বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়ার দায়

1236

Published on সেপ্টেম্বর 7, 2021
  • Details Image

শ ম রেজাউল করিমঃ 

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, বিশ্বনন্দিত রাজনীতিক, ইতিহাসের কালজয়ী মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি আমাদের জাতির পিতা, আমাদের মুক্তির অগ্রদূত। হিমালয়সম ঋজুতা, দৃঢ়তা ও সহিষ্ণুতার মূর্ত প্রতীক বঙ্গবন্ধু। মুক্তিকামী মানুষের অধিকার আদায়ে তাঁর আপোসহীন নেতৃত্বের সৌকর্য তাঁকে আসীন করেছে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতার আসনে। বঙ্গবন্ধু থেকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বিশ্ববন্ধু। তাঁর দৃপ্ত সাহসী উচ্চারণ ছিল, ‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমর, অবিনাশী, যুগ থেকে যুগান্তরে। কীর্তিমানের কখনও মৃত্যু হয় না। সেই কীর্তিমান পুরুষ যখন তাঁর সোনার বাংলা বিনির্মাণের সাধনায় নিমগ্ন ঠিক তখনই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বীজ বপন শুরু হয়। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিশ্ববাসী সাক্ষী হয় ইতিহাসের নিকৃষ্টতম কালো অধ্যায়ের। সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বাঙালী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্র বিশ্লেষণে ইতিহাসের কিছু অমোঘ সত্যের সন্ধান মেলে। যে সত্যের উন্মোচন করা না হলে ইতিহাস অসম্পূর্ণ হয়ে থাকবে। ইতিহাসে জাতি হিসেবে আমাদের অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

পূর্ব পরিকল্পিত চক্রান্তে সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপ-প্রধান জিয়াউর রহমানের নাম সামনে আসে ১৯৭৬ সালে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের সাক্ষাতকারের মাধ্যমে। ব্রিটিশ আইটিভির ‘ওয়ার্ল্ড ইন এ্যাকশন’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক এ্যান্থনি মাসকারেনহাসকে দেয়া বঙ্গবন্ধুর খুনী লে. কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশীদ সাক্ষাতকারে বলে The first obvious choice was General Zia. After lot of arrangements, I managed to see him (General Zia) in 20th March 1975 in the evening. General Zia said, ’If you junior officers want to do it go ahead’। সাক্ষাতকারে লে. কর্নেল ফারুক রহমান বলে, ’I told him......we have to change it. We the junior officers have already worked it out. We want your support and your leadership’। এ ষড়যন্ত্রের আইনগত বিশ্লেষণে দেখা যায় দণ্ডবিধির ১১৮, ১১৯, ১২০, ১২০ (ক), ১২০ (খ) ও ১২৪ (ক) ধারায় বর্ণিত শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। জিয়াউর রহমান দণ্ডনীয় অপরাধ করেছিলেন ষড়যন্ত্রের ঘটনা গোপন করে, যা নিবারণ করা তার কর্তব্য ছিল। শুধু তাই নয়, খুনীদের প্রস্তাবের পর তিনি তাদের ‘Go ahead’ বলার মধ্য দিয়ে সরকার উৎখাতসহ অপরাপর অপরাধ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে কারণে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার অপরাধে জিয়া অভিযুক্ত হবেন এটাই আইনের বিধান (অপরাধে সহায়তা সংক্রান্ত দণ্ডবিধির সংজ্ঞা)।

ফারুক-রশীদ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দায় নিজেদের পাশাপাশি জেনারেল জিয়াউর রহমানের কাঁধে কেন চাপাতে চেয়েছিলেন? এর উত্তর মেলে এ্যান্থনি মাসকারেনহাসকে দেয়া জিয়ার নিজের এক সাক্ষাতকার থেকে। জিয়ার সে সাক্ষাতকার বিষয়ে মাসকারেনহাস বলেন, ’In July, 1976, while doing a TV programme in London on the killing of Sheikh Mujib I confronted Zia with what Farook had said (in interview)’। জিয়া এ ব্যাপারে উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকেন। কর্নেল ফারুকের সঙ্গে জিয়ার কথোপকথনের বিষয়টি মাসকারেনহাস বলছেন এভাবে, ’Zia did not deny it-nor did he confirm it. (Anthony Mascarenhas, Bangladesh: A Legacy of Blood, Page-54)।’ সাক্ষাতকারে জেনারেল জিয়ার গড়িমসি করা বা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে, ফারুকের সঙ্গে জিয়ার এ কথোপকথন সত্য। উল্লেখ্য, আইন এবং সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত হলো, কোন অভিযোগ অস্বীকার না করার অর্থ স্বীকার করা বা মেনে নেয়া।

লে. কর্নেল আমিন উদ্দিন চৌধুরী ২০১০ সালে বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মেজর রশীদের নেতৃত্বে সৈন্যরা তাকে এবং কর্নেল শাফায়াত জামিলকে নিয়ে যায় জেনারেল জিয়াউর রহমানের বাড়িতে। জিয়াউর রহমানের বাড়িতে প্রবেশের সময় আমিন উদ্দিন চৌধুরী জানতে পারেন রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করা হয়েছে। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আমিন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘জেনারেল জিয়া একদিকে শেভ করেছেন, একদিকে শেভ করেননি। ¯িøপিং স্যুটে দৌড়ে আসলেন। শাফায়াতকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘শাফায়াত কি হয়েছে?’ শাফায়াত বললেন, ‘এ্যাপারেন্টলি দুই ব্যাটালিয়ন স্টেজড এ ক্যু। বাইরে কী হয়েছে এখনও আমরা কিছু জানি না। রেডিওতে শুনতেছি প্রেসিডেন্ট মারা গেছেন।’ তখন জেনারেল জিয়া বললেন, ‘সো হোয়াট? লেট ভাইস প্রেসিডেন্ট টেক ওভার। উই হ্যাভ নাথিং টু ডু উইথ পলিটিক্স’। অর্থাৎ খুনীদের কৃতকর্ম বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেবেন না। অথচ তার কর্তব্য ছিল খুনী/অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

১৯৯৭ সালে মার্কিন সাংবাদিক লরেন লিফশুলজের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর খুনী কর্নেল রশীদের সাক্ষাত হয় ইউরোপে। এ প্রসঙ্গে লরেন লিফশুলজ বলেন, ’In 1997, I met Rashid for several hours in a European city...I went over with him exactly what he had told Mascarenhas about Zia’s involvement. Rashid confirmed to me the accuracy of his interview with Mascarenhas’। এ সময় লে. কর্নেল রশীদ লিফশুলজকে আরও জোরালোভাবে বলেন, ’He (Rashid) met General Zia numerous times prior to the coup and that Zia was fully in the picture’ (In conversation with Lawrence Lifschultz-The Daily Star, December 4, 2014)। অপরদিকে কর্নেল রশীদের স্ত্রী জোবায়দা রশীদের বক্তব্য থেকেও জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ফারুক-রশীদের সাক্ষাত ও আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। জোবায়দা রশীদ বলছেন, ‘একদিন রাতে ফারুক জিয়ার বাসা থেকে ফিরে আমার স্বামীকে (কর্নেল রশীদ) জানায় যে, সরকার পরিবর্তন হলে জিয়া প্রেসিডেন্ট হতে চায়। শুধু তাই নয়, জিয়া আরও বলেছিলেন, If it is a success then come to me (আসাদুজ্জামান-বস সবকিছুর ব্যবস্থা নিচ্ছেন, প্রথম আলো, ১৫ আগস্ট, ২০১৮)। অর্থাৎ ষড়যন্ত্রমূলক অপরাধ সংঘটন করে সফল হয়ে আসতে বলেন। লরেন লিফশুলজ ২০১১ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পেছনে জেনারেল জিয়াউর রহমান ছিলেন মূল ছায়া ব্যক্তি। জিয়া নিজেই এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব না দেয়ার নিজস্ব কারণ ছিল। তবে তার সমর্থন ছাড়া এ অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে বলে মনে করি না। যদি তিনি এ অভ্যুত্থানবিরোধী হতেন তাহলে তিনি এ অভ্যুত্থান থামাতে পারতেন। তা করা ছিল তার সাংবিধানিক দায়িত্ব।’

১৯৭৪ সালে দেশে সেনাবাহিনী দ্বারা অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চলছে। সেই সময় জিয়াউর রহমান ফারুকের বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। একদিন কথা প্রসঙ্গে জিয়া ফারুককে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তোমরা ট্যাংক টুং ছাড়া দেশের আর খবরাখবর রাখো কি?’ সেইসঙ্গে আলাপের মাধ্যমে ফারুককে প্ররোচিত করতে জিয়া বলেছিলেন, ‘দেশ বাঁচানোর জন্য একটা কিছু করা দরকার’ (আসাদুজ্জামান-বস সবকিছুর ব্যবস্থা নিচ্ছেন, প্রথম আলো, ১৫ আগস্ট, ২০১৮)। পরের বছরের আরেকটি ঘটনা ঘটে। ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট, খন্দকার মোশতাক আহমেদ এবং তৎকালীন তথ্য ও বেতার প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুরের সচিবালয়ে দেখা হয়। কথোপকথনের সময় খন্দকার মোশতাক তাকে বলেন, ‘এ সপ্তাহে জিয়া দুইবার এসেছিলেন। তিনি এবং তার লোকেরা তাড়াতাড়ি কিছু একটা করার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে। বলপূর্বক মত বদলাইতে চায়, প্রয়োজনবোধে যে কোন কাজ করতে প্রস্তুত’ (আসাদুজ্জামান-বস সবকিছুর ব্যবস্থা নিচ্ছেন, প্রথম আলো, ১৫ অগাস্ট, ২০১৮)।

