566
Published on অক্টোবর 2, 2021বিএনপির আন্দোলনের হাতিয়ারে মরিচা ধরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপির কথিত জোয়ার এখন ভাটায় পরিণত হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। শনিবার (২ অক্টোবর) সকালে তিনি তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য উপস্থাপন করেন। মাঝে মাঝে তার বাকচাতুর্য কল্পনাকেও হার মানায়।’
বিএনপির জনসমর্থনের জোয়ারে নাকি সরকারের হৃদকম্পন শুরু হয়েছে— বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এসব সৃজনশীল কথামালার চাতুরিতে ফখরুল ইসলাম আলমগীর আত্মতৃপ্তি বোধ করতে পারেন। কর্মীদের রোষানল থেকে নিজেদের সুরক্ষার জন্য কল্পনার ফানুস ওড়াতে পারেন। কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে তাদের বক্তব্য বিপরীত- তা দেশের মানুষ ঠিকই জানে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভয়ে কাঁপে না। চ্যালেঞ্জ আর লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়াই বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি। আর সেই রাজনীতিই আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশের রাজপথ জানে আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রামের বীরত্বগাথা আর সমৃদ্ধ ইতিহাস। অন্যদিকে জনগণ জানে বিএনপির হঠকারিতা, গণতন্ত্র হত্যা, ষড়যন্ত্র, লুটপাট আর সুবিধাবাদী রাজনীতির কথা।’
বিএনপির জনসমর্থনের জোয়ারতো গত তের বছরে কোনো নির্বাচনে দেখা যায়নি— দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা ভরাডুবির ভয়ে এখন নির্বাচন বিমুখ। তাই রাজপথ আর ভোটের ময়দান ছেড়ে গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনীতিকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে।’
বিএনপির সবকিছুতেই শর্ত এবং মামার বাড়ির আবদার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করলে নাকি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে। আসলে বিএনপি ভালো করেই জানে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি মীমাংসিত।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল কে করেছে? উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হয়েছে। এ পদ্ধতি ছিল একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা। দীর্ঘ মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চলতে পারে না। দেশের গণতন্ত্র যখন এগিয়ে যায় তখন সরকার ও নির্বাচন ব্যবস্থার উপর আস্থা ফিরতে শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সময় মতো সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ সেজন্য মীমাংসিত বিষয় নিয়ে অযথা মাঠ গরম না করতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন ঘোষিত বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য আগামী ২ অক্টোবর থেকে ৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত মনোনয়নের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করেছে। দলের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে থেকে দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে এবং কোনো ধরনের লোকসমাগম ছাড়া প্রার্থী নিজে অথবা একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবে।’
আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভরাডুবির আশংকায় বিএনপি সরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপিসহ সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহনে বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে, তিনি বলেন, ‘সরকার সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে নির্বাচন কমিশনকে সবধরনের সহযোগিতা করবে।’
ওবায়দুল কাদের আবারও হুঁশিয়ার করে আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কোনো মদদ ও প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে হবে।’ তিনি দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে একযোগে কাজ করারও আহ্বান জানান।