সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

683

Published on ফেব্রুয়ারি 28, 2022
  • Details Image

কে এম হোসেন আলী হাসানকে  সভাপতি ও আব্দুস সামাদ তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

এর আগে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে রাজধানীর বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এছাড়াও সম্মেলন স্থলে উপস্থিত থেকে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম আখতার জাহান, প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা, সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, ডা. আব্দুল আজিজ, মোমিন ম-ল ও তানভীর আহমেদ। 

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুুর্নীতির কারণে বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী একটি রাজনৈতিক দল। 
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়েছে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনই দন্ডপ্রাপ্ত। আইন অনুযায়ী দুজনের একজনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ফলে জন বিচ্ছিন্ন বিএনপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষের সব ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবে। 

ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দলের নিয়ম মেনে চলতে হবে, অনিয়ম করে দলের মনোনয়ন দেওয়ার দিন শেষ। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা চিরদিনের জন্য কাউকে নেতৃত্ব ইজারা দেয়নি। সেতুমন্ত্রী বলেন, ত্যাগী নেতারা আওয়ামী লীগের আস্থার ঠিকানা। দুঃসময়ের কর্মীরাই দলের আসল বন্ধু। ত্যাগী নেতাদের আর কোনঠাসা করে রাখা যাবে না। তাদেরকে স্থান দিতে হবে। 

সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ভোটের চিন্তা আমাদের করার দরকার নেই। আমরা দেশের জনগণের জন্য কাজ করলে ও সংগঠনকে শক্তিশালী করলে- এদেশের মানুষ সংগঠনকে আপন করে নিয়ে ভালবেসে প্রাণভরে ভোট দিবেন। 

তিনি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আপনারা দু-একজন নেতার কথা না ভেবে নির্বাচনে আসেন। 

তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, আর যদি নাও আসেন, আপনারা নির্বাচন বর্জনের নামে যদি সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেন- তাহলে এর কঠিন জবাব আমার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক নেতা-কর্মীরাই করবে। 

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মিথ্যাচার ছাড়া বিএনপি আর কিছুই পারেন না। রাজনৈতিকভাবে আত্মবিশ্বাসের সাথে মিথ্যা বলায় অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও একে অপরকে টপকাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় বেশিরভাগ নেতাই মিথ্যাচার করেন। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা এখন বিশ্ব নেতারাও করেন। তারা দেশে এসে সবাই শেখ হাসিনার প্রশংসা করে গিয়েছেন। কারণ তারা শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখেন কিন্তু বিএনপি দেখে না। 

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী ও চলার পথকে মসৃণ করাই আমাদের একমাত্র কাজ। এ জন্য আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।

 

দলের নেতাকর্মীদের প্রতি রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, বিএনপি এখন নানা ষড়যন্ত্র করবে। তারা আবার জ্বালাও পোড়াও কর্মসুচি দেবে। তাদেরকে ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। যে ইউনিয়নে বিএনপি জামায়াত মিছিল বের করবে সেখানে আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙ্গে দিতে হবে। কারণ শক্তিশালী আওয়ামী লীগের কমিটি থাকলে সেখানে ওরা মিছিল বের করতে পারবে না।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, সেটা বিএনপি-জামায়াত চায় না। তারা সব সময় ষড়যন্ত্র করে। তারা দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগনের দল বলে কোন ষড়যন্ত্র করে ঠিকতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই উন্নয়ন হচ্ছে।উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে সরকারের ধারাবিকতা থাকা প্রয়োজন।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি রাজনৈতিক দল। বাঙালীরা আজ যা কিছু পেয়েছেন।  সব কিছু এই আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে।  দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছেন। সিরাজগঞ্জসহ সারাদেশে উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়ন হচ্ছে।  বাংলাদেশ আজ বিশ্বাসে বুকে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।  এই ষড়যন্ত্রকারী কারা? যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে হত্যার রাজনীতি জায়েজ করেছিল। এই ষড়যন্ত্রকারী করা! যারা বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগস্ট হত্যা করেছিল। এই ষড়যন্ত্র কারা! এরা দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে চাম্পিয়ান করেছিল। এরাই ষড়যন্ত্রকারী। এদের হাতে বাংলাদেশ সংবিধান ও গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। 

নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপির নেতাদের সমালোচনার জবাবে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, এই বিএনপিই চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন আইন হোক। জননেত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ নিয়ে কমিশব আইন গঠন করেছেন।  এখন এই বিএনপিই নবগঠিত কমিটি নিয়ে সমালোচনা করেন। মুলত এরা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র লিপ্ত,  দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র লিপ্ত। তারা চায় খুনি তারেক জিয়াকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাধা গ্রস্ত করা।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত