1084
Published on ফেব্রুয়ারি 28, 2022আজ সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। আমি এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাই এবং নতুন নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু বিএনপি-জামাত নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা করছে, কারণ তাদের নিজস্ব অপরাধবোধ থেকে তারা নির্বাচনে যেতে সাহস পাচ্ছে না। সাহস পাবেই বা কিভাবে, তারাতো অপরাধী এবং দোষী। তাদের প্রধান নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামী। ভারপ্রাপ্ত নেতা তারেক জিয়া ১০ ট্রাক অস্ত্রপাচার মামলায় এবং একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা এবং দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামী। আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ইং, সোমবার, সকাল ১০:৩০ মিনিটে, শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম. মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম, পল্টন, ঢাকায় ইতালী ও জাপান শাখা যুবলীগের সহযোগিতায় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে অসহায় ও দুঃস্থ শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এ কথা বলেন।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন-অগ্নি সন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার দল বিএনপি। তারেক এবং খালেদা জিয়ার নির্দেশেই যে অগ্নি সন্ত্রাস চালানো হয়েছিল তা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০১৪ সালের সেই নেক্কারজনক ঘটনাকালে অগ্নিদগ্ধ ও আপনজন হারা স্বজনদের ব্যথা এখনো মানুষের মনে দাউ দাউ করে জ্বলছে। বিএনপি জানে তাদের জন্য মানুষের শুধু ঘৃণাই রয়েছে; মানুষ তাদের বিশ্বস করে না। তাই তারা নির্বাচনে যেতে ভয় পায়। কারণ তারা জানে যে এই অপরাধী বিএনপিকে মানুষ কোনদিনও ভোট দেবে না। সেই অপরাধবোধ থেকে মানুষের সামনে ভোট চাইতে যেতে ভয় পায়। জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা মানি-লন্ডারিং করে বিদেশে পাচার করেছে তারেক জিয়া ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ। আচ্ছা; চিন্তা করেনতো তারেক জিয়াতো প্রায় ১৩ বছর বিদেশে, কি তাঁর পেশা বা আয়ের উৎস? কিভাবে তারা এত বিলাসবহুল জীবন যাপন করে? দেখেছি ক্যাসিনোতেও যায় সে কিভাবে? নিশ্চয়ই সরকারি ভাতা দিয়ে তো আর জুয়া খেলা যায় না। তাহলে কি তার যোগ্যতা? কি তাঁর আয়ের উৎস? মানি-লন্ডারিং এর অবৈধ টাকা দিয়ে বিদেশে লবিস্ট এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে বিএনপি। এসব প্রশ্নতো মানুষের মনে জাগে তাই তারা নির্বাচনে আসতে ভীত। আসলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতি হল বিএনপির পরিচয়। তাদেরকে এদেশের শান্তি প্রিয় মানুষ কেন ভোট দিবে? আমিতো কোন কারণ দেখি না। তাদের নেতা কে? তিনি কোথায়? ভোট পেলে আগামীতে প্রধানমন্ত্রী কে হবে? এই সকল প্রশ্নতো বিএনপি জনগণকে পরিস্কার করে না কখনো। সাজাপ্রাপ্ত আসামীরাতো আর নির্বাচন করতে পারবে না! তাহলে কাকে সামনে নিয়ে নির্বাচনে যাবে বিএনপি? তারা ভালভাবে জানে তাদের কোন নেতা নাই। নেতা ছাড়া কোন রাজনীতিও হয় না, নির্বাচনে যেতে চায় না নানা অজুহাতে। তারা এখন অজুহাতের নতুন রাজনৈতিক কৌশল বেছে নিয়েছে। ক্ষমতা দখলকারী, জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিল অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘণ করে। হাজার হাজার সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনী অফিসার ও সৈনিকদের হত্যা করেছিল জিয়াউর রহমান। অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী জিয় এবং খালেদা জিয়া যতবার ক্ষমতা দখল করেছে ততবার নির্বাচনে কারচুপি, ভুয়া ভোটার লিস্ট ও সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে জনগণের ভোট কেড়ে নিয়েছে। কোনদিন শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নাই বিএনপি, এটাই তাদের চরিত্র। আসলে যখনই এদেশের মানুষের জীবনে উন্নতি হয়েছে অথবা আরও অধিকতর উন্নতির সুযোগ হয়েছে, তখনই এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে বিএনপি-জামাত। এবার তাদেরকে আর সেই সুযোগ দেয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন-২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই প্রথম একানা আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আছে বলেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অর্থনৈতিক উন্নতি করা সম্ভব হচ্ছে। এই ১৩ বছর ধারাবাহিক গণতন্ত্র চলমান রয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের মানুষ উন্নতি উপভোগ করছে। আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করছে বলেই বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার দারিদ্র দুর করে এদেশের মানুষের মুখে দু’বেলা ভাতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। ভূমিহীনদের বিনামূল্যে জমি, ঘর ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবনের চেহারাই পালটে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে আলোকিত করছে বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকার। রাস্তাঘাট, পুল ও ব্রীজ করেছে। যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে নি¤œবিত্ত মানুষ ভালভাবে বাঁচার সুযোগ পেয়েছে। দারিদ্রের ভাগ চল্লিশ থেকে ২০ ভাগে নামিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারছে, কারণ তারেক জিয়ার আমলের মত হাওয়া ভবনে চাঁদা দিয়ে ব্যবসা নিতে হয় না। ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নেয়ার পর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য অবিরাম পরিশ্রম করে এদেশটিকে উন্নয়নের মহাসড়কে পৌছে দিয়েছেন। আজকে বিএনপির রেখে যাওয়া অতি দরিদ্র দেশে থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের মাথা পিছু আয় এখন ২৫৫৪ ডলার। নারীর ক্ষমতায়ণে এবং শিশু মৃত্যু হার বিবেচনা করলে বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে অন্যতম প্রধান দেশ। তাই বাংলাদেশকে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ হিসাবে, উন্নত দেশ হিসাবে দেখতে হলে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার বার বার দরকার।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের লক্ষ্য একটা মানবিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। রাষ্ট্রের মানবিক ধারাকে গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এবং গণমানুষের সুখে-দুঃখে সাথে থাকা। এ লক্ষ্যে যুবলীগ বেশকিছু মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। যার একটি সামান্য প্রয়াস আজকের এই শীতবস্ত্র ও স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান। তিনি বলেন-ফেব্রুয়ারি মাস ভাষা আন্দোলনের মাস, মাতৃভাষা আমাদের পরিচয়, আমাদের সত্ত্বা, আমাদের সংস্কৃতির বাহক। ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরবের ইতিহাস। সালাম, বরকত, রফিক, শফিউর ও জব্বার আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে অনুপ্রাণিত করে। পৃথিবীর সকল গৌরবময় ইতিহাসের পিছনে তরুণ ও যুবসমাজের বিশেষ অবদান। ভাষা শহীদদের প্রতি মর্যাদাস্বরূপ আপনারা একুশে বই মেলায় যাবেন, বই কিনবেন। তিনি আরও বলেন-বর্তমান যুবসমাজকে সংস্কৃতিক চর্চা করতে হবে এবং সংস্কৃতি প্রেমী হতে হবে। দেশকে ভালবাসতে হবে এবং দেশের সংস্কৃতি ও সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী হতে হবে। আমাদের সংস্কৃতি, শিল্প ও সাহিত্য পৃথিবীর যে কোন দেশের তুলনায় কম সমৃদ্ধশালী নয়।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, ডাঃ খালেদ শওকত আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুহাঃ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, এ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল কবির, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোঃ সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, সহ-সম্পাদক সামিউল আমিন, মোঃ আলমগীর হোসেন শাহ জয়, কার্যনির্বাহী সদস্য এ বি এম আরিফ হোসেন, মোঃ ওলিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ কামরুজ্জামান কামরুল, মোঃ নাদিম উদ্দিন, মোঃ মাহমুদুল হাসান, ইতালী শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এনায়েত করিম, জাপান শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু আহমেদসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড শাখার নেতৃবৃন্দ।