3240
Published on মে 22, 2022কোভিড-১৯ পরিস্থিতি শেষ হতে না হতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে কয়েকটি তেল রপ্তানিকারী দেশ ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ডলারের বিপরীতে মুদ্রার মূল্যমান ব্যাপকভাবে কমেছে। সম্প্রতি ডলারের বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রার মূল্যমান তুলনামূলক কম হ্রাস পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে এশিয়াসহ বিশ্বে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে আর বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে। আর একই সময়ে কয়েকটি তেল রপ্তানিকারী দেশ ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সব দেশের মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান বেড়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি পরিচালিত এক গবেষণা থেকে এ তথ্য উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।
শনিবার (২২ মে) বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে দলের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সভায় তিনি এ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পরিচালিত এ গবেষণায় দেখানো হয়, কোভিড পরবর্তীকালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কয়েকটি তেল রপ্তানিকারী দেশ ছাড়া পৃথিবীর সবদেশেই ডলারের বিপরীতে মুদ্রার মূল্যমান ব্যাপকভাবে কমেছে। বাংলাদেশের মুদ্রারও মূল্যমান কিছুটা কমেছে। তবে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশি মুদ্রার মূল্যমান হ্রাসের পরিমাণ খুবই কম। নিজস্ব মুদ্রার মূল্যমান কম হ্রাস পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বে কম্বোডিয়া প্রথম আর বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
গবেষণায় দেখানো হয়, বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান কমেছে ৩.৪১ শতাংশ, ভারতীয় রুপির কমেছে ৬.৮৩ শতাংশ, পাকিস্তানি রুপির ৩০.৬৩ শতাংশ, নেপালি রুপির ৬.৪৮ শতাংশ, মিয়ানমার কিয়াটের ১২.৬৭ শতাংশ, চীনা ইউয়ান ৫.৪ শতাংশ, থাই বাথের ৯.৬৬ শতাংশ, জাপানি ইয়েনের ১৭.৩২ শতাংশ, দক্ষিণ কোরীয় ওয়ানের ১২.০৭ শতাংশ, মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতের ৩.৯ শতাংশ, ফিলিপিনো পেসোর ৯ শতাংশ, তাইওয়ান ডলারের ৬.৪ শতাংশ, সিঙ্গাপুর ডলারের ৩.৭৫ শতাংশ, কম্বোডিয়ান রিয়েলের শূন্য শতাংশ, ব্রুনাই ডলারের ৩.৬০ শতাংশ, লাও কিপ এর (লাওস) ৪১ শতাংশ, টার্কিশ লিরার ৮৯.৩৭ শতাংশ, মিশরীয় পাউন্ডের ১৪.৫ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকান রেন্ডের ১৩.৬৬ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ান ডলারের ৯.১৭ শতাংশ, নিউজিল্যান্ড ডলারের ১০.৭৭ শতাংশ, ব্রিটিশ পাউন্ডের ১১.৮৬ শতাংশ, ইউরোর ১৩.৪০ শতাংশ, সুইস ফ্রাঙ্কের ৮.৫৫ শতাংশ, সুইডিশ ক্রোনারের ১৯.৬৭ শতাংশ, নরওয়েজিয়ান ক্রোনের ১৬.৫৪ শতাংশ, ডেনিশ ক্রোনের ১৫.৩৯ শতাংশ, পোলিশ জ্লোটির ১৮.৭৪ শতাংশ, কানাডিয়ান ডলারের ৬.৩২ শতাংশ, আর্জেন্টাইন পেসোর ১১.৫ শতাংশ আর চিলিয়ান পেসোর মূল্যমান কমেছে ১৫.৪৪ শতাংশ।
এতে আরও দেখানো হয়, ব্রাজিল এবং কয়েকটি তেল রপ্তানিকারক দেশ ছাড়া বিশ্বের প্রায় সব দেশের মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান বেড়েছে। যেসব কারেন্সির বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান বেড়েছে এর মধ্যে জাপানি ইয়েনের বিপরীতে ১৩.৮৬ শতাংশ, ইউরোর বিপরীতে ১০.৯৪ শতাংশ, ভারতীয় রুপির বিপরীতে ২.৭৩ শতাংশ, ব্রিটিশ পাউন্ডের বিপরীতে ৮.০৭ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিপরীতে ৬.৪৫ শতাংশ, চীনা উয়েনের বিপরীতে ১.৩২ শতাংশ, কানাডিয়ান ডলারের বিপরীতে ২.৯৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরীয় ওয়ানের বিপরীতে ৯.৩৮ শতাংশ, ডেনিশ ক্রোনের বিপরীতে ১১.৯৭ শতাংশ, আর্জেন্টাইন পেসোর বিপরীতে ২১.৬৯ শতাংশ, সুইস ফ্রাঙ্কের বিপরীতে ৪.৯২ শতাংশ আর নিউজিল্যান্ড ডলারের বিপরীতে বেড়েছে ৭.৪৭ শতাংশ।
গবেষণায় দেখানো হয়, ডলারের বিপরীতে মাত্র দুটি দেশ রাশিয়া ও ব্রাজিলের মুদ্রার মূল্যমান বেড়েছে। রাশিয়ান রুবলের মূল্যমান বেড়েছে ১৯.০৫ শতাংশ আর ব্রাজিলিয়ান রিয়েলের বেড়েছে ৮.৯৭ শতাংশ।