659
Published on মার্চ 30, 2022প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে মেধাবী, দক্ষ, বিচক্ষণ ও সফল রাষ্ট্রনায়ক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।
বুধবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর রমনাস্থ আইইবির সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য এ মন্তব্য করেন তিনি।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, সারা পৃথিবীতে অল্প কয়েকটি দেশ আছে যাদের স্যাটেলাইট আছে। তার মধ্যে বাংলাদেশেরও স্যাটেলাইট আছে। এটা তো আমাদের গর্বের। যে বাংলাদেশ ছিলো চরম ব্যর্থ একটা রাষ্ট্র। যে বাংলাদেশের মানুষ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করতো সেই বাংলাদেশকে আজ আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোথায় নিয়ে এসেছেন। একটা চরম দরিদ্র দেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন এবং গোটা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করে তুলেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে আমরা ১ লাখ ৪০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের সমুদ্রসীমা পেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা দ্রুত মধ্যম আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এবং আমরা আশা করি ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো। এই প্রেডিকশনটা কিন্তু আমার নয় এটা আন্তজার্তিক সম্প্রদায় যারা আছে তারা বলেছেন। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়তে সক্ষম হবো আমরা।
আওয়ামী লীগের এই সিনিয়ির নেতা বলেন, বিগত ১৩ বছরে আমাদের এত উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়ন-অগ্রগতি সহজ রাস্তায় হয়নি। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে গেছে। শেখ হাসিনা যেটা বলেন সেটাই করেন। এক কোটি মানুষকে আজ ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজি মূল্যে চাল দেয়া হচ্ছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, দুঃস্থ ভাতা, মাতৃকালীন ভাতাসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ৪৪ ধরণের সামাজিক নিরাপত্তা সহযোগীতা করে দেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে এ দেশ স্বাধীন হয়েছিলো। তিনি সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন আর তাঁর কন্যা সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন।
তিনি বলেন, সম্ভবত ৫ বছর আগে যখন ফোবর্স ম্যাগাজিনে প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বের শীর্ষ তিন নেতার একজন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। তখন আমি সবাইকে বলেছিলাম যে, রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার দক্ষতা, বিচক্ষণতার যদি বিচার করা যায় তাহলে শেখ হাসিনা পৃথিবীর সফল রাষ্ট্র নায়কদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি।
হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু একটা স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর রাজনৈতিক জীবনে শুরু থেকে। এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছিলেন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে। জাতির পিতার স্বপ্নের একটি অংশ ছিলো স্বাধীন রাষ্ট্রের পাশাপাশি উন্নত আত্মমর্যাদাশীল জাতি। সেই উন্নত রাষ্ট্র গড়ার ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধুর দক্ষতা ও বিচক্ষণতা ছিল অত্যন্ত উঁচু মানের। যা সারা পৃথিবীর মধ্যে খুব বিরল ছিলো। তিনি রাজনৈতিক জীবনে কখনও কোনো হুট করে সিদ্ধান্ত নেননি। প্রত্যেকটা কর্মকান্ডেই অত্যান্ত দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যার ফলেই স্বাধীন রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করতে পারছেন।
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু নেতা হিসেবে যে উচ্চতায় ছিলেন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার থেকে অনেক দক্ষ ও উচ্চতায় ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছিলো একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে তাদের প্রথম কাজ ছিলো বঙ্গবন্ধুর চরিত্র হনন করা। এবং সেটা দিয়েই তারা কাল্পনিকভাবে মিথ্যা গল্পকাহিনী প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যেই তারা (বিএনপি-জামায়াত ) কাজ করছে। তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, লুটপাট করে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রতিদিনই বলেন, দেশে মেগা প্রজেক্টের নামে না-কি মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। অথচ বিএনপি যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলো তখন তো তারা উন্নয়ন করতে পারেনি। আমি তাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, তারা ক্ষমতায় থাকতে ভালো কাজ করেছে, এমন একটা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা বলুক। আজকে পর্যন্ত তারা বলতে পারেনি। নিজেরা ক্ষমতায় থেকেও কিছু করতে পারেনি, এ জন্য আজ তারা প্রতিদিন উন্নয়নের বিরোধিতা করে কথা বলে।
তিনি বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারায় বলা আছে, কোনো দণ্ডিত ব্যক্তি বিএনপির কোনো নেতা হতে পারবে না। অথচ বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে। প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পায় তিনি বাসায় থাকছেন। তাদের আরেক নেতা তারেক রহমান আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হয়ে পলাতক। এসব কারণে তারা গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে ৭ ধারা বিলুপ্ত করে দিয়েছে। এর মানে যে যতো বড় দুর্নীতিবাজ হোক, এখন তাদের দলে নিতে কোনো সমস্যা নেই। তাদের মুখে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ মানায় না। আপনারা কোন মুখে দুর্নীতির কথা বলেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী। আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠামন্ডলীর সদস্য ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর এর সভাপতিত্বে সেনিমারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান হয়েছেন প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুল সবুর।