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের লেখা বই ‘মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকাণ্ড’-এর ১৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত তথ্যে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে সরকারের অগোচরে অস্ত্র সংগ্রহের আলোচনা করতে মার্কিন দূতাবাসে যান মেজর সৈয়দ ফারুক রহমান। ১৯৭৩ সালের ১১ জুলাই মার্কিন দূতাবাসে যান মেজর আব্দুর রশীদ। সেখানে তিনি দাবি করেন, তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি তাকে পাঠিয়েছে। এখানেই শেষ নয়। ১৯৭৪ সালের ১৩ মে সৈয়দ ফারুক রহমান ‘উচ্চ পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে’ শেখ মুজিব সরকারকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তা চান। ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ আর্মড রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড মেজর সৈয়দ ফারুক রহমান অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে জিয়াকে বেস্ট চয়েজ মনে করে তাকে নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ করেন। জিয়া ব্যক্তিগত কারণে নেতৃত্ব না দিলেও তাদের এগিয়ে যেতে (এড় ধযবধফ) এবং সফল হয়ে তার কাছে যেতে বলেন।

এই ঘটনার বিশ্লেষণে আইনের পরিভাষায় তিনি ঘটনায় সম্পৃক্ত হন। তবে ষড়যন্ত্রের বিষয় অবহিত হওয়ার পরও তা বন্ধ করতে কিংবা ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থা নেননি। বরং তাদের উৎসাহিত করেছেন, এগিয়ে যেতে বলেছেন। খুনীদের বিচার না করে তাদের পুনর্বাসিত করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। এ প্রসঙ্গে একটি বেসরকারী টেলিভিশনে প্রদত্ত সাক্ষাতকারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া খুনী আব্দুল মাজেদের বক্তব্য ছিল এরকম, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনীদের প্রতি জিয়াউর রহমানের ডাইরেক্ট মদদ ছিল। উনি তো ওদেরকে টোটাল পেট্রোনাইজ করেছেন। প্রমোশন দিয়েছেন এবং একটা করে ফরেন প্রাইজ পোস্টিং দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের প্রতি জিয়াউর রহমানের সমর্থন ছিল। এটা পরিষ্কার কথা। এখানে সাবসিকুয়েন্স তার এ্যাকশানেই তো বোঝা যায়। ওরা যা চাইত তাই উনি করে দিতেন। এ ধরনের অবস্থা ছিল তখন।’ শুধু তাই নয়, জাতির পিতার খুনীদের সে সময় আখ্যায়িত করা হয়েছিল ‘সূর্যসন্তান’ হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দায়মুক্তি দিতে খন্দকার মোশতাক যে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল জিয়াউর রহমান তা আইনে পরিণত করেন।

১৯৮০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে একটি তদন্ত কমিশন গঠিত হয়। যার সদস্য ছিলেন থমাস উলিয়ামস কিউসি এমপি, মি. ছিয়ান ম্যাকব্রাইড এসসি, মি. জেফরি থমাস কিউসি এমপি এবং মি. এ্যাবরে রোজ। তারা ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট এবং ৩ নবেম্বরের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ১৯৮১ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন এবং ভিসার জন্য লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে আবেদন করেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার অনুরোধে গঠিত এই তদন্ত কমিশনকে ভিসা দেয়া হয়নি। কমিশন ১৯৮০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর হাউজ অব কমন্সের কমিটি কক্ষে সভা করে সংবাদ সম্মেলন করে। এতে তারা এই মত প্রকাশ করেন, সরকার তথা জিয়াউর রহমান সরকারই বঙ্গবন্ধু হত্যার তদন্ত করতে দিতে চায়নি এবং এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের বিরুদ্ধে ছিল।

বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র, হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের যোগসূত্র বিবেচনা করে দেখা যায়, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জিয়া সম্পৃক্ত। তাই ইতিহাসের অমোঘ সত্যের পরম্পরায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্ত রিপোর্টে ষড়যন্ত্রকারী ও মদদদাতা হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম আসা উচিত ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা আসেনি। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ (৩ বি) ধারা অনুযায়ী কোন মামলা শেষ হয়ে গেলেও সে মামলার ঘটনাপ্রবাহে পরবর্তীতে সমস্ত প্রমাণ আবিষ্কার হলে সম্পূরক চার্জশিট দাখিলের সুযোগ রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে আরও অধিকতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যদিও আমাদের দেশের বিদ্যমান আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ নেই, তবুও সম্পূরক তদন্ত রিপোর্ট রেকর্ডে রাখা যেতে পারে। দৃশ্যমান হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে।

ষড়যন্ত্রকারী নেপথ্যের কারিগরদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ষন্ত্রকারীদের স্বরূপ উন্মোচনে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠন করা দরকার। একই সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত রিপোর্ট শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ হওয়া উচিত। অধিক তদন্ত করে সেই রিপোর্ট এবং তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হলে তা হয়ে থাকবে ইতিহাসের একটি অনবদ্য দলিল। যে রিপোর্ট আগামী প্রজন্মের কাছে জাতির পিতার হত্যার প্রামাণ্য দলিল হিসেবে উপস্থাপন হবে। অন্যথায় ইতিহাসের কাঠগড়ায় অনন্তকাল প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রইব আমরা।

লেখক : মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় 
সৈজন্যেঃ দৈনিক জনকণ্ঠ 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত