, সাহসী, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, প্রজ্ঞাবান বিশ্বনেতা। বিশ্ববাসীর দেওয়া স্বীকৃত মানবতার জননী। উপ-কমিটির নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ফলে দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। এদের প্রতিহত করতে না পারলে দেশের চলমান উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপকমিটির সদস্যসচিব অগ্নি তয়না বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলী বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সাহসী নেতৃত্বের কারণে জনগণের কাছে আদর্শ ও অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে আছেন দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতা শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর প্রায় ৪১ বছর ধরে দেশের এই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিয়ে রাজনীতির মূল স্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অসংখ্যবার প্রাণনাশের হুমকি এবং দফায় দফায় তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তারপরও সব রাজনৈতিক বাধা পেরিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আলোর দিশারী। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো হলো- ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, পাহাড়ে সংঘাত নিরসনে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর, খাদ্যে স্বনির্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন, ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় চুক্তিপ্রমুখ। এছাড়া একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়সহ জাতীয় জীবনের বহুক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে শেখ হাসিনার হাত ধরে। পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, উড়ালসড়ক, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রেকর্ড, জিডিপির ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধিসহ জাতীয় জীবনের নানা ক্ষেত্রে তার সরকার ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী ট্যানেলের মতো প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ১০০ বছরের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন যা ‘ডেলটা প্ল্যান’নামে পরিচিত। তরুণদের কাছে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সহজলভ্য করে দিয়েছেন। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেওয়া পদক্ষেপ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমাদৃত। মিয়ানমারে নৃশংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে যে মানবিকতার পরিচয় তিনি দিয়েছেন তা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশকে পরিণত করার কর্মসূচি 'ভিশন ২০২১' নিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতার রোল মডেল। শেখ হাসিনা আমাদের উন্নয়ন ও অর্জনের রোল মডেল। এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন শেখ হাসিনার।
উপ-কমিটির সদস্য সরদার মাহামুদ হাসান রুবেল অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটি সদস্য বদরুল হাসান কচি, হামিদা বানু মনি, ড. আবুল হোসেন দিপু, বিপ্লবী রোমা, মিঠুন মোস্তাফিজ, মো. গিয়াস উদ্দিন, ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ আহমেদ আসিফ, এম মনসুর আলী, ফজলুল হক, আমিন কোতয়াল, মুহাম্মদ আনোয়ার হোছাইন, মাহমুদ আসাদ রাসেল, নাহিদ কামাল পলাশ, আবুল খায়ের নাঈম, নির্মল বিশ্বাস, মো. ছালেহ উদ্দিন, জহিরুল ইসলাম, শওকত আকবর, এ কে এম ওবায়দুর রহমান প্রমুখ।