1272
Published on আগস্ট 7, 2021আগামীকাল ৮ আগস্ট ২০২১ রবিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, বাঙালির সকল লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী। এই মহিয়সী নারী ১৯৩০ সালের এই দিনে ফরিদপুর জেলার তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আপোষহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে শুধুমাত্র বাঙালি জাতির পিতাই হননি, বিশ্ব বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন। এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাঁরই সহধর্মিণী, মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বেগম মুজিব তাঁর পিতা-মাতা দুই জনকেই হারান এবং ১৯৩৮ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুধু সহধর্মিণীই ছিলেন না, ছিলেন সহযোদ্ধা ও কর্মপ্রেরণাদাত্রী। এই ত্যাগী নারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতির সেবায় মনোনিবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, রাজনীতির নানা দুঃসময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছিলেন গঠনমূলক পরামর্শ। তাঁর বলিষ্ঠ ও সময়োপযোগী পরামর্শসমূহ জাতির জীবনে সুফল বয়ে এনেছে, যা জাতীয় ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে দীর্ঘকাল তাঁর পাশে থেকে মানবকল্যাণ ও রাজনীতির যে শিক্ষা তিনি লাভ করেছেন, তাতে তিনি একজন বিদুষী ও প্রজ্ঞাবান নারীতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয়-দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারে বারে পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি ছিলেন, তখন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বঙ্গমাতার নিকটে ছুটে আসতেন। তিনি তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা বুঝিয়ে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাতেন। বিশেষ করে আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি নিয়ে একটি কুচক্রীমহল বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ভেঙ্গে না পড়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দৃঢ়তার সঙ্গে। যুদ্ধ পরবর্তীকালে দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে কাজ করেছেন, গরীব-এতিম-অসহায় মানুষদের সাহায্য করেছেন, বীরাঙ্গনাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার মতো মহৎ দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে জাতির পিতার পাশাপাশি তিনি আজ বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত। এ দেশের রাজনীতিতে তাঁর অনন্য সাধারণ ভূমিকার জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এই মহীয়সী নারী ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সপরিবারে খুনিচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। আগামীকাল ৮ আগস্ট রবিবার জাতির পিতার আমৃত্যু সঙ্গী, বাংলার মহিয়সী নারী, বাংলাদেশের স্বাধীনতাসহ সকল সোনালী অর্জনের নেপথ্য প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে যথাযথ মর্যাদায় পালন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
কর্মসূচি
আগামীকাল ৮ আগস্ট ২০২১ রবিবার বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবে।
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি’র আহ্বান
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি আগামীকাল ৮ আগস্ট ২০২১ রবিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে যথাযথ মর্যাদায় পালন করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।