787
Published on মার্চ 15, 2022ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ শুধু ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকেই অনুপ্রাণিত করেছিল তা নয়, বরং এই ভাষণ যুগে যুগে বিশ্বের সকল অবহেলিত, বঞ্চিত ও স্বাধীনতাকামী জাতি-গোষ্ঠীকে অনুপ্রেরণা জোগাতে থাকবে। এ কারণেই ঐতিহাসিক ৭ই মার্জের ভাষণ ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিষ্টারে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সকল যুগেই প্রাসঙ্গিক ও সমকালীন। তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে হবে এবং তাঁর উদার, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ ধারণ করতে হবে। ১৪ মার্চ, সোমবার, সকাল ১০টায়, ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ২য় তলায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় আগামী ২২ মার্চ বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে ১০টি জেলার প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে (গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, নড়াইল, খুলনা, খুলনা মহানগর, বাগেরহাট ও পিরোজপুর) অনুষ্ঠিত বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এ কথা বলেন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-এই মার্চ মাস আমাদের মহান স্বাধীনতার মাস, এ মাসের ১৭ তারিখ টুঙ্গিপাড়ার এক অজপাড়াগায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন স্বাধীনতার মহানায়ক, স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ মাসেই ধ্বনিত হয়েছিল স্বাধীনতার অমর বাণী, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” স্বাধীনতা শব্দটি থেকে, বা স্বাধীনতার অর্থ থেকে বঙ্গবন্ধুকে আলাদা করা সম্ভব না। চেষ্টা যে হয় নাই তা না। চেষ্টা করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের পর। ২১ বছর আমরা জয় বাংলা বলতে পারি নাই। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে পারি নাই। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই ১৯৭১ সালে গুটি গুটি পায়ে উদয় হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার লাল সূর্য। বঙ্গবন্ধুর ৫৬ বছর বয়সের ২৩টি বছরই কেটেছে এই স্বাধীনতার সংগ্রামে, জেল খানার সেই নিভৃত কুটিরে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য এই বঙ্গবন্ধুকেই সপরিবারে শিকার হতে হয়েছিল ইতিহাসের নিকৃষ্টতম হিং¯্রতার ও বর্বরতার। ফিরে যাই ৭ই মার্চের ভাষণে, আপনারা জানেন, কি পরিস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই বিখ্যাত ভাষণ দিয়েছিলেন? ১৯৭০-এর ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু আকস্মিক এক বেতার ঘোষণায় ৩ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত হওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গর্জে ওঠে পূর্ব পাকিস্তান। ঐ দিন পল্টনে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি থাকি আর না থাকি, বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন যেন থেমে না থাকে। বাঙালির রক্ত যেন বৃথা না যায়। আমি না থাকলেও আমার সহকর্মীরা নেতৃত্ব দেবেন। যে কোন মূল্যে আন্দোলন চালাইয়া যেতে হবে ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” এই রকম নিলোর্ভ, নির্মোহ ছিল আমাদের জাতির পিতা! এ কঠিন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ রেসকোর্সে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে চারটি শর্ত দিয়ে ভাষণের শেষাংশে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ১৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য ১৭ই মার্চ দেশব্যাপী সকল মসজিদে দোয়া, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা, ১৮ মার্চ যুবলীগের সকল ইউনিটে যুবসমাবেশ ও আলোচনা সভা, ১৯ মার্চ দেশব্যাপী সকল ইউনিটে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, রক্তদান কর্মসূচি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা। ২০ মার্চ দেশব্যাপী সকল ইউনিটে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ২১ মার্চ সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণসহ নানা কর্মসূচি।
সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন-যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কথা দিয়েছিলাম মুজিব শতবর্ষে ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রতিটি জেলায় অসহায় মানুষের মাঝে অন্তত একটি ঘর উপহার দিবো। ইনশাল্লাহ ইতোমধ্যেই সারা দেশে অসহায় মানুষের মাঝে ১৭৫টি ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে যুবলীগ। আমার জানামতে কোন রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে যুবলীগই প্রথম এধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও বলেন-বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ঐ ঘাতকচক্র তাঁর লাশ ঢাকাতে রাখেনি। তারা তাঁকে তাঁর জন্মভূমি টুঙ্গিপাড়ায় পাঠিয়ে দেয় এবং সেখানেই তাকে সমাহিত করে। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন বঙ্গবন্ধুর সমাধির চারপাশের যে পবিত্র পরিবেশ আর জিয়াউর রহমানের তথাকথিত কবরের চারপাশের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সমাধির পাশে মসজিদ, নামাজ, আযান, নামাজ হয়; আর জিয়াউর রহমানের চন্দ্রিমার কবরের চারপাশে বিপথগামী যুবক-যুবতীর আনাগোনা। আর একারণেই আমি বঙ্গবন্ধুকে আল্লাহর অলি, ইসলাম প্রচারক বলি। ইসলামী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশকে ওআইসি’র সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্তকরণ, কাকরাইলের মসজিদের জায়গা দান, বিশ্ব ইজতেমার জায়গা দানসহ অসংখ্য কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু। যার ফলে বাংলার মুসলমান সমাজ সমৃদ্ধ হয়েছে।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন-আমরাই একমাত্র ভাগ্যবান প্রজন্ম যে একই সাথে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। তাই আমাদের নিকট আগামী ২২ মার্চে টুঙ্গিপাড়ার কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে যুবলীগের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা, অসহায় মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা ধরণের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচিসমূহ সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল উদ্দিন, ডাঃ খালেদ শওকত আলী, শেখ ফজলে ফাহিম, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, এমপি, তাজ উদ্দিন আহমেদ, মোঃ জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, ডাঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, এ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক ব্যারিস্টার আলী আসিফ খান রাজিব, অর্থ সম্পাদক মোঃ শাহাদাত হোসেন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মোস্তাফিজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডাঃ মোঃ ফরিদ রায়হান, মহিলা সম্পাদক এ্যাড. মুক্তা আক্তার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-অর্থ সম্পাদক সরিফুল ইসলাম দূর্জয়, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আবদুর রহমান, উপ-কৃষি ও সমবায় সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্য, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি এম এম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নূহুন মদবর, রাজবাড়ী জেলা আহ্বায়ক মোঃ জহুরুল ইসলাম, যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ আবুল হোসেন সিকদার, শাহ মোঃ জাহাঙ্গীর জলিল, গোপালগঞ্জ জেলা সভাপতি জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, সাধারণ সম্পাদক এম বি সাইফ (বি মোল্লা), মাদারীপুর জেলা সভাপতি মোঃ আতাহার সরদার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রুবেল খান, ফরিদপুর জেলা আহ্বায়ক জিয়াউল হক মিঠু, যুগ্ম-আহ্বায়ক মেহেদী হাসান শামীম তালুকদার, খান মোঃ শাহ সুলতান রাহাত, খুলনা জেলা সভাপতি কামরুজ্জামান জামাল, সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু এমপি, খুলনা মহানগর আহ্বায়ক সফিকুর রহমান পলাশ, যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন, বাগেরহাট জেলা আহ্বায়ক সরদার নাসির উদ্দিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক মোল্লা শাহনেওয়াজ দোলন, মোঃ ফারুক হোসেন, নড়াইল জেলা আহ্বায়ক আলহাজ্ব মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান, যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন মোল্যা, গাউসুল আজম মাসুম, মাহফুজুর রহমান, পিরোজপুর জেলা সভাপতি মোঃ আক্তারুজ্জামান ফুলু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিয়াউল আহসান গাজীসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।