দেশের বিরুদ্ধে বিএনপি’র লবিস্ট নিয়োগ রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল

678

Published on ফেব্রুয়ারি 2, 2022
  • Details Image

সম্প্রতি বিএনপি’র অপরাজনীতির নিদর্শন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে যেটা আমাদের সবাইকে ভীষণভাবে ব্যথিত করেছে। সেটা হলো দেশের টাকা পাচার করে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করার যে আলামত বেড়িয়ে এসেছে সেটা খুবই নিকৃষ্টমানের রাজনীতি। প্রথমত দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা বেআইনী অপরাধ, তারপর সেই টাকা আবার দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা, দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা। আমি আশা করেছিলাম তারা রাষ্ট্র-সরকার এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে পার্থক্য বুঝে। আমি ব্যথিত হলেও বিস্মিত হই নাই কারণ এটা তাদের পুরোনো অভ্যাস। এর আগেও খালেদা জিয়াও বিদেশিদের কাছে দেশের বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছিলেন। রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ থাকতে পারে কিন্তু দেশের বিরুদ্ধে তাদের এই গোপন ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল। আমি মনে করি তাদের এদেশের মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আজ ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ইং, বুধবার, ঢাকা মহাখালির আইপিএইচ স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এ কথা বলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-ফেব্রুয়ারি মাস, ভাষা আন্দোলনের মাস। এই মাসটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, কিভাবে এক ঝাঁক তরুণ-যুবসমাজ মাতৃভাষার জন্য সর্বোচ্চ আত্মহুতি দিয়েছিল ১৯৫২ সালের এই ফেব্রুয়ারি মাসে। মাতৃভাষা আমাদের পরিচয়, আমাতের সত্ত্বা, আমাদের সংস্কৃতির বাহক। আর ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরবের ইতিহাস। তারুণ্যের দীপ্ত আলো দ্বারা আমাদের এই গৌরবময় ইতিহাস আবর্তিত। সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বার আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে অনুপ্রাণিত করে। পৃথিবীর সকল গৌরবময় ইতিহাসের পিছনে তরুণ ও যুবসমাজেরই বিশেষ অবদান। যা কিছু আমরা অর্জন করেছি তার পিছনে যুবসমাজের ভূমিকাই সর্বাধিক, তারাই নেতৃত্ব দিয়েছে। যুবসমাজেরই দায়িত্ব অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হলে সর্বপ্রথম অন্যায় পরিহার করতে হয়। নিজে অন্যায় করে অন্যের অন্যায়ের প্রতিবাদ করার নৈতিক ভিত্তি পাওয়া যায় না। তাই সমাজের অন্যায়গুলো চিহ্নিত করা এবং প্রতিবাদ করা আমাদের কর্তব্য এবং সেই উদ্দেশ্যে যেকোন আত্মত্যাগ করার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হয়। এটাই আমাদের ভাষা আন্দোলনের দীক্ষা। ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে একবারে মুছে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম এই কিছু দিন আগেও বাদ দেয়া হয়েছিল সুপরিকল্পিতভাবে। পেরেছে? পারেনাই। বঙ্গবন্ধু আরও শক্তিশালীরূপে আজকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে লে খেটেছেন এই ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামে হরতাল করতে গিয়ে। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের ডাকে ৪৮ সালের ১১ই মার্চ যেই হরতাল হয়েছিল, সেই হরতালে পুলিশ লাঠি চার্জ করে এবং শেখ মুজিব ও রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, সামসুল আলম একই সাথে গ্রেফতার হন। ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির যৌক্তিক ও ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রাম।

তিনি সুবিধা বঞ্চিত মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন-আপনারা আমাদেরকে আপনাদের যে কোন সহযোগিতায় পাবেন। আমরা আপনাদের যে কোন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। মনে রাখবেন অন্যান্য দলের মতো শেখ হাসিনা ও যুবলীগ শুধু ভোটের সময় আপনাদের কাছে মিথ্যা আশ্বাস নিয়ে আসে না, আমরা সবসময় আপনাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জনগণের কাছে যা ওয়াদা করেন, তা পূরণ করেন, ইনশাল্লাহ্। দেশের অসহায় মানুষ শীতে কষ্ট পাবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। সেকারণেই আজকে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।

তিনি বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন-গতকাল দেখলাম যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরত গিয়েছেন। অত্যন্ত আনন্দের কথা। আমরা তার পরিপূর্ণ সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আমাদের বিশ্বাস ছিল যে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন, কারণ বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা হচ্ছিল এবং তাঁর অসুস্থতার চিকিৎসা বাংলাদেশেই হওয়া সম্ভব বলে আমাদের বিশ্বাস ছিল। কিন্তু এই ব্যাপারটা নিয়ে করোনার সময় তাঁর যেই অবান্তর ও অযৌক্তিক আন্দোলন-সংগ্রাম করল এবং তাঁর অসুস্থতা নিয়ে যেই অপরাজনীতি করল সেটার নিন্দা করার আমাদের রুচি নাই। রাজনীতি করার অনেক বিষয় আছে, কারো অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি কখনই কাম্য না। গণমানুষের অধিকার নিয়ে রাজনীতি করেন, মৌলিক চাহিদা নিয়ে রাজনীতি করেন তাহলে বুঝবো আপনাদের গ্রহণযোগ্য ইস্যু আছে। কোন ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করবেন সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য রাজনীতি না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন-এই করোনার সময় ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ শেখ হাসিনার কর্মী। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য হচ্ছে এই বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষ সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে, পেট ভরে ভাত খাবে, রাতে শান্তিতে ঘুমাবে। কেউ যেন তাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার কেউ যেন কেড়ে নিতে না পারে। সেই প্রিয়নেত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনায় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ পরশের নেতৃত্বে এই করোনা মহামারিতে কাজ করে যাচ্ছে যুবলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মী। খাদ্য সহায়তা, অক্সিজেন সেবা, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষের দাফন করা, স্বাস্থ্য সেবাসহ নানা ধরণের সেবা নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে যুবলীগ। তিনি উপস্থিত জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন-স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-বিএনপিচক্র দেশকে নিয়ে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে, এদেশের মানুষকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সজাগ থাকতে হবে তাদের সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। মনে রাখবেন কোন ষড়যন্ত্রের কাছে শেখ হাসিনা মাথা নত করে না। কারণ শেখ হাসিনার পাশে আছে বাংলার মা, বাংলার বোন, বাংলার ভাই। জামাত-বিএনপির সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলার যুবসমাজ আজ ঐক্যবদ্ধ।

ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন এর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন-যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য এনামুল হক খান, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ রাশেদুল হাসান সুপ্ত, সহ-সম্পাদক আতাউর রহমান উজ্জল, মাইদুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য মানিক লাল ঘোষ, মোবাশ্বের হোসেন স্বরাজ, নূর হোসেন সৈকতসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত