তরুণ প্রজন্মকে শুধু দেশপ্রেমী নয়, বাঙালি সংস্কৃতি ও ইতিহাস অনুরাগী হতে হবে

1062

Published on মার্চ 22, 2022
  • Details Image

আমাদের নতুন প্রজন্মকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে হবে এবং শুধু দেশপ্রেমী নয়, বাঙালি সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অনুরাগী হতে হবে। শুধু আবেগ নির্ভর রাজনীতি নয়, নৈতিক এবং যুক্তিশীল রাজনীতি করতে হবে। একই সাথে বাঙালি মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে। নিজেকে জানতে হবে এবং আত্ম সমালোচনাও করতে হবে। কেবল তাহলেই মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের সম্মান আমরা দিতে পারব। ভুলে গেলে চলবে না, এদেশ সহজে স্বাধীন হয় নাই, বহু বাঙালির মা-বাবা, ভাই-বোনদের রক্তের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল। এই বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সচেতন থাকতে হবে এবং একই সাথে দায়িত্বশীল হতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে মৌলবাদী ধর্মান্ধতা এবং অশিক্ষা, কুশিক্ষা, কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসকে প্রতিহত করে একটি প্রগতিশীল বিজ্ঞান ভিত্তিক, গঠনমূলক রাজনৈতিক পথ তরুণ প্রজন্মকে বেছে নিতে হবে। আজ ২২ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ সংলগ্ন মাঠ, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়াঃ হৃদয়ে পিতৃভূমি প্রতিপাদ্যে আলোচনা সভা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এ কথা বলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোঃ আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, সম্মানিত অতিথি-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জনাব শাজাহান খান এমপি, প্রধান আলোচক-প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বিশেষ অতিথি-মাননীয় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জনাব জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-শিশুকাল থেকে আমি বঙ্গবন্ধুর কথা শুনে আসছি আমার পরিবার থেকে। বিশেষ করে আমার দাদী-কাকাদের কাছ থেকে। দাদী গল্প করতো তাঁর ভাই খোকার কথা। দাদীর কণ্ঠে প্রবল গর্ববোধের সাথে মিশ্রণ ছিল ভাই হারা শোকের মাতন। প্রতিবার টুঙ্গিপাড়া যাবার পথে আমরা যখনই গিমাডাঙ্গা স্কুল মাঠ পার হতাম দাদী বলতেন খোকা এই স্কুলে পড়তো। আর সবসময় একই গল্প করতো, কিভাবে খোকা তাঁর ছাতা, বই স্যান্ডেল ও গাঁয়ের চাঁদর বিলিয়ে দিয়ে স্কুল থেকে ফিরে আসতো বহুবার। দাদীর গর্বভরা কণ্ঠে এই কাহিনীগুলো শুনতে আমার মনে হত আমি যেন রূপকথার এক মহানায়কের গল্প শুনছি। আমার শিশু মনে প্রশ্ন জাগত, কিভাবে সম্ভব। কিভাবে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু হলেন? কিভাবে তিনি পারলেন আমাদের রূপকথার মহানায়ক হতে? কোথায় পেলেন তিনি তাঁর মানবিকতা? তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা?

তিনি আরও বলেন-আমাদের দাদী, শেখ আছিয়া খাতুনের কাছে শুনেছি, ছোটবেলায় বঙ্গবন্ধুর এক গৃহশিক্ষক হামিদ মাস্টার বঙ্গবন্ধুদের বাসায় লজিং থাকতেন। তিনি রাজনীতির ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। তিনি শিশু মুজিবকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ও সা¤্রাজ্যবাদী শাসনের বিরুদ্ধে গল্প বলতেন। সেই হামিদ মাস্টারের সান্নিধ্যেই আমার ধারণা সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুর মধ্যে ধীরে ধীরে সেই কমল বয়সেই বাঙালির বঞ্চনা, এর প্রতিবাদ এবং বাঙালির অধিকার আদায়ের দীর্ঘ সংগ্রাম সম্বন্ধে এক ধরণের চেতনার জাগরণ ঘটে। কিন্তু হামিদ মাস্টার ছাড়াও সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু বানানোর ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বঙ্গবন্ধুর আব্বা, আমার বড় আব্বা, এই মাটির কৃতি সন্তান শেখ লুৎফর রহমান। আমার দাদাী বলতেন, “খোকা যে জিনিসপত্র মানুষকে দিয়ে দিত তাতে কোনদিন বিরক্ত হতেন না আব্বা, (শেখ লুৎফর রহমান)।” বরঞ্চ পরোক্ষভাবে ও প্রত্যক্ষভাবে প্রশ্রয় দিতেন। বঙ্গবন্ধুর আম্মা, শেখ সায়েরা খাতুন বলতেন, “তুই তো দেশের মানুষের জন্য করছিস, কেউ তোর কিছু করতে পারবে না। তুই রাজা হবি, তুই অনেক বড় হবি, আল্লাহ তোকে বাঁচাইয়া রাখলে।” বঙ্গবন্ধুর উপর বঙ্গবন্ধুর আব্বা শেখ লুৎফর রহমানের বিশেষ প্রভাব ছিল। পারিবারিকভাবে শেখ মুজিব এক ধরণের উৎসাহ পেতেন। বিশেষ করে তাঁর পিতা, শেখ লুৎফর রহমান বিভিন্ন সময় শেখ মুজিব এর সাথে রাজনৈতিক আলোচনা করতেন ও পরামর্শও দিতেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেন-বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরতœ শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের কাছে যে ওয়াদা করেন তিনি তা পূরণ করেন। আপনারা দেখেছেন গতকাল বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি আলোকিত দিন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম শতভাগ আয়ের দেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, নাগরিক সুবিধাও বৃদ্ধি পেয়েছে। শেখ হাসিনা অসীম সাহসিকতার সাথে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে আজকে সম্ভাবনাময়ী বাংলাদেশ।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন-আমি যুবলীগের এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই। আমি এ কথা বলতে পারি যে, যুবলীগ এখন সঠিক পথেই আছে। তিনি আরও বলেন-অনেক দেশের মানুষ ছিল যারা বাংলাদেশকে চিনতো না। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঠিকই চিনতো। তরুণ প্রজন্মকে অনেক কিছু দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু মাত্র সাতাশ বছর বয়সে ভাষা, স্বাধীনতার স্বপ্ন বুনন শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশ এখন তারই কন্যার নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে। পদ্মাসেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেদের টাকা দিয়েই পদ্মা সেতুর কাজ আজ শেষ প্রান্তে।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে শাজাহান খান এমপি বলেন-যুবলীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই আমার প্রত্যাশা।

সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন-১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পিতা-মাতা ভাইকে, আত্মীয়-স্বজনকে হারিয়ে এক বুক ব্যাথা নিয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়, গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। জামাত-বিএনপির সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বলতে চাই-আপনারা ঐক্যবদ্ধ থেকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার চলার পথকে মসৃণ করবেন। তাহলে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার পাবো।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন-যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-বাগেরহাট-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, টাঙ্গাইল-৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, ডা: খালেদ শওকত আলী, শেখ ফজলে ফাহিম, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজ উদ্দিন আহমেদ, জসিম উদ্দিন মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মুহা: বদিউল আলম, কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, ডাঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক রাসেল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, অর্থ সম্পাদক মোঃ শাহাদাত হোসেন, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক ব্যারিস্টার আলী আসিফ খান রাজিব, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, সাংস্কুতিক সম্পাদক বিপ্লব মোস্তাফিজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডাঃ মোঃ ফরিদ রায়হান, কৃষি ও সমাবয় সম্পাদক এ্যাড. মোঃ হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, উপ-প্রচার সম্পাদক আদিত্য নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এ্যাড. শেখ মোঃ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-সাংস্কুতিক সম্পাদক ফজলে রাব্বী স্মরণ, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আবদুর রহমান, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্য, সহ-সম্পাদক আবির মাহমুদ ইমরান, নাজমুল হুদা ওয়ারেছী চঞ্চল, মোঃ মনিরুল ইসলাম আকাশ, কার্যনির্বাহী সদস্য কামরুজ্জামান খান শামীম, সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টু, এ্যাড. কাজী মোঃ বসির উদ্দিন, মোঃ মেহেরুল হাসান সোহেল, রাজু আহমেদ ভিপি মিরান, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মোক্তার হোসেন চৌধুরী কামাল, মোঃ ওলিদ হোমেন, এ্যাড. শেখ মোঃ তরিকুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি জি এম সাহাবুদ্দিন আযম, সাধারণ সম্পাদক এম বি সাইফ বি মোল্লা, খুলনা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক শফিকুর রহমান পলাশ, যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ হাসিবুর রহমান রিজন সিকদার, এ এন এম ইমরুল হক, এ্যাড. মোঃ ইয়াসিন আরাফাত রামিম, মোঃ রিপন শেখ, এস এম আশরাফুল ইসলাম রতন, শেখ মোঃ রবিউল ইসলাম, মোঃ ইজ্জল খান, মোঃ ফারহান আলম, মোঃ রেজাউল করিম, শেখ মারুফ হোসেন, শেখ মোঃ গিয়াস উদ্দিন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হাসান আহমেদ কচি, সাধারণ সম্পাদক বি এম মাহমুদ হকসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও গোপালগঞ্জ জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত