1382
Published on আগস্ট 17, 2022কথায় বলে- বৃক্ষ তোমার নাম কী? ফলেই পরিচয়। অর্থাৎ মুখে ফাঁকা বুলির চেয়ে কাজেই যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়। বীজ থেকে ফলন আসতে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয়, সার, সেচ ছাড়াও যত্ন নিতে হয়। বীজ যদি ভালো জাতের না হয় তবে সার-সেচ আর যত্নআত্তি ছাড়াও লম্বা সময় পর্যন্ত শ্রম আর অর্থ বিনিয়োগ পুরোটাই লোকসানের খাতায় ওঠে। তাই চাষের আগে ভালো জাতের বীজ বাছাই করা জরুরি। বীজে মাতৃগাছের গুণাগুন, ফলন সব কিছুই বিবেচনার আওতায় আনতে হয়।
এটা কৃষি বিষয়ক আলোচনা নয়। কিন্তু কথাগুলো বলার পেছনে কারণ রয়েছে। কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরগরম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য নিয়ে। রাজাকার তালিকার ৭১০নং-এ থাকা রুহুল আমিন চখার পুত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতিকে নয়া স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ খাতে কী কী জাদু দেখাবে, সে সম্পর্কিত এক লম্বা ফিরিস্তি জাতির সামনে তুলে ধরেছেন ফখরুল। তালিকাটির পাঠক ফখরুল হলেও মূলত রচনা করেছেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিদ্যুৎ মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জনরোষের মুখে যাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে বাধ্য হয়েছিল তৎকালীন সরকার।
মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে একটু পর্যালোচনা করা যাক, বিএনপির এই মহাপরিকল্পনা নিয়ে। মির্জা ফখরুল জানালেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি যা করবে-
১. বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ এ সংক্রান্ত সব কালাকানুন বাতিল করা হবে।
২. রেন্টাল/কুইক রেন্টাল কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন বন্ধ/বাতিল করা হবে।
৩. স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে।
৪. চাহিদা অনুযায়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
৫. উৎপাদন ও চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন অতি দ্রুত স্থাপন করা হবে।
৬. বাপেক্স ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে দেশীয় খনিজ ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে দেশীয় প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে উপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
৭. বঙ্গোপসাগরে সম্ভাবনাময় গ্যাস/পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ উত্তোলনে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৮. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
৯. দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে টেকসই ও নিরাপদ করতে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে মোট উৎপাদনের ৫০% নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর জ্বালানি নীতি গ্রহণ করা হবে। বিশেষ জোর দেয়া হবে পানি-বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
১০. বেস লোড পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করা হবে।
১১. বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে প্রয়োজনীয় মেরামত ও ওভারহলিং এর মাধ্যমে উৎপাদন উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।
১২. বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপির ভিশন - ২০৩০ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টর উন্নয়নে ঘোষিত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়ন করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী এই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যারা বিএনপির রাজনীতির সমর্থক এবং যারা দেশের সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না, বিএনপির এই ১২টি পয়েন্ট পড়ে তারা লাফিয়ে উঠবেন, আর্কিমিডিসের ভঙ্গিতে বস্ত্রহীন অবস্থায় লাফাতে লাফাতে রাস্তায় নেমে এসে বলবেন- ইউরেকা, ইউরেকা। কিন্তু দেশের খবর রাখেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য যাদের জানা, তাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে? তারা মির্জা ফখরুল এবং বিএনপি নেতাদের মানসিক সুস্থতার জন্য দোআ করতে পারেন বড়জোর।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রনীত আইন বাতিল করে কিভাবে উৎপাদন বাড়াবে বিএনপি?
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংক্রান্ত সকল আইন বাতিল করে দেবে। তর্কের খাতিরে ধরেই নিলাম, বর্তমানে এ সংক্রান্ত যেসব আইন রয়েছে, সবই 'কালাকানুন', তাই সব বাতিল করতে চায় বিএনপি। একটা আইন বাতিল করতে হলে যেসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, সেজন্য বেশ দীর্ঘ একটি সময় প্রয়োজন। ক্ষমতায় গেলে বিএনপি প্রথমেই আইন পরিবর্তন করবে, খসড়া তৈরির পর অনুমোদন ও সংসদে পাস হওয়া পর্যন্ত যে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন, ততদিন পর্যন্ত বর্তমান সরকারের দাঁড় করানো বিদ্যুৎ খাতের সকল সুযোগ-সুবিধা, অবকাঠামো ব্যবহার করতে হবে তাদেরকে সফলভাবে।
নাকি ক্ষমতায় গিয়েই আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে স্থাপিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং উৎপাদিত বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে তারপর আইন পাস করার রাস্তায় হাঁটবে বিএনপি? নইলে যে আইনকে তারা বলছেন কালাকানুন আর উৎপাদিত বিদ্যুতকে বলছেন অবৈধ, আওয়ামী লীগ সরকার প্রণীত সেই আইন দ্বারা উৎপাদিত সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করার দায় বিএনপি এড়াবে কীভাবে,?
বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কত বাধার মুখে পড়েছিল শেখ হাসিনার সরকার?
৭৫-এর ভয়াবহ নৃশংসতার পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগের জন্য ছিল সংগ্রামমুখর; দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। অন্ধকারাচ্ছন্ন এক দেশের শাসনভার পান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ছিল মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট। বিদ্যুতের সঙ্কট মানেই উৎপাদনহীনতা, রাষ্ট্রের দরিদ্রতর অবস্থায় পড়ে থাকা। দেশের মানুষকে দারিদ্রতার কষাঘাত থেকে মুক্তি দিতে, শিল্প খাত বিকশিত করে দেশকে উৎপাদনমুখী করে সামগ্রিক অর্থনীতিকে বেগবান করার লক্ষ্যে দ্রুত কিছু সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
বিদ্যুৎকেন্দ্র তো রাতারাতি দাঁড় করানোর মত ছোটখাট বিষয় না, বড় অঙ্কের অর্থায়ন বা বিনিয়োগের ব্যাপার আছে। বিতরণ লাইন থেকে শুরু করে জ্বালানি চাহিদা পূরণ করার সাপ্লাই চেইন তৈরি করা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় জড়িত। কিন্তু স্থবির অর্থনীতিকে সচল করতে তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য সরকারকে কুইক রেন্টালের দিকে যেতে হয়। এতেই রাতারাতি দেশের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন সূচিত হয়। বহু কলকারখানা স্থাপিত হয়, নতুন নতুন শিল্প উদ্যোক্তা উঠে আসেন, মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে, সৃষ্টি হয় কর্মসংস্থানের। এরই পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে নজর দেন শেখ হাসিনা।
মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই ১৬শ’ মেগাওয়াট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াটে নিয়ে যেতে সক্ষম হয় আওয়ামী লীগ সরকার। ধীরে ধীরে গ্রামীণ জনপদ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বিদ্যুতের আওতায় আসে। কৃষকরা লাভবান হন সবচেয়ে বেশি। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লে সেচের সুযোগ বাড়ে, কারখানায় উৎপাদিত সার ব্যবহারে কৃষক শ্রমের বিপরীতে পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদন করতে পারেন। বিদ্যুতের সাথে দেশের চালিকাশক্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটতে থাকে।
২০০১ সালে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হয়। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সেই আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কী অবস্থা হয়েছিল, এই প্রজন্মের অনেকেই হয়ত ভুলে গেছে। যা এই নিবন্ধে মনে করিয়ে দেওয়া হবে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, ততদিনে বিদ্যুৎ খাতের সক্ষমতা গেছে কমে! প্রতিটি সরকার আগের সরকারের উন্নয়নের ধারা আরও উপরের দিকে নিয়ে যেতে চায়। উপরে উঠতে না পারলেও অন্তত পড়ে যেতে দেয় না। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ খাতের সক্ষমতা কমে ৩ হাজার ২শ মেগাওয়াটে চলে আসে! ৫ বছরে দেশ এতটাই পিছিয়ে গিয়েছিল।
অথচ আজ দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুতায়ন হয়েছে সব শহর, গ্রাম, চর, দুর্গম পাহাড়ি এলাকা। স্বাধীনতার পর ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের জনগোষ্ঠীর ৪৭% বিদ্যুতের সুবিধা পেয়েছিল। যার মধ্যে কুইক রেন্টালের অবদান অনস্বীকার্য। গত এক যুগে বাকি ৫৩% মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ তো পৌঁছেই গেছে, বিএনপি এই অবস্থায় এসে এখন কুইক রেন্টাল বাতিলের কথা বলে বাহবা নিতে চায়!
বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে যখন দেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হওয়ার দ্বারপ্রান্তে এবং এই প্রকল্প চালু হওয়ার পর অধিক খরচে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নিয়ে ফেলেছে, এখন বিএনপির ঘুম ভেঙেছে। অর্থাৎ, সরকার যেসব সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নিয়ে ফেলেছে, বিএনপি এখন নতুন করে চর্বিতচর্বণ তুলে ধরছে জনগণের সামনে। কপিক্যাটবাদী দল বলে কথা!
টেন্ডারবাজির প্রণেতা বিএনপি শোনায় স্বচ্ছ টেন্ডারের গল্পঃ
ক্ষমতায় গেলে স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করবে বিএনপি! বিএনপির টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পর্কে নতুন করে আর কী বলার আছে? বন্দুকবাজি, রক্তারক্তি, খুনোখুনি, টেন্ডারবাক্স লুট, দরপত্র ছিনতাইয়ের হাজার হাজার ঘটনার নমুনা আজও পত্রিকার পাতায় খুঁজলেই মিলবে। আওয়ামী লীগ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অন্যতম সফল একটি বিষয় হলো সরকারি দরপত্র সিস্টেম পুরোটাই অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা। বিএনপি এই অনলাইন টেন্ডার সম্পর্কে যে কোনো জ্ঞান রাখেনা, তার একটা নমুনা কিছুদিন আগেই দেখা গেছে।
কয়েকমাস আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমানের কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ পেলে তা নিয়ে বিএনপি হাস্যকর অভিযোগ করে। এলটিএম, জিটুজি'র মত সাধারণ টার্মসগুলো পর্যন্ত জানে না বিএনপি! এলটিএমকে (লিমিটেড টেন্ডারিং মেথড) বানিয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের কোম্পানি, জিটুজি (গভমেন্ট টু গভমেন্ট) চুক্তিকে আখ্যা দিয়েছে জার্মান কোম্পানিকে কাজ দেওয়া...। এসব হাস্যকর দাবি করা বিএনপি কি না ক্ষমতায় গেলে 'স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক টেন্ডার' করবে, এমনটা কোন সুস্থ মানুষ বিশ্বাস করতে পারেনা।
বিদ্যুত উৎপাদনে বিএনপির দীর্ঘমেয়াদী নকল পরিকল্পনাঃ
বিএনপি বলছে, চাহিদা অনুযায়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। শুনতে বেশ চমকপ্রদ, তাই না? বাংলাদেশের মানুষের আগামী ৫০ বছরের সম্ভাব্য চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকার ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ খাতের জন্য সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে সেই অনুসারে কাজ শুরু করে দিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সারাবিশ্বে স্বীকৃত ও বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হলো- পারমাণবিক শক্তিচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া। রাশিয়ার সাথে চুক্তির মাধ্যমে সরকার দুটো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে কাজ করছে। যার একটি আগামী বছর চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য স্থান পর্যন্ত নির্ধারণ করে গিয়েছিলেন। এটা নিয়ে বঙ্গবন্ধু সরকার সক্ষমতা যাচাইসহ অনেক প্রাথমিক কাজ করে রেখেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া এ বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কমিশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে আজকের এই রূপপুর প্রকল্পের দুটো ইউনিট তৈরির কাজ চলছে। এছাড়াও বায়ু এবং সৌর শক্তিচালিত কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যে চালু করেছে, আরও কিছু কেন্দ্র অপেক্ষমান রয়েছে চালু হওয়ার জন্য।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যখন উৎপাদনে চলে যাবে, অধিক ব্যয় এবং পরিবেশের জন্য অনুপযুক্ত কেন্দ্রগুলো একে একে বন্ধ করে দেওয়া হবে। হুট করে সব বন্ধ করে দিয়ে দেশকে অন্ধকারে ঠেলে না দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সচল রেখেই কেন্দ্রগুলো বন্ধ করা হবে, সেভাবেই পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এসব জেনেবুঝেই বিএনপি তাদের পরিকল্পনা শোনাচ্ছে জাতিকে! তাদের এসব বটিকা তাই হাস্যকর নয় কি?
বিদ্যুৎ বিতরনে সঞ্চালন লাইন দেওয়ার নামে শুধু খাম্বা দিয়েছিল তারেক রহমান
ফখরুল জানালেন, উৎপাদন ও চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন অতি দ্রুত স্থাপন করবে বিএনপি। বিএনপির এই নেতাকে প্রশ্ন করেনি কেউ সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন কীভাবে করেছে বর্তমান সরকার? বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন তারেক রহমান যে তার ছাড়া শুধু খাম্বা স্থাপন করেছিলো সেই ইতিহাস আজ কারো অজানা নয়।
খাম্বা দেখিয়ে হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে লোপাটকারীদের যুগ পার হওয়ার পর দেশে এখন শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। আর সেজন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন স্থাপন করতে হয়েছে অবশ্যই। বিএনপি কি ক্ষমতায় গিয়ে সেসব সংযোগ খুলে পুনরায় লাগাবে বলে ভাবছে? অর্থাৎ, আগে খাম্বার মাধ্যমে এবার তারের মাধ্যমে সাগর চুরির চিন্তা? ভাবুন, ভাবতে শিখুন।
গ্যাস উত্তোলনের নামে গ্যাসক্ষেত্র বিক্রি করেছিল বিএনপি
মির্জা ফখরুল বললেন, বাপেক্স ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে দেশীয় খনিজ ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে দেশীয় প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে উপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বঙ্গোপসাগরে সম্ভাবনাময় গ্যাস/পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ উত্তোলনে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অথচ এক সময় বাংলাদেশ খনিজ গ্যাসের ওপর ভাসছে দাবি করে বিদেশি কোম্পানির কাছে নামমাত্র মূল্যে দেশের গ্যাস সম্পদ বিক্রি এবং গ্যাসক্ষেত্র ধ্বংস করে দিয়েছিল বিএনপি সরকার। ছাতকের সেই গ্যাসক্ষেত্রের ক্ষতিপূরণ আজ পর্যন্ত আদায় করা যায়নি। সেই ক্ষতিপূরণ প্রদানের হাত থেকে বাঁচতে খালেদা জিয়া, তারেক, কোকো, মামুন, সিলভার সেলিম, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফসহ অনেককে বিপুল অঙ্কের উৎকোচ এবং উপঢৌকন দেওয়া হয়। সেই মামলা এখনো চলছে।
শেখ হাসিনার ওপর বিদেশি চাপ ছিল দেশের গ্যাস বিক্রি করে দেওয়ার। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় বিদেশি অপশক্তির মাধ্যমে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। এসেই দাবি করেছিল, দেশে উদ্ধৃতের চেয়ে বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে, তাই সব বেচে দিতে হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা তাতে বাধা দেন। তিনি গ্যাস মজুদের ডাটা দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি সরকার সিদ্ধান্তে অনড় থেকে দেশের গ্যাসক্ষেত্র বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়, আর টেংরাটিলায় বিপুল গ্যাস জ্বালিয়ে ধ্বংস করে দেয়। এই খাত থেকে বাংলাদেশের পাওনা ক্ষতিপূরণ সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা আজও পায়নি বাংলাদেশ।
বর্তমানে বাপেক্স-এর প্রকৌশলীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। খনিজ সম্পদের ক্ষেত্রে সবসময় বিবেচনায় রাখা হয়, উত্তোলনের খরচের বিপরীতে মজুদকৃত খনিজ সম্পদের প্রাচুর্যতা এবং ব্যবহারের খরচ সাশ্রয় হয় কি না, অর্থাৎ উত্তোলন লাভজনক মনে হলেই সেটা উত্তোলন করা হয়। এভাবে অনেক জায়গায় অনুসন্ধান চালাচ্ছে বাপেক্স। এমনকি সমুদ্রেও অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের পক্ষ থেকে এ বছরের শুরুর দিকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানে মিথেন গ্যাসের (গ্যাস হাইড্রেন্ট) অস্তিত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ। সমুদ্রের তলদেশে গ্যাস ও পানির সংমিশ্রণে তৈর হওয়া স্ফটিককে গ্যাস হাইড্রেট বলা হয়। এটা দেখতে বরফের মতো হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে মিথেন থাকে। গ্যাস হাইড্রেট তথা মিথেন গ্যাস মূলত উচ্চচাপ ও নিম্ন তাপমাত্রায় গঠিত জমাট বরফ আকৃতির এক ধরনের কঠিন পদার্থ, যা স্তূপীকৃত বালির ছিদ্রের ভেতরে ছড়ানো স্ফটিক আকারে অথবা কাদার তলানিতে ক্ষুদ্র পিন্ড, শিট বা রেখা আকারে বিদ্যমান থাকে। তবে স্ফটিক আকারে থাকা গ্যাস উত্তোলন এখনই লাভজনক মনে হচ্ছে না। তবুও অনুসন্ধান চলমান আছে।
সরকারের অনুসন্ধান সক্ষমতা আছে টের পেয়েই বিএনপি নতুন বটিকা প্রসব করেছে। যদি ক্ষমতায় যেতে পারে, সবকিছুই তারা 'রেডিমেড' অবস্থাতেই পাবেন জেনেই জনগণের চোখে ধুলো দিতে চাইছে বিএনপি।
বিদ্যুতখাতে বিএনপি'র দুর্নীতির বিচার কে করবে?
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সব দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন মির্জা ফখরুল। কিন্তু নাইকোসহ বিএনপি-জামায়াত আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের তুমুল অব্যবস্থাপনা ও হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ও বিদেশে পাচার করার অপরাধে অভিযুক্তদের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি, কেন? প্রশ্ন থাকলো। নাইকো দুর্নীতি মামলা বারবার পেছানো, খালেদা জিয়ার হাজিরা না দেওয়ার বাহানা, বছরের পর বছর কালক্ষেপণ করা- বিএনপি কি সেসবেরও বিচার করবে?
পানি, বাতাস, সুর্য দিয়ে ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কিভাবে সম্ভব?
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে টেকসই ও নিরাপদ করতে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে মোট উৎপাদনের ৫০% নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর জ্বালানি নীতি গ্রহণ করা হবে। বিশেষ জোর দেয়া হবে পানি-বিদ্যুৎ উৎপাদনে। অতি কল্পনারও কিছু সীমা থাকা উচিৎ। যেখানে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, যেখানে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে শুধুমাত্র এই দুটি ইউনিটে, সেখানে বিএনপির নবায়নযোগ্য জ্বালানীর নির্ভরতা স্রেফ রাজনৈতিক স্টান্টবাজির জন্য রুপকথার গল্প। আসুন, একটু হিসাব করি।
দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ন্যূনতম ২৫ হাজার মেগাওয়াট হিসাব করলে তার অর্ধেক, অর্থাৎ সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় বিএনপি শুধুমাত্র নবায়নযোগ্য শক্তি তথা বায়ু, সৌর বা পানি থেকে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে বিশালাকৃতির উইন্ড টারবাইন ঘোরানোর মত পর্যাপ্ত বায়ু প্রবাহিত হয়, এমন স্থান খুব বেশি নেই দেশে। সক্ষমতা পরীক্ষা করে যে কয়টি স্থান নির্বাচিত হয়েছে, সেখানে সরকার ইতিমধ্যে উইন্ডমিল বসিয়েছে, যা থেকে খুব বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। কক্সবাজারের খুরুশকুলে বায়ু বিদ্যুৎপ্রকল্প চালু হচ্ছে এ বছরই, তাতে উৎপাদিত হবে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
এছাড়া ইনানীতে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন আরও একটি বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মিত করা হবে শীঘ্রই। স্থাপনের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন, সক্ষমতা যাচাই এবং বিশাল এলাকাজুড়ে স্থাপিত হয় এসব টারবাইন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নযন বোর্ড (পিডিবি) ২০০৪-০৫ অর্থ বছরে ৪টি টারবাইন স্থাপন করে সোনাগাজী উপজেলার ফেনী নদীর ওপর নির্মিত ফেনী রেগুলেটরের (মুহুরী সেচ প্রকল্প হিসেবে পরিচিত) প্রায় ৫০০ গজ দূরে থাক খোয়াজের লামছি গ্রামে। যার ক্ষমতা মাত্র ২২৫ কিলোওয়াট। [১ হাজার কিলোওয়াট = ১ মেগাওয়াট]।
এবার আসা যাক সৌর বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে। সৌর বিদ্যুতের জন্য প্রয়োজন বিস্তীর্ণ ভূমি, যেখানে সূর্যের আলো ধরতে বিপুল এলাকাজুড়ে বিছিয়ে রাখতে হয় সোলার প্যানেল, মনুষ্যবিহীন অত বিস্তীর্ণ এলাকা দেশে কোথায়? মাত্র ১ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ২.৫ একর জায়গা প্রয়োজন। ১২ হাজার মেগাওয়াটের জন্য তাহলে কত জায়গা প্রয়োজন, ভাবুন তো? সবচেয়ে বড় বিষয় হলো সোলার প্যানেল অত্যন্ত খরুচে ব্যাপার। আর এর যন্ত্রাংশের নিয়মিত মেইন্টেন্যান্স করতে হয়। এছাড়া সূর্যের পর্যাপ্ত আলো প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করছে বিদ্যুৎ উৎপাদন।
জলবিদ্যুৎ কোনো ছেলেখেলা নয়। পড়ন্ত বা স্রোত আছে এমন নদীর পানির চাপকে ব্যবহার করে তৈরি করা হয় জলবিদ্যুৎ। সাধারণত পাহাড়ি কোনো খরস্রোতা নদীতে বাঁধ দিয়েই এভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তেমন পাহাড়ি খরস্রোতা নদী নেই, যাতে এ ধরণের প্রকল্প করা যায়। বিএনপি মানুষকে বোকা বানানোর জন্যই এসব উদ্ভট পরিকল্পনা সামনে এনেছে। নবায়নযোগ্য শক্তি দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করতে পারলে তা দেশের জন্যই লাভজনক। কিন্তু বিশ্বের অতি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশে বর্তমানে সবদিক থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রই উপযুক্ত বলে সরকার সেটাই বিবেচনায় নিয়েছে।
বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে প্রয়োজনীয় মেরামত ও ওভারহলিংয়ের মাধ্যমে উৎপাদন উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছে বিএনপি। এ প্রসঙ্গে একটি পুরনো কথা মনে পড়ে যায়। ৩রা সেপ্টেম্বর, ২০০৫ সালে টঙ্গিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র ওভারহলিংয়ের মাধ্যমে পুনরায় সচল করে বিএনপি সরকার। এই ব্যাপক 'সাফল্য' ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে সাড়ম্বরে উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। মজার ব্যাপার হলো, তিনি ফলক উন্মোচন করে ঢাকায় ফিরছিলেন যখন, আব্দুল্লাহপুর আসার আগেই সেই বিদ্যুৎকেন্দ্র আবারও বন্ধ হয়ে যায়। ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত বিএনপির বিদ্যুৎ খাতের নিদর্শন ছিল এটাই।
সবশেষে বিএনপি খালেদা জিয়ার ভিশন - ২০৩০ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টর উন্নয়নে ঘোষিত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়ন করা হবে বলে ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কী সেই পদক্ষেপ, তা পরিস্কার নয়। আবারও কোনো গ্যাসক্ষেত্র বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া কিংবা নয়া জমানার খাম্বা স্থাপন ও তাতে তার সংযোজনের মাধ্যমে নতুন ভেল্কি দেখানো ভিশন কি না, কে জানে! এসব ভেল্কির কারণে বিশ্বব্যাংক চটেছিল বিএনপি-জামায়াত সরকারের ওপর। ঋণ গ্রহণের শর্তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে মূল্যবৃদ্ধির মুচলেকাও দিতে হয়েছিল খালেদা জিয়া সরকারকে।
তবে শুরুতে যা বলা হয়েছিল, বীজ থেকে কেমন ফলন মিলবে, সেটা নিশ্চিত হতে হলে মাতৃগাছের গুণাগুন বিশ্লেষণ করা জরুরি। খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং এ দুয়ের সংশ্লিষ্ট- কৃষিখাতের কী অবস্থা ছিল, তা দেখুন নিচের দুটি ভিডিও তে
বিদ্যুৎ চাইলে গুলি করতো বিএনপি, আওয়ামী লীগ পৌঁছে দিলো আলো
কৃষকের সারের দাবিতে বিএনপি করেছে গুলি,
যেই গাছ রোপন করা হয়, সেই গাছ সেই ফলই দিবে। আমড়া গাছ থেকে আম পাওয়া যাবেনা, আমড়াই পাবেন। সেই গাছের পেছনে যতই শ্রম দেওয়া হোক, ফল পরিবর্তন হবে নয়া। আমড়া গাছে হিমসাগর আম ধরবে, এই আশায় আমড়া গাছের গোড়ায় সার, পানি, সেচ দিয়ে বসে বসে দিন গুণলে কৃষকের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হবে না কখনই। আম পেতে হলে আম গাছেরই যত্ন নিতে হবে। বিএনপির ভাঁওতাবাজি জনগণ ভালো করেই জানে, বোঝে। তাই এদের হাতে শাসনভার তুলে দিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ ধ্বংসের পথ সুগম করে দেশকে দেউলিয়াত্বের দিকে ঠেলে দেওয়ার মতো ভুল বাংলাদেশের মানুষ করবে না।