1086
Published on জুলাই 28, 2022বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৩৫ থেকে ৪০ দিনের ডিজেলের রিজার্ভ আছে। ব্যাংকে তিন মাসের ডলার রিজার্ভ থাকলে সেই দেশকে স্থিতিশীল দেশ বলা হয়। সেখানে বাংলাদেশের ৯ মাসের ডলারের রিজার্ভ নেত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংকে রেখেছেন। সাম্প্রতিকালে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। সেটার জন্যে তো আমরা দায়ী না। তেল-গ্যাস আসছে কম। ডলারের দাম গেছে বেড়ে। ফলে আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে এসে হয়েছে ৩৯ বিলিয়ন ডলার। এতে ভয়ের কিছু নেই। ব্যাংকের রিজার্ভ সোজা রেখায় যাবে এমন তো না। এটা একটু উঠবে, একটু নামবে এবং আবার উঠবে-এটাই স্বাভাবিক। এ নিয়ে জনগণকে আতঙ্কিত ও বিভ্রান্ত করছে বিএনপি-জামাত জোট। তাদের সাথে আছে তথাকথিত সুশীল সমাজ। বিএনপি সহ তারা কখনো দেশের মানুষের ভাল চায় না।
বৃহস্পতিবার চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের ১ম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। চারঘাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি বলছে, ‘নির্দলীয় নিরেপক্ষ সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না।’ অতীতে বিএনপি নানা কথা বলেছে। কিন্তু নির্বাচন থেমে থাকে নি। সকল উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে যেভাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। আগামীতে বাংলাদেশে সেইভাবেই নির্বাচন হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, দেশ স্বাধীনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ গড়ার কাজ শুরু করেন। তখন স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করে। বঙ্গবন্ধু হত্যার মুল নায়ক ছিল জিয়াউর রহমান। সামনে রাখা হয়েছিল খন্দকার মোস্তাককে।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন। তিনি দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ^ দরবারে সফল রাষ্ট্রনায়কের মর্যাদায় আসীন হয়েছেন। আমাদের সেই নেত্রীকে নিয়ে কটুক্তি করেছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। আগামী নির্বাচনে আপনি (চাঁদ) যদি নির্বাচনে আসেন, তাহলে পরাজয় কাকে বলে তা বাঘা-চারঘাটের মানুষ দেখিয়ে দেবে। বাংলাদেশে বসবাস করে যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তি করে তাদের দেশে থাকার অধিকার নেই।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি সায়েমের কাছ থেকে ক্ষমতা কেরে নিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান হ্যা/না ভোটের আয়োজন প্রহসন করেছিলেন। সেই বিএনপির নেতাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
রাসিক মেয়র লিটন বলেন, যে দেশের মানুষ দুইবেলা খেতে পারতো না। সেই বাংলাদেশে আজকে চাল উৎপাদন হচ্ছে প্রায় চার কোটি মেট্রিকটনের মতো।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বিশ্বাস করে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা ছাড়া ক্ষমতায় থাকা যায় না। জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি গৃহহীনদের গৃহনির্মাণ করে দিয়েছেন, দেশের উন্নয়ন করছেন। শেখ হাসিনা আছেন বলেই বাংলাদেশ ভালো আছে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে চারঘাট-বাঘার সাংসদ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির কারণে চারঘাট-বাঘায় চারঘাটের আবু সাঈদ চাদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তাকে চারঘাট-বাঘার মাটিতে আর কোনো ধরণের ছাড় দেওয়া হবে না। যেখানেই তাকে পাওয়া যাবে সেখানেই তাকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।
চারঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা। প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা। সঞ্চালক ছিলেন চারঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম। সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সংরক্ষিত আসনের এমপি আদিবা আঞ্জুম মিতা, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান।
সম্মেলনের ১ম অধিবেশনে চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনকে পুনরা সভাপতি ও ফকরুল ইসলামকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সহ-সভাপতি হিসেবে মোক্তার হোসেন ও যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে কাজী মাহমুদুল হাসান মামুনের নাম ঘোষণা করা হয়। নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